এবার স্টার্কের উদ্দেশে পাল্টা প্রশ্ন ব্রডের

স্টুয়ার্ট ব্রড ও মিচেল স্টার্ক

অ্যাশেজের আগে কথার লড়াই শুরু হয়েছে। স্টুয়ার্ট ব্রড সেটি উপভোগ করছেন। অংশও নিচ্ছেন।

এবারের আলোচনাটি শুরু করেছিলেন তিনিই। কোভিডের নানা বাধ্যবাধকতার কারণে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সর্বশেষ সিরিজকে অ্যাশেজ হিসেবে বিবেচনা করতে চান না, এই কথা বলে। সেটির জবাব দিয়েছিলেন মিচেল স্টার্ক। বাজে পারফরম্যান্সের জন্য অজুহাতটা ঠিকঠাক কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এবার স্টার্কের দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ব্রড।

কোভিড, জৈব সুরক্ষা বলয় মিলিয়ে ‘স্বাভাবিক’ অ্যাশেজের অনুভূতি হয়নি বলে গত সিরিজটি স্মৃতির পাতা থেকে মুছে ফেলতে চান ব্রড। স্টার্কও ব্রডকে খোঁচা দেওয়ার সুযোগটি ছাড়েননি। ব্রডের এমন মন্তব্যের জবাবে স্টার্ক বলেন, ‘সত্যিই কি জৈব সুরক্ষা বলয় ছিল সেটি? তাদেরকে তো গলফও খেলতে দেওয়া হয়েছিল। ৪-০-এর অজুহাত হতে পারে নাকি এটি? সিরিজটি দারুণ ছিল।’

করোনাকালের কড়াকড়ি ছিল উল্লেখ করে ব্রড বলেছিলেন, সেটিকে সত্যিকারের অ্যাশেজ সিরিজ মনে করেন না তিনি। এর জবাবে স্টার্ক বলেছিলেন, ‘তাদের সুইমিংপুল ছিল, জিম ছিল, গোল্ড কোস্টে রিসোর্টে ছিল, মেট্রিকন স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছে, রুমে বদ্ধ ছিল না, পরিবারও সঙ্গে ছিল। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, গোল্ড কোস্টের এটিকেই তারা জৈব সুরক্ষা বলয় বলছে। আমি সাতবার জৈব সুরক্ষা বলয়ে ছিলাম। তবে তাদেরটাই সবচেয়ে সহজ ছিল।’

গতবারের অ্যাশেজটি মনে রাখতে চান না ব্রড (বাঁয়ে)
ফাইল ছবি

স্টার্কের এ কথার পাল্টা জবাব ব্রড দিলেন আজ। ইংল্যান্ডের সমর্থকগোষ্ঠী বার্মি আর্মি তাদের ইনস্টাগ্রাম আইডিতে স্টার্কের কথা ধরে একটি গ্রাফিকস শেয়ার করে। সেটিতেই মন্তব্য করেছেন ব্রড। এবার স্টার্কের উদ্দেশে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘স্টার্কি (স্টার্ক) কোভিডের সময়ে দেশের বাইরে কয়টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে? এই হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছি। একটাও তো খেলেনি, নাকি?’

ব্রড যে ভুল বলেছেন, তা–ও নয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত স্টার্ক খেলেছেন ৯টি টেস্ট, সব কটিই ছিল দেশের মাটিতে। ২০২০-২১ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজটি ছিল করোনাকালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম সিরিজ। সে সময়ে করোনার কড়াকড়ির দিক দিয়ে বেশ কঠোর ছিল দেশটি।

অবশ্য টেস্ট না খেললেও এ সময়ে দেশের বাইরে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলেছেন স্টার্ক। ২০২০ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে একটি ওয়ানডে সিরিজও খেলেছিলেন।

আরও পড়ুন

এবারের অ্যাশেজ শুরু হবে আগামী ১৬ জুন, এজবাস্টনে। অস্ট্রেলিয়ার শক্তিমত্তা, ইংল্যান্ড দলের নতুন খেলার ধরন মিলিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সিরিজটি ঘিরে প্রত্যাশা বেশি। এর আগে অবশ্য দুই দলেরই অন্য দুটি লড়াই আছে। ১ জুন থেকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট শুরু ইংল্যান্ডের, ৭ জুন থেকে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া।

ব্রডকে খোঁচা দেওয়ার সুযোগ ছাড়েননি স্টার্ক
ছবি : সংগৃহীত

প্রসঙ্গ যখন অ্যাশেজ, তখন ঘুরেফিরে আসছে সেটি। ব্রডও কথার লড়াই উপভোগ করছেন বলে জানিয়েছেন এর আগে, ‘আমার এই সার্কাস দারুণ লাগছে। খেলোয়াড়দের মধ্যে এই কথা–চালাচালি। এজবাস্টন টেস্টের আগে বক্সিং ম্যাচের মতো উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে।’

আরও পড়ুন

ব্রডের কাছে সিরিজটিকে ২০০৫ সালের স্মরণীয় ওই সিরিজের আগের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, ‘২০০৫ সালের অ্যাশেজ তো তর্ক সাপেক্ষে সবচেয়ে বিখ্যাত অ্যাশেজ সিরিজ। তখন আমার পেশাদার ক্যারিয়ারের মাত্র শুরু। তবে উত্তেজনা তৈরির দিক দিয়ে আমার এ সিরিজকে সেটির সমানই মনে হচ্ছে।’

এ উত্তেজনা যথার্থ, ব্রড বলছেন সেটিও, ‘অস্ট্রেলিয়ার সন্দেহাতীত আত্মবিশ্বাস আছে যে তারা এখানে এসে জিতবে। আমাদের আত্মবিশ্বাসও অমন—আমরাই জিতব। এমন খুব বেশি সিরিজের কথা তো আমি মনে করতে পারি না। বিশেষ করে নব্বইয়ের দশকে যখন বেড়ে উঠেছি, তখন তো এমন ছিল না। দুই দলই যেখানে নিজেদের ফেবারিট মনে করছে। আমার মনে হয়, এটি দারুণ এই খেলার জন্য।’

আপাতত ব্রড কথার লড়াইয়ে ব্যস্ত। তাঁর এই জবাবের পর স্টার্ক কী বলেন, দেখার বিষয় সেটিই।