সিলেটে গিয়ে মাশরাফিদের হারের হ্যাটট্রিক

সিলেটের টানা তৃতীয় হারবিসিবি

ইনিংসের অষ্টম ওভার, কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন দাস আলিস আল ইসলামকে তাঁর চতুর্থ ওভার করার জন্য ডাকলেন। মনে হচ্ছিল, একটু দ্রুতই কি আলিসের স্পেল শেষ করে দিচ্ছেন লিটন? তবে কুমিল্লার অধিনায়ক পাশে পেলেন ধারাভাষ্যকক্ষে থাকা আতহার আলী খানকে। লিটনের প্রশংসা করে আতহার বললেন, এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত।

আলিস, লিটন আতহারের ভরসার প্রতিদান দিলেন। আলিস সেই ওভারটি করলেন ডাবল উইকেট মেডেন, ফেরালেন বেন কাটিং ও মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। ৮ ওভার শেষে সিলেটের স্কোর ৬ উইকেট ২৮। সেখান থেকে সিলেট আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ঘরের মাঠে কুমিল্লার দেওয়া মাত্র ১৩১ রানের লক্ষ্যে মাত্র ৭৮ রানে গুটিয়ে গেছে সিলেট, হেরেছে ৫২ রানে। এবারের বিপিএলে সিলেট তিন ম্যাচ খেলে এখনো জয়হীন। কুমিল্লার জয় ৩ ম্যাচের দুটিতে।

ওই ওভারের আগেও আলিস দুর্দান্ত বল করেছেন। প্রথম তিন ওভারে ১৭ রান দিয়ে আউট করেছেন নাজমুল হোসেন ও ইয়াসির আলীকে। সঙ্গ দিয়েছেন অলরাউন্ডার ম্যাথু ফোর্ড। প্রথম তিন ওভারে ৯ রান দিয়ে ফোর্ড আউট করেন সামিত প্যাটেলকে। সিলেটের ওপেনার মোহাম্মদ মিঠুনও রানআউট হন আলিস-ফোর্ডের কল্যাণেই।

ম্যাচসেরা আলিস
বিসিবি

কাটিং-মাশরাফির বিদায়ের পর জাকির হাসান ও রায়ান বার্ল ৪০ রানের জুটি গড়েন। সিলেটকে কিছুটা স্বপ্ন দেখানো এই জুটি ভাঙে রোস্টন চেজের বলে বার্ল ১৪ রান করে আউট হলে। সেই ওভারেই লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪১ রান করা জাকির। এরপর ম্যাচের শুধু আনুষ্ঠানিকতাটুকুই বাকি থাকে।

আরও পড়ুন

কুমিল্লার ইনিংসেও ছিল ব্যাটসম্যানদের লড়াই করার গল্প। টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে কুমিল্লা শুরুতেই হারায় অধিনায়ক লিটন দাসকে। ইনিংসের তৃতীয় বলে একবার জীবন পেলেও চতুর্থ বলেই বেন কাটিংয়ের বলে এলবিডব্লু হন লিটন। তাতে প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ১৩ ও ১৪ রানে আউট হওয়া লিটন ফেরেন ৮ রানে।

ইয়াসির যেভাবে আউট হলেন
বিসিবি

এরপর ইমরুল কায়েসকে নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান কুমিল্লাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন। তাঁদের প্রতিরোধ কিছুটা সময় স্থায়ীও হয়। দুজনে গড়েন ৩৫ বলে ৪৭ রানের জুটি। তবে স্পিনার সামিত এসে ভেঙে দেন সেই প্রতিরোধ। শুরুতে ফেরান ১৬ বলে ১৪ রান করা রিজওয়ানকে। এরপর ইমরুলকে আউট করেন সামিত। আগের দুই ম্যাচে অর্ধশতক করা ইমরুল আউট হয়েছেন ৩০ রানে। এরপর তাওহিদ হৃদয় ৮ বলে ৯ রান করে রানআউট হলে কুমিল্লার বিপদ আরও বাড়ে।

আরও পড়ুন

প্রথম ১০ ওভারে ৭২ রান করা কুমিল্লা শেষ ১০ ওভারে রান করতে পারে মাত্র ৫৮। সেটাও তারা করতে পেরেছে জাকের আলী–খুশদিল শাহর ৪০ বলে ৩৯ রানের জুটির সৌজন্যে। সিলেটের বোলারদেরও কৃতিত্ব দিতে হবে। ফিটনেস ইস্যুতে সমালোচনার মুখে থাকা সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি আজ ৪ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ১৯। সামিত নিয়েছেন ৩ উইকেট। রিচার্ড এনগারাভা নিয়েছেন দুটি। তানজিম হাসান সাকিব ও কাটিং ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ২০ ওভারে ১৩০/৮

(ইমরুল ৩০, জাকের ২৯, খুশদিল ২১; সামিত ৩/১৬, এনগারাভা ২/২৫)

সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৬.২ ওভারে ৭৮

(জাকির ৪১, বার্ল ১৪; আলিস ৪/১৭, চেস ২/১৭)

ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ৫২ রানে জয়ী।