রিংকুর এক বল, তিলকের এক ইনিংস: কাগজে লেখা স্বপ্নই হলো ফাইনালের চিত্রনাট্য

ভারতের এশিয়া কাপ জয় এভাবেই উদ্‌যাপন করেন রিংকু সিং ও তিলক বর্মাএসিসি ওয়েবসাইট

স্বপ্ন এভাবেও সত্যি হয়!

এশিয়া কাপ শুরু হওয়ার আগেই নিজেদের স্বপ্ন লিখে রেখেছিলেন রিংকু সিং আর তিলক বর্মা। ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট প্রতিটি খেলোয়াড়কে দিয়েছিল একটি সাদা কাগজ। সেখানে লিখতে বলা হয়েছিল—এই টুর্নামেন্টে তাঁদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা কী।

তিলক লিখেছিলেন, তিনি খেলবেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস। রিংকু লিখেছিলেন, নেবেন জয়সূচক রান।

কাগজে লেখা সেই স্বপ্ন যে শুধু অক্ষরে আটকে থাকেনি, তা এখন সবারই জানা।

দুবাইয়ে গতকাল রাতে এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের ১৪৬ রান তাড়া করতে নেমে ভারত জেতে ২ বল হাতে রেখে, ৫ উইকেটে। চাপের মধ্যে ৫৩ বলে অপরাজিত ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন তিলক। ম্যাচসেরাও হন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। আর ১৯.৪ ওভারে চার মেরে ভারতের জয়সূচক রান নেন রিংকু।

রিংকুর গল্পটা আরও অবিশ্বাস্য। পুরো টুর্নামেন্টে ছিলেন দলের সঙ্গে, কিন্তু ফাইনালের আগে একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাননি। হার্দিক পান্ডিয়া চোট পাওয়ায় ফাইনালে সুযোগ মেলে তাঁর। সাতে নেমে তিনি খেলেছেন মাত্র একটি বল। সেটাই গোটা এশিয়া কাপে তাঁর খেলা একমাত্র ডেলিভারি—আর সেই বলেই নিশ্চিত হলো ভারতের শিরোপা জয়!

এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিলক ও রিংকু
এএফপি

ফাইনাল শেষে সনি টিভির ‘এক্সট্রা ইনিংস’ অনুষ্ঠানে রিংকুর সেই আশ্চর্য কাহিনি তুলে ধরেন সঞ্চালক সঞ্জনা গানেশান। হাতে তুলে ধরেন সেই সাদা কাগজও। তিনি বলেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর রিংকু সিং লিখেছিলেন, তিনি এশিয়া কাপে জয়সূচক রান নিতে চান। একদম এটাই ঘটেছে।’

আরও পড়ুন

পাশেই বসা ওয়াসিম আকরাম বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘অবিশ্বাস্য।’ সঞ্জনা যোগ করেন, ‘আরও কাকতালীয় হলো, তিলক বর্মা লিখেছিলেন ফাইনালে রান করবেন এবং টুর্নামেন্ট জিতবেন। সেটাই করেছেন তিনি।’

ফাইনালের আগে ভারতের ছয় ম্যাচে সুযোগ পাননি রিংকু। কিন্তু ফাইনালে জয়সূচক রান আনার পর তাঁর কণ্ঠে ছিল স্বস্তি, ‘আর কিছু নয়, ওই একটি বলই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১ রান দরকার ছিল। আমি চার মেরেছি। সবাই জানে আমি ফিনিশার। দল জিতেছে, আমি খুব খুশি।’

ম্যাচসেরা তিলক বর্মা বলেন, ‘একটু চাপে ছিলাম। কিন্তু ক্রিজে থেকে শেষ করতে চেয়েছি। এটা আসলেই বিশেষ কিছু—আমার জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংস। এটা সব ভারতীয়র জন্য।’

স্বপ্ন কাগজে লেখা যায়, কিন্তু সেটাকে মাঠে বাস্তবায়ন করতে পারে কজন? রিংকু আর তিলক দেখালেন—কাগজের অক্ষরও একদিন হয়ে উঠতে পারে ইতিহাস।

আরও পড়ুন