টেস্ট ছাড়ার পর চুটিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে চান স্মিথ

স্টিভেন স্মিথস্মিথের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল

লোকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটও সমানতালে চালিয়ে যায়। স্টিভেন স্মিথ সেই ধাঁচের লোক নন। অস্ট্রেলিয়ান এই তারকা টেস্ট ক্যারিয়ার শেষে চুটিয়ে খেলতে চান ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট। অলিম্পিক ক্রিকেটেও খেলার স্বপ্ন দেখেন ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।

বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে ভারতের বিপক্ষে দুটি সেঞ্চুরিসহ ৩৪.৮৮ গড়ে ৩১৪ রান করেছেন স্মিথ। সাম্প্রতিক বছরে টেস্টে স্মিথের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে ফক্স স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপচারিতায় স্মিথ জানিয়েছেন, পরিকল্পনা করে তিনি এগোতে চান না। পরিস্থিতি বুঝে খেলা চালিয়ে যেতে চান।

আরও পড়ুন

স্মিথের ভাষায়, ‘দিন ধরে ধরে এগোতে চাই। গ্রীষ্মের শেষভাগটা উপভোগ করেছি। কিছু রান করে দলের সাফল্যে সাহায্য করতে পেরেছি। সামনে শ্রীলঙ্কা সফর এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আছে। তাই পরিস্থিতি বুঝে এগোতে চাই।’

কিন্তু স্মিথের বয়স তো আর কম হলো না। টেস্ট ক্যারিয়ার শেষে কী করবেন? তা নিয়ে নিশ্চয়ই পরিকল্পনা আছে। শুনুন স্মিথের মুখেই, ‘সম্ভবত প্রচুর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলব, টি-টোয়েন্টিটা উপভোগ করি আমি। বিশ্বের অনেক জায়গাতেই এটা (ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট) হচ্ছে, যেখানে অংশ নেওয়া যায়। আমি হয়তো কিছু সময়ের জন্য সেসব জায়গায় খেলব। কত দিনের জন্য? কে জানে।’

যতদিন পারেন খেলা চালিয়ে যেতে চান স্মিথ
এএফপি

পরে স্মিথ নিজেই নিজের এই প্রশ্নের উত্তর দেন, ‘যত দিন শরীর ও মনটা ভালো থাকবে, আমি খেলা চালিয়ে যেতে চাই, উন্নতি করতে চাই। আমি যত দিন পারি খেলা চালিয়ে যাব।’

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বশেষ গত বছর ফেব্রুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন স্মিথ। ৬৭ টি-টোয়েন্টি ও ১৬৫ ওয়ানডে খেলা এই ব্যাটসম্যান টেস্ট খেলেছেন ১১৪টি। বোঝাই যায়, দেশের হয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারেই স্মিথের মনোযোগ বেশি। তবে টি-টোয়েন্টিতেও স্মিথ কিন্তু বেশ ভালো। সেটা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছেন বিগ ব্যাশে গত শনিবার সিডনি সিক্সার্সের হয়ে পার্থ স্কর্চার্সের বিপক্ষে ৬৪ বলে ১২১ রানের ইনিংসে। অথচ এই স্মিথকেই আইপিএলের সর্বশেষ চারটি নিলামে কেনেনি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি! জায়গা হয়নি ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অস্ট্রেলিয়া দলেও।

আরও পড়ুন

অথচ বিগ ব্যাশে অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে স্মিথের গড়ই সর্বোচ্চ—৪৫.৮৮। মাত্র ৩২ ম্যাচেই আছে তিনটি সেঞ্চুরি। এ নিয়ে স্মিথের ভাষ্য, ‘সিক্সার্সের হয়ে গত কয়েক বছর উপভোগ করেছি। সম্ভবত সাত ইনিংসে তিনটি সেঞ্চুরিও পেয়েছি।’

স্মিথ মনে করেন, অস্ট্রেলিয়া দলের টপ অর্ডারে তাঁর জায়গা আছে এবং এই কথাটা তিনি বলেছেন ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক সামনে রেখে, ‘অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেন করার খুব বেশি সুযোগ পাইনি আমি। এখানে (ওপেনিং) খেলাটা আলাদা। আমি যেভাবে খেলি, তার সঙ্গে মানানসই। শুরুতে ভালো ক্রিকেট শট খেলা এরপর ফিল্ডিং ছড়িয়ে পড়লে খেলাটা বিস্তৃত করা—বিগ ব্যাশ কিংবা এমএলসি, যেটাই হোক, ওপেনিংয়ে সব সময়ই আমি উপভোগ করেছি।’

বিগ ব্যাশে এবার সেঞ্চুরি পেয়েছেন স্মিথ
স্মিথের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল

স্মিথ এরপর বলেছেন, ‘২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক মাথায় আছে। আর মাত্র কয়েক বছর বাকি। আমিও হয়তো কিছুদিনের জন্য টি-টোয়েন্টি খেলব। তাই যদি রান করতে পারি, তাহলে হয়তো (অলিম্পিক ক্রিকেটে) নামটা থাকবে। এটা (খেলাটার জন্য বড় সুযোগ) লস অ্যাঞ্জেলসে। আমেরিকায় খেলাটার অনেক সম্প্রসারণ ঘটেছে। খেলাটা দিন দিন বড় হচ্ছে এবং বিশ্বের অনেক দেশই এখন খেলে। আমার মনে হয় অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটাও দারুণ ব্যাপার। ক্রিকেটার হিসেবে যারা অলিম্পিক দলে খেলতে চায়, তাদের জন্য অবশ্যই প্রেরণাদায়ক।’

২০২৩ সালের অক্টোবরে অলিম্পিকে ক্রিকেট ফেরানোর কথা জানায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক দিয়ে সোয়া শ বছর পর ক্রিকেট ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অলিম্পিকে এর আগে ক্রিকেট ছিল ১৯০০ সালে।

আরও পড়ুন