‘নাসুমের ওই ওভারেই বদলে গেছে ম্যাচ’
উত্তরটা যেন প্রস্তুতই ছিল মোসাদ্দেক হোসেনের। সেটি অবশ্য থাকারই কথা। এ ম্যাচে মোটা দাগে গতিপথটা তো বদলে গেছে ওই এক ওভারেই। ম্যাচশেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক সরাসরিই বললেন, তাঁদের বোলিংয়ের ১৫তম ওভারেই বদলে গেছে ম্যাচের গতিপথ।
১৪তম ওভারে ৭৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর নাসুম আহমেদের কাছ থেকে রায়ান বার্ল তুলেছিলেন ৩৪ রান। কোনো বাংলাদেশি বোলারের এক ওভারে সবচেয়ে বেশি রান খরচ করার রেকর্ড যেটি, সব দল মিলিয়ে যেটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। বার্লের সঙ্গে লুক জঙ্গুয়ের ঝোড়ো জুটিতে শুধু লড়াই করার মতো সংগ্রহ পাওয়া নয়, জিম্বাবুয়েকে হয়তো বোলিংয়েও উজ্জীবিত করেছে সেটি।
বেশ কম রানের মধ্যেই জিম্বাবুয়েকে আটকে রাখার সুযোগ হারানোর পর বাংলাদেশ খেই হারিয়েছে ব্যাটিংয়েও। ম্যাচশেষের পর সংবাদ সম্মেলনে মোসাদ্দেক বলেছেন নাসুমের করা ওই ওভারের কথাই, ‘হতাশ তো অবশ্যই। ম্যাচের প্রথম ১৪ ওভার পর্যন্ত কিন্তু আমরাই এগিয়ে ছিলাম। একটা ওভার আসলে খেলার পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। সেই ওভারে (নাসুমের ওভার) ২০ রান হলেও হয়তো আমরা ম্যাচে থাকতাম।’ জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনও জানেন, ম্যাচটা ঘুরে গেছে কোথায়। ম্যাচশেষের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘শুরুতে আমরা ভুগেছি। তবে ওই ওভারে ম্যাচটা আমাদের দিকে ঘুরে গেছে।’
তবে অমন ওভারের পরও অধিনায়কের সমর্থন ভালোভাবেই পাচ্ছেন নাসুম, ‘মূল বোলারদের ওপর ভরসা করতে হবে। আমিও তার ওপর আস্থা রেখেছি। টি-টোয়েন্টিতে এমন হতেই পারে।’
অবশ্য হারারের এমন উইকেটে ১৫৭ রানের লক্ষ্যও খুব বড় ছিল না। তবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের কাজটা কঠিনই করে তুলেছে। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর মিডল অর্ডার থেকেও কেউ শেষ করে আসতে পারেননি ম্যাচ। আফিফ হোসেন শেষ পর্যন্ত ছিলেন, তবে দলকে পার করাতে পারেননি তিনি। ব্যাটিংয়ে এমন ব্যর্থতার কারণ হিসেবে মোসাদ্দেক বলেছেন জানা কথাটিই, ‘অবশ্যই অনেক ভালো ব্যাটিং উইকেট ছিল। ১৫৭ তাড়া করা উচিত ছিল। দ্রুত উইকেট হারানোয় সেটি হয়নি। নিয়মিত উইকেট হারালে আসলে কঠিন। (তবে) আফিফ চেষ্টা করেছে।’
বাংলাদেশের মতো তিন পরিবর্তন নিয়ে নেমেছিল জিম্বাবুয়েও। সিরিজে প্রথমবারের মতো খেলেছেন ব্র্যাড এভান্স, অভিষেক হয়েছে জন মাসারার। উইলিয়ামস খুশি তাঁর খেলোয়াড়দের লড়াইয়ের মানসিকতা দেখে, ‘আমাদের নিয়মিত একাদশের মতো বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়রাও ভালো, সেটি ভেবেই নেমেছি আমরা। সহজেই ছিটকে যেতে পারতাম আমরা। তবে ছেলেরা লড়াইয়ের মানসিকতা দেখিয়েছে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারের পর এবার ওয়ানডের অপেক্ষা বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে হারের পর ওয়ানডে নিয়ে যে সুর উঠেছিল, মোসাদ্দেকও কথা বললেন সেভাবেই, ‘সবাই জানে আমরা ওয়ানডে ভালো। ফিরে আসার সেরা চেষ্টাটাই করব আমরা।’