১০০ টেস্ট অশ্বিনের কাছে স্রেফ সংখ্যা

সংবাদ সম্মেলনে রবিচন্দ্রন অশ্বিনএএফপি

ধরুন, রাত পোহালে আপনি ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট খেলতে মাঠে নামবেন। এমন পরিস্থিতিতে উত্তেজনাটা কার বেশি হয়? খেলোয়াড়ের নাকি খেলোয়াড়ের পরিবারের? সাধারণ হিসাব বলে, ৯৯ টেস্ট খেলে এ পর্যন্ত যিনি এসেছেন, আনন্দ–উত্তেজনা কিংবা যা কিছুই অনুভব হওয়ার কথা—সেসব ওই খেলোয়াড়েরই বেশি হবে।

কিন্তু রবিচন্দ্রন অশ্বিনের দাবি উল্টোটা। ধর্মশালায় আগামী পরশু সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ভারত। এটি হবে অশ্বিনের ক্যারিয়ারে ১০০তম টেস্ট। ভারতীয় অফ স্পিনারের দাবি, শততম টেস্ট তাঁর কাছে ‘স্রেফ সংখ্যা’। কিন্তু তাঁর পরিবারের কাছে এটি অনেক কিছু।

আরও পড়ুন

অশ্বিন ৯৯ টেস্টে ৫০৭ উইকেট নিয়েছেন। এই সিরিজেই ইতিহাসের নবম বোলার হিসেবে টেস্টে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক টপকে যান। শততম টেস্ট নিয়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় অশ্বিন বলেছেন, ‘আমার কাছে এটির কোনো তাৎপর্য নেই। কিন্তু এটা আমার মা–বাবা, স্ত্রী এমনকি সন্তানের জন্য অনেক কিছু। এই টেস্ট নিয়ে আমার কন্যারা আমার চেয়ে বেশি উত্তেজিত। (আমার কাছে) এটা স্রেফ সংখ্যা।’

ভারতের অনুশীলনে ক্যাচ ধরছেন অশ্বিন। শততম টেস্টের মাইলফলকও অনেকটা এভাবেই তাঁর ঝুলিতে জমা পড়ার অপেক্ষায়
এএফপি

এ নিয়ে অশ্বিনের আরেকটি উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’—পরিবারের কাছে তাঁর শততম টেস্ট কেন অনেক কিছু, সেটি বোঝাতে গিয়ে ৩৭ বছর বয়সী অশ্বিন বলেছেন, ‘একজন খেলোয়াড়ের অভিযাত্রায় পরিবারকেও অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ছেলে ম্যাচে কেমন করল, তা নিয়ে আমার বাবাকে এখনো অন্তত ৪০টি ফোনকলের উত্তর দিতে হয়।’

রাজকোটে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে এই সংস্করণে ৫০০তম উইকেট নিয়ে অর্জনটি বাবাকে উৎসর্গ করেছিলেন অশ্বিন। কিন্তু মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে এরপরই টেস্ট ছেড়ে চলে যান। পরে অবশ্য দলে ফিরেও এসেছেন। নিজের ব্যক্তিগত অর্জনের লগ্নে পরিবারের ত্যাগ স্বীকার করার ব্যাপারটিও মনে করিয়ে দিলেন অশ্বিন, ‘ভারতের ক্রিকেটে অনেক দিন ধরেই খেলছি। এই পথে থাকতে পরিবার বিশাল ত্যাগ স্বীকার করেছে।’

আরও পড়ুন

চেন্নাই থেকে উঠে আসা অশ্বিনের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি আছে। ক্যারিয়ারের শুরুতে ব্যাটসম্যান এবং মিডিয়াম পেসার ছিলেন। পরে মিডিয়াম পেস ছেড়ে অফ স্পিনার হন এবং ২০১১ সালে টেস্ট অভিষেকের পর ৯৯ ম্যাচে এ পর্যন্ত ৩৫ বার ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন।

ব্যক্তিগত মাইলফলক নয়, ধর্মশালায় ভারতের জয়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন এই স্পিনার, ‘এই অভিযাত্রা সব সময়ই বিশেষ ছিল। এটা ছিল উত্থান–পতনের অভিযাত্রা। অনেক কিছুই শিখেছি। তবে ম্যাচটা টেস্ট বলেই ভাবনা পাল্টায়নি। ৩–১ স্কোরলাইনে আমরা এগিয়ে। স্কোর যা–ই হোক, সবাই সব টেস্টই জিততে চায়।’ অশ্বিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ক্যারিয়ারের এই দীর্ঘ পথে কোন কোন ব্যাটসম্যান তাঁকে ভুগিয়েছেন। উত্তরে বলেছেন, ‘স্টিভেন স্মিথ, কেইন উইলিয়ামসন ও জো রুটের বিপক্ষে বোলিং করতে ভালো লাগে।’

ব্যক্তিগত মাইলফলক নয় দলের জয়ই বেশি টানে অশ্বিনকে। আজ অনুশীলনে
এএফপি

টেস্টে পাঁচটি সেঞ্চুরি আছে অশ্বিনের। উইকেটসংখ্যা তো জানানোই হয়েছে। তবু ভারতের জাতীয় দলে জায়গা পেতে সতীর্থ স্পিন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে তাঁকে লড়াই করতে হয়। অশ্বিন এ নিয়ে বলেছেন, ‘দেশের হয়ে নির্দিষ্ট একটি খেলা খেলতে না পারা সব সময়ই হতাশার। বিশেষ করে যখন আপনি ভালো খেলছেন। কিন্তু যেহেতু এটা দলের স্বার্থেই করা হয়, তাই খারাপ লাগে না। ভারত দলে যা আছে, সেসব খুব কম দলেই থাকে।’

আরও পড়ুন