টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রস্তুতি বাদ দিয়ে আইপিএলে—হ্যাজলউডের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন জনসনের

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ভালো করতে পারেননি জশ হ্যাজলউডছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়া জিতলে হয়তো এই প্রসঙ্গ উঠতই না। কিন্তু হেরে যাওয়াতে এখন বেছে বেছে অনেক খুঁত বের করা হচ্ছে।

লর্ডসে গত শনিবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে রাজদণ্ডটা আগামী দুই বছরের জন্য নিজেদের করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৭ বছর পর এটিই প্রোটিয়াদের প্রথম বৈশ্বিক ট্রফি।

এবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা
ছবি: আইসিসি

শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে গিয়ে সফল হতে না পারায় স্থানীয় দৈনিক দ্য ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ানে লেখা কলামে বেশ কয়েকটি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মিচেল জনসন। এর একটি কারণ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই পেসার জাতীয় দলের প্রতি জশ হ্যাজলউডের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

দলের অন্যরা যখন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, হ্যাজলউড তখন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে আইপিএল ফাইনাল খেলতে ছিলেন ভারতে। চোট থাকা সত্ত্বেও তিনি আইপিএল খেলতে যান।

আরও পড়ুন

৪৩ বছর বয়সী জনসন তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘হ্যাজলউডের ফিটনেস নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উদ্বেগ ছিল। চোট নিয়েই সে পুনরায় শুরু হওয়া আইপিএলে খেলতে গেল। জাতীয় দলের প্রস্তুতির বদলে ওর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে অগ্রাধিকার দেওয়া অনেকের ভ্রু কুঁচকে দিয়েছে।’

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগে অস্ট্রেলিয়া দলের ক্যাম্পে সবার শেষে যোগ দেন জশ হ্যাজলউড
ছবি: এক্স

গত মাসে ভারত–পাকিস্তান সংঘাতের কারণে আইপিএল দিন দশেকের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় হ্যাজলউড দেশে ফিরে যান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলে আইপিএলের শেষ অংশ আবার শুরু হয়।

আগের সূচিতে টুর্নামেন্ট ২৫ মে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরিবর্তিত সূচিতে শেষ হয় ৩ জুন। তত দিনে অস্ট্রেলিয়া দলের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।

কিন্তু হ্যাজলউড জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ না দিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) কাছ থেকে বাড়তি এক সপ্তাহের ছাড়পত্র নিয়ে যান আইপিএলের বাকি অংশ খেলতে। তাও আবার চোটকে সঙ্গী করে!

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে হ্যাজলউডের বোলিং পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক
ছবি: রয়টার্স

আইপিএলে শেষ পর্যন্ত সফলই হয়েছেন হ্যাজলউড। তাঁর দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে তিনি ভালো করতে পারেননি। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৩৪ ওভার বল করেন; ৮৫ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।

অতীতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অনেক উইকেট এনে দিয়েছেন হ্যাজলউড। কিন্তু এবার তিনি উইকেট তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন। ম্যাচের শেষ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার কেউই আসলে ভালো বোলিং করতে পারেননি। মিচেল স্টার্ক ৩ উইকেট নিলেও ছিলেন কিছুটা খরুচে। ১৩৬ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস উপহার দেওয়া এইডেন মার্করামকে হ্যাজলউড ফেরালেও ততক্ষণে ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার কবজায়।

২০১৫ সালের নভেম্বরে মিচেল জনসনের বিদায়ী টেস্টে তাঁকে কাঁধে তুলে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউড
ছবি: ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া

জনসন মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণের ‘বিগ ফোরের’ বিকল্প ভাবার সময় এসে গেছে, ‘অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ বিগ “বিগ ফোর” বোলিং আক্রমণ—মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়নকে এখন আর অপরিহার্য ধরে নেওয়া ঠিক হবে না। তারা যদি অ্যাশেজকে বিদায়ী ম্যাচ ধরে রাখে, তাহলে প্রশ্ন তোলা যায়—এটাই কি সঠিক মানসিকতা? ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নতুন বোলার তৈরি করা জরুরি।’

আরও পড়ুন

ক্যারিয়ারে এই প্রথম ফাইনালে হেরে গেছেন হ্যাজলউড। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগে তিনি আইপিএল, ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বিগ ব্যাশ লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ টি–টোয়েন্টি, বিগ ব্যাশ লিগ, ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ ও শেফিল্ড শিল্ডের ফাইনালে খেলেছেন। প্রতিবারই শিরোপা–উৎসবে মেতেছেন।

সম্প্রতি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জশ হ্যাজলউড
ছবি: এক্স

অস্ট্রেলিয়ার পরের সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজে। জুন–জুলাইয়ে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তিনটি টেস্ট ও পাঁচটি টি–টোয়েন্টি খেলবে অস্ট্রেলিয়া। দুই সিরিজের দলেই আছেন হ্যাজলউড।

আরও পড়ুন