ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট উদযাপন।আইসিসি

২০০০, ২০১৭ ও ২০২২—নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ  এত দিন এক স্বপ্ন ভঙ্গের মঞ্চ হয়েই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। এর আগে তিনবার সেমিফাইনালে খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা, তবে ফাইনাল খেলতে কেমন লাগে, সেই স্বাদ কখনো পাননি তারা।

এবার পাবেন। অবশেষে যে ফুরাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের দীর্ঘ অপেক্ষা। গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে আজ ইংল্যান্ডকে ১২৫ রানে হারিয়ে লরা ভলভার্টদের দল উঠেছে ফাইনালে। আগামী ২ নভেম্বর নাবি মুম্বাইয়ের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত কিংবা অস্ট্রেলিয়া।

দুর্দান্ত এই জয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক ভলভার্ট, দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন মারিজান কাপ।  
এই মাঠেই টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হেরে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ৬৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল পুরো দল। এবার সেই ব্যর্থতার ছাই থেকে ফিনিক্স পাখির মতো ফিরে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার উড়িয়ে দিয়েছে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে।

আরও পড়ুন

এ নিয়ে টানা তিনটি আইসিসি ফাইনাল খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা—২০২৩ ও ২০২৪  টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবার ওয়ানডে ফাইনাল। সেই দুই ফাইনালে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল। এবার সুযোগ ইতিহাস বদলের, প্রথম কোনো আইসিসি ট্রফি জয়ের!

লরা ভলভার্ট আর তাজমিন ব্রিটস শুরু থেকেই দারুণভাবে সামলেছেন ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ। এই দুই ওপেনার গড়েন ১১৬ রানের জুটি। কিন্তু হঠাৎই ব্যাটিং ধস নামে—দ্রুত আউট হন ব্রিটস, সুনে লুস ও আনিকা বশ। চোট কাটিয়ে ফেরা ইংল্যান্ডের সোফি একলস্টন ২৩তম ওভারে নেন ২ উইকেট—ব্রিটসকে ফেরান ৪৫ রানে, শূন্য রানে বশকে। এরপর ন্যাট সিভার-ব্রান্ট ফেরান লুসকে।

১৪৩ বলে ১৬৯ রান করেন লরা ভলভার্ট
আইসিসি

১১৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে ভলভার্ট আর কাপ মিলে চতুর্থ উইকেটে  গড়েন ৭২ রানের জুটি। ভলভার্ট ফিফটি করেন ৫২ বলে, ১১৫ বলে সেঞ্চুরি।  এই পথে তিনি হয়ে যান ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিতীয় দ্রুততম ৫ হাজার রানের মালিক। তারপর ইনিংসের শেষ দিকে ঝড় তোলেন।  শেষ পর্যন্ত লরেন বেলের বলে আউট হওয়ার আগে করেন ১৪৩ বলে ১৬৯ রান। ২০টি চার, ৪টি ছক্কায় সাজানো তাঁর এই দুর্দান্ত ইনিংস। কাপ খেলেছেন ৩৩ বলে ঝলমলে ৪২ রানের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন একলস্টন, ১০ ওভারে মাত্র ৪৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন।

আরও পড়ুন

রান তাড়ায় নেমে ইংল্যান্ডের ইনিংস ভেঙে পড়ে একেবারে শুরুতেই। কাপ প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন অ্যামি জোন্স ও হিদার নাইটকে, দুজনই ফেরান শূন্য রানে। পরের ওভারেই আয়াবোঙ্গা খাকা ফিরিয়ে দেন অভিজ্ঞ ট্যামি বেমন্টকে।

লরা ভলভার্টকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ইংল্যান্ডের লরেন বেল
আইসিসি

এরপর সিভার-ব্রান্ট আর অ্যালিস ক্যাপসি মিলে কিছুটা আশার আলো জ্বালেন। চতুর্থ উইকেটে ১০৫ রানের জুটি গড়েন দুজন। ক্যাপসি করেন ৫০, সিভার-ব্রান্ট ফেরেন ৬৪ রান করে। এরপর সুনে লুস ক্যাপসিকে ফেরালে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ধসের শুরু। ক্যাপ পরে ফেরেন সিভার-ব্রান্টকেও।

শেষ পর্যন্ত  ওভারে ২০ রান দিয়ে ক্যাপ নেন ৫ উইকেট। সিভার-ব্রান্টের উইকেটটা নিয়ে ইংল্যান্ডের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন তিনি। শেষ দিকে ড্যানি ওয়াইট-হজ কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন ৩১ বলে ৩৪ রান করে। কিন্তু ততক্ষণে আস্কিং রানরেট হয়ে  গেছে ওভারে দশেরও বেশি। সেটা আর নাগাল পায়নি ইংল্যান্ড, ৪২.২ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ১৯৪ রানে।

আরও পড়ুন