১২ বারের চেষ্টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম নিউজিল্যান্ড–জয়
ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ছিল নিউজিল্যান্ড দল। কিন্তু পুরো শক্তির দল তারা পায়নি। কেইন উইলিয়ামসন টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। চোটের কারণে ওপেনার ফিন অ্যালেন, উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান টিম সাইফার্ট ও পেসার লকি ফার্গুসনও নেই দলে। তাই বলে ডেভন কনওয়ে, রাচিন রবীন্দ্র ও মার্ক চাপম্যানদের নিউজিল্যান্ড ১৬৪ রান তাড়া করতে পারবে না, সেটাও একটু অপ্রত্যাশিত। কিন্তু অকল্যান্ডে আজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘটেছে ঠিক সেটাই।
টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৪ রান তোলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৭ রানে হেরেছে নিউজিল্যান্ড। ১৫.২ ওভারে ১০০ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর মনে হয়েছিল, নিউজিল্যান্ড বুঝি আর লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারবে না। হাতে ১ উইকেট রেখে জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে নিউজিল্যান্ডের দরকার ছিল ৫৬ রান। ক্যারিবিয়ান পেসার ম্যাথু ফোর্ডের করা ১৮তম ওভারে এক ছক্কা, তিন চারসহ মোট ২৩ রান নেন কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। পরের ওভারেও প্রথম ৩ বলে তিনটি চার মারেন স্যান্টনার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২০ রান আর তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ১২ রান তুলে ৯ উইকেটে ১৫৭ রানে থেমেছে স্বাগতিকদের ইনিংস। ৭ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এটাই প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেখানে ১২তম ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেল ক্যারিবিয়ানরা। আগের ১১ ম্যাচের মধ্যে ২টি ম্যাচ টাই করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যে একটি টাই ম্যাচে সুপার ওভারে জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
স্যান্টনার ও জ্যাকব ডাফির শেষ উইকেটে ২০ বলে ৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিটি ছাড়া নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে বেশির ভাগ সময়ই মনে হয়েছে, ম্যাচটা একপেশে হচ্ছে। শেষ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের এই জুটিতে স্যান্টনারের অবদান ১৯ বলে ৪৯ আর ডাফির ১ বলে অপরাজিত ১। ২ ছক্কা ও ৮ চারে ২৮ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন স্যান্টনার। টি-টোয়েন্টিতে দুটি টেস্ট খেলুড়ে দলের মধ্যে এই প্রথম শেষ উইকেটে ৫০ রানের জুটি দেখা গেল। টেস্ট খেলুড়ে দলের মধ্যে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে ন্যূনতম ৮ নম্বর কিংবা তার পরে নেমে ফিফটি তুলে নিলেন স্যান্টনার।
ওপেনিং জুটিতে ভালো শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ৩.১ ওভারে ৩০ রান তোলার পর ডেভন কনওয়ে আউট হওয়ায় ভেঙেছে এই জুটি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে পড়েছে নিউজিল্যান্ডের উইকেট—৮৮ রান তোলার মধ্যেই নেই ৬ উইকেট (১২.৪ ওভার)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন জেইডেন সিলস ও রোস্টন চেজ।
আগে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩৯ বলে ৫৩ রান করেন অধিনায়ক শাই হোপ। ২৮ রান করেন চেজ এবং রোভম্যান পাওয়েল করেন ৩৩ রান। ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৬ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের ১০ ওভারেও ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৯৮ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন জ্যাক ফোকস ও ডাফি। অকল্যান্ডে আগামীকাল দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৬৪/৬ (হোপ ৫৩, পাওয়েল ৩৩, চেজ ২৮; ডাফি ২/১৯, ফোকস ২/৩৫)
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৫৭/৯ (স্যান্টনার ৫৫*, রবিনসন ২৭, রবীন্দ্র ২১; চেজ ৩/২৬, সিলস ৩/৩২)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: রোস্টন চেজ
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০–তে এগিয়ে।