আইপিএলে ১৭ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করতে হবে কোহলিদের

এবারের আইপিএলে ভ্রমণের ওপরে থাকতে হবে বিরাট কোহলিকে।বিসিসিআই

সদ্য সমাপ্ত আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত ক্রিকেট দলের এক জায়গায় সব ম্যাচ খেলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিস্তর। অন্য দলগুলোকে যেখানে টুর্নামেন্টজুড়ে আকাশপথে দৌড়াতে হয়েছে, ভারত সেখানে দুবাইয়ে বসে থেকে সব ম্যাচ খেলেছে। এ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ‘বাড়তি সুবিধা’ পাওয়ার অভিযোগও করেছেন অনেকেই।

প্রায় তিন সপ্তাহ ব্যাপ্তির চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভ্রমণ দরকার না হলেও এবার আইপিএলে বিমানপথে দৌড়ের ওপরই থাকতে হবে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের। ২২ মার্চ কলকাতা নাইট রাইডার্স-রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে আইপিএলের আঠারোতম আসর।

১০ দলের এই টুর্নামেন্টে প্রতিটি দল ৭টি ম্যাচ খেলবে ঘরের মাঠে, বাকি প্রতিপক্ষের মাঠে। আর ঘরে-বাইরে সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলতে হবে বলে ভ্রমণও করতে হবে বেশি বেশি। সূচির কারণে এই ভ্রমণ দূরত্বটা সবচেয়ে বেশি হতে যাচ্ছে কোহলির বেঙ্গালুরুর জন্য।

এবারের আইপিএলে দল ১০টি হলেও মোট ভেন্যু ১৩টি। কারণ দিল্লি ক্যাপিটালস, রাজস্থান রয়্যালস ও পাঞ্জাব কিংসের হোম ভেন্যু দুটি করে। দিল্লি ক্যাপিটালসের জন্য দিল্লির পাশাপাশি বিশাখাপত্তনম, রাজস্থান রয়্যালসের জন্য জয়পুরের পাশাপাশি গুয়াহাটি এবং পাঞ্জাব কিংসের জন্য নিউ চণ্ডীগড়ের পাশাপাশি ধর্মশালা হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

বেঙ্গালুরুর সামনে এবার ভ্রমণ–ধকলও বড় চ্যালেঞ্জ।
বিসিসিআই

তবে হোম ভেন্যু একটি হওয়ার পরও বেশি ভ্রমণ করতে হবে বেঙ্গালুরুকে। কোহলিদের দল উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে কলকাতায়। এর পর লাগাতারভাবে দক্ষিণ ভারত, উত্তর ভারতের এক শহর থেকে আরেক শহরে দৌড়াতে হবে।

এক মাসের মধ্যেই বেঙ্গালুরুকে ১৫০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ৮টি বিমানযাত্রার ধকল নিতে হবে। সব মিলিয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে লিগ পর্বে ভ্রমণ করতে হবে ১৭০৮৪ কিলোমিটার। কোহলিদের এত বেশি ভ্রমণ দরকার হওয়ার বড় কারণ সূচি। শেষের দুটি ম্যাচ বাদে বেঙ্গালুরুর ঘরের মাঠে একসঙ্গে দুটি ম্যাচ নেই।

আরও পড়ুন

বেঙ্গালুরুর মতো অনেকটা কাছাকাছি দূরত্ব বিমানপথ পাড়ি দিতে হবে চেন্নাই সুপার কিংসকে। মহেন্দ্র সিং ধোনিরা প্রথম দুটি ম্যাচ চেন্নাইয়ে খেললেও এরপর গুয়াহাটি-চেন্নাই-নিউ চণ্ডীগড়-চেন্নাই-লক্ষ্ণৌ যাত্রা করতে হবে তাদের। সব মিলিয়ে দক্ষিণ ভারতের এই দলটিকে ভ্রমণ করতে হবে ১৬১৮৪ কিলোমিটার।

বেঙ্গালুরুর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পথ পাড়ি দিতে হবে চেন্নাইকে।
বিসিসিআই

তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪৩৪১ কিলোমিটার বিমানপথ ব্যবহার করতে হবে পাঞ্জাব কিংসকে। শুরুর চারটি ম্যাচ কাছাকাছি দূরত্বেই খেলবে পাঞ্জাব, আহমেদাবাদ, লক্ষ্ণৌ হয়ে নিউ চণ্ডীগড়ে টানা দুটি। কিন্তু মাঝ মৌসুমে ভারতের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বের বিমানে ছোটাছুটি করতে হবে তাদের।

বেঙ্গালুরু, চেন্নাই আর পাঞ্জাবের মতো দলগুলোকে যখন একের পর এক লম্বা বিমানযাত্রায় চড়তে হবে, তখন ভ্রমণ ধকল থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। লিগ পর্বে শেষ ৬ ম্যাচের ৪টিই ঘরের মাঠে খেলবে তারা। আবার এমনকি দুটি অ্যাওয়ে ম্যাচের খেলা থাকবে বিশাখাপত্তনমে, যার অবস্থান হায়দরাবাদ রাজ্যের মধ্যেই।

আরও পড়ুন

সানরাইজার্সের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে টানা তিন ম্যাচ মুম্বাই, হায়দরাবাদ ও চেন্নাইয়ে খেলতে পারা। তিনটি ভেন্যুর দূরত্বই ১০০০ কিলোমিটারের মধ্যে। হায়দরাবাদ থেকে যে তিনটি ভেন্যু সবচেয়ে বেশি দূরত্বে, সেই নিউ চণ্ডীগড়, দিল্লি আর জয়পুরে দলটির কোনো ম্যাচই নেই। সব মিলিয়ে হায়দরাবাদকে লিগ পর্বের ১৪ ম্যাচের জন্য ভ্রমণ করতে হবে মাত্র ৮৫৩৬ কিলোমিটার, যা বেঙ্গালুরুর অর্ধেকেরও কম।

দিল্লি ক্যাপিটালসের ভ্রমণ-দূরত্বও দশ হাজারের নিচেই—৯২৭০ কিলোমিটার। দলটি প্রথম দুই ম্যাচ খেলবে দ্বিতীয় হোম ভেন্যু বিশাখাপত্তনমে, এর পরের দুই ম্যাচের জন্যও থাকবে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুতে। আবার দিল্লিতে খেলার পর কাছাকাছি দূরত্বের লক্ষ্ণৌতে ম্যাচ থাকায়ও মোট ভ্রমণ-দূরত্ব খুব বেশি বাড়তে দেয়নি।

আইপিএলের বাকি দলগুলোর মধ্যে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসকে ৯৭৪৭ কিলোমিটার, গুজরাট টাইটানসকে ১০৪০৫ কিলোমিটার, মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে ১২৭০২ কিলোমিটার, রাজস্থান রয়্যালসকে ১২৭৩০ কিলোমিটার এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ১৩৫৩৭ কিলোমিটার আকাশপথ ভ্রমণ করতে হবে।

লিগ পর্ব পেরিয়ে প্লে-অফ ও ফাইনালে উঠলে যে ভ্রমণ-ধকল আরও বাড়বে, সে তো জানা কথাই।

আরও পড়ুন