২০ দলের বিশ্বকাপ সূচি তৈরিতে হিমশিম খেয়েছে আইসিসি

১ জুন শুরু হবে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরআইসিসি

২০ দল, ৫৫ ম্যাচ—এত বড় পরিসরে ক্রিকেটের কোনো আসর আগে হয়নি। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা তাই আইসিসির জন্য আক্ষরিক অর্থেই ক্রিকেটকে বৈশ্বিক করে তোলার সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আরেকটি প্রথমের সাক্ষী হতে চলেছে। আসরটি যৌথভাবে আয়োজন করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবার মার্কিন মুলুকে হতে চলেছে ক্রিকেটের কোনো বৈশ্বিক আসর। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশে প্রথমবার কোনো আইসিসির প্রতিযোগিতা হতে চলায় নিশ্চিতভাবেই ক্রিকেটের বাজার আরও ছড়িয়ে পড়বে।

এত বড় পরিসরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে আইসিসিকে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে টুর্নামেন্টের খসড়া সূচি তৈরি করা বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য ছিল সবচেয়ে জটিল কাজ।

গতকাল বহুল প্রতীক্ষিত নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়াম উন্মোচন করেছে আইসিসি। ৩৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এ ভেন্যুতেই হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচও হবে এ মাঠে।

নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামের উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকে আইসিসি ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ক্রিস টেটলি বলেছেন, ‘ম্যাচ ও দলের সংখ্যা মিলিয়ে এটা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আমার অভিজ্ঞতা বলে, খসড়া সূচি করতে গিয়ে এবারই সবচেয়ে বেশি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।’

নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়াম। আগামী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ মাঠেই হবে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ
আইসিসি

মূলত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্যই নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। তবে সবকিছুই অস্থায়ী। যেমন—সেখানে বসানো হচ্ছে ড্রপইন পিচ (প্রতিস্থাপনযোগ্য)। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ওভালের কিউরেটর ডামিয়ান হফের নির্দেশনায় পিচগুলো বানানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। সেখান থেকে নিয়ে বসানো হচ্ছে নিউইয়র্কে।

আরও পড়ুন

গ্যালারি ও গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড তৈরি করতে যেসব আসনের প্রয়োজন, সেগুলো আনা হবে লাস ভেগাস থেকে। ওই চেয়ারগুলো রেসিং প্রতিযোগিতা ফর্মুলা ওয়ানের লাস ভেগাস গ্রাঁ প্রিতে ব্যবহার করা হয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে এগুলো আবারও সরিয়ে নেওয়া হবে। এটিই হতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করা প্রথম অস্থায়ী স্টেডিয়াম।

কাতার বিশ্বকাপের পর ভেঙে ফেলা হয়েছে অস্থায়ী ভেন্যু স্টেডিয়াম ৯৭৪
রয়টার্স

সর্বশেষ কাতারে ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপে দেখা গেছে অস্থায়ী স্টেডিয়াম। জাহাজের ৯৭৪টি কন্টেইনার দিয়ে দোহায় বানানো হয়েছিল ‘স্টেডিয়াম ৯৭৪’, বিশ্বকাপ শেষে যা ভেঙে ফেলা হয়। তবে ৪৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার ‘স্টেডিয়াম ৯৭৪’-এ রাতে একাধিক ম্যাচ হলেও ৩৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে সব ম্যাচ হবে দিনে। কারণ, এ মাঠে ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা থাকবে না।

আরও পড়ুন

নিউইয়র্কে সব ম্যাচ দিনের আলোয় হলেও মাঠভর্তি দর্শক আশা করছেন টেটলি, ‘হ্যাঁ, ম্যাচের সময়টা একটা ব্যাপার, যেটাকে আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। কিন্তু আমরা একটি বিশ্বমানের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের কথা বলছি, যেখানে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়েরা একটি বিশ্বমানের ভেন্যুতে তাদের ক্রীড়াশৈলী দেখাবে। তাই আমার আশা, মাঠ দর্শকে ভরে যাবে এবং পরিবেশ বিশ্বকাপের মতোই চমকপ্রদ হবে।’

ভারতের বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, উপমহাদেশের বিপুল ক্রিকেটপ্রেমীর কথা মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রে দিনের ম্যাচগুলো গ্রিনিচ মান সময় অনুযায়ী বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টার (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা থেকে রাত ১০টা) মধ্যে শুরু হতে পারে। তবে টেটলি জানিয়েছেন, সূচি চূড়ান্ত হলেও ম্যাচ শুরুর সময় এখনো ঠিক হয়নি, ‘আমরা এখনো ম্যাচের শুরুর সময় প্রকাশ করিনি।’

আইসিসি ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ক্রিস টেটলি
এক্স

আগামী ১ জুন ডালাসে উদ্বোধনী ম্যাচে সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হবে প্রতিবেশী কানাডা। বার্বাডোজে ফাইনাল হবে ২৯ জুন। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হবে ৭ জুন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।