সাকিবও নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তাঁর আমলে, বিপিএলের দুর্নীতি থামাতে আসা কে এই মার্শাল
বিপিএলের স্পট ফিক্সিং নিয়ে আজ প্রথম আলোতে বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। যেখানে উঠে এসেছে স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে থাকা বিভিন্ন বিষয়—এর মধ্যে আছে গত আসরে অভিযুক্তের তালিকায় থাকা তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম; জাতীয় দলে খেলেছেন এমন ক্রিকেটাররাও আছেন অভিযুক্ত হিসেবে। এমনকি বিপিএলের ১০ম আসরে একটি ম্যাচ হারার জন্য ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়ার তথ্যও উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে।
এদিকে আজই বিসিবির দুর্নীতি দমন কমিশনে পরামর্শক হিসেবে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন অ্যালেক্স মার্শাল। আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটে (আকসু) সাত বছর চাকরি করেছেন। ২০১৭ সালে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দুর্নীতির সঙ্গে অ্যান্টি ডোপিং ইউনিটের দায়িত্বেও ছিলেন। পরে সেটি আকসু থেকে আলাদা করা হয়।
যুক্তরাজ্যের সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা ‘পরিবারকে সময় দিতে চান’ জানিয়ে গত বছরের নভেম্বরে আইসিসির চাকরি ছেড়ে দেন। আইসিসির দায়িত্বে থাকার সময় কয়েক বছর ধরে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে ঢুকে পড়া দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম চালায় মার্শাল ও তাঁর ইউনিট। শ্রীলঙ্কা সরকার পরে ম্যাচ ফিক্সিং–সংক্রান্ত আইনও করে। তদন্তে অসহযোগিতার দায়ে ২০১৯ সালে দেশটির সাবেক অধিনায়ক সানাথ জয়াসুরিয়াকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি।
শুধু জয়াসুরিয়াই নন, মার্শাল দায়িত্বে থাকার সময় নিষিদ্ধ হন আরও দুজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। এর মধ্যে একজন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। ২০১৯ সালে দুর্নীতির প্রস্তাব পেয়েও তা আকসুকে না জানানোর দায়ে তাঁকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি (এক বছর স্থগিত)।
২০২১ সালে বেশ কয়েকটি অভিযোগে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার হিথ স্ট্রিক। তখনো আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন মার্শাল। এবার তাঁকে দায়িত্বে নিয়ে আসছে বিসিবি।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে তাঁকে আনার কারণ ব্যাখ্যা করে বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমাদের বোর্ড পরিচালকেরা এবং সভাপতি মনে করেছেন আমাদের দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটে কিছু দুর্বলতা আছে, এটা আরও সমৃদ্ধ করা দরকার। নয়তো এ রকম সমস্যা (স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে আসা বিষয়গুলো) হতেই থাকবে। সে জন্য আমরা তাঁকে নিয়ে আসছি যেন সে আমাদের এসব বিষয়ে সাহায্য করতে পারে।’
বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় আসার পর বিসিবি পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বসবেন মার্শাল। বিসিবি তার জনবল নিয়ে কাজের জন্য যে মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছে, তাদের সঙ্গেও বসার কথা মার্শালের।
আইসিসির দায়িত্ব ছাড়ার সময় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে মার্শাল বলেছিলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে আপনারা যে ক্রিকেটটা দেখছেন, সেটা নিরাপদ ও স্বচ্ছ। কিন্তু আমি এ ব্যাপারেও নিশ্চিত যে দুর্নীতিবাজরা নিয়মিতই পথ খুঁজছে খেলার ভেতরে ঢোকার, বিশেষত খারাপভাবে চলা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে।’
এবার বিসিবিতে এসে তাদের আয়োজন করা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ বিপিএলকেও স্বচ্ছ করার পথ খুঁজতে হবে মার্শালকেই।