প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া সাংবাদিককে ভারতীয় সমর্থক, ‘আমাকে ঘুমাতে দিন’

হতাশায় নিমজ্জিত ভারতের সমর্থকছবি: রয়টার্স

কত আশা নিয়েই না আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন তাঁরা। দুর্দম্য ভারত অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হবে—এই স্বপ্ন দেখছিলেন ভারতের সমর্থকেরা। কতজন কত আয়োজনই না সাজিয়ে রেখেছিলেন! কীভাবে বিশ্বকাপ জয় উদ্‌যাপন করবেন, তা নিয়ে নানা রকমের পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন অনেকেই।

আহমেদাবাদে গতকাল রাতটি হয়ে ওঠার কথা ছিল আলোকিত। কিন্তু ভারতীয়দের সেই স্বপ্নে পানি ঢেলে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে ষষ্ঠ ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে তারা।

বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে প্যাট কামিন্স–মিচেল স্টার্ক–ট্রাভিস হেডরা যখন নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মাতোয়ারা, ভারতের খেলোয়াড় আর সমর্থকেরা তখন ডুবে যাচ্ছিলেন হৃদয় ভাঙার হতাশায়। খেলোয়াড়দের কেউ মাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কেউ কেঁদেছেন ড্রেসিংরুমে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের গ্যালারি হয়ে গিয়েছিল স্তব্ধ।

আরও পড়ুন
নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের গ্যালারির এই জনসমুদ্রকে স্তব্ধ করে দিয়ে শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলয়া
ছবি: এএফপি

অনেক ভারতীয় সমর্থক তো ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই স্টেডিয়াম ছেড়েছেন। নিঃশব্দে রাত কাটানোর ঠিকানায় ফিরতে ফিরতে হতাশার কথা বলে গেছেন তাঁরা। মুম্বাই থেকে ভারতের বিশ্বকাপ জয় দেখতে আহমেদাবাদ এসেছিলেন ৪০ বছর বয়সী জিনে শাহ। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, ‘আমি এখন মুম্বাইয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি। আমরা জিতলে এখানেই থেকে যেতাম। কিন্তু এখন কেন থাকব?’

২৫ বছর বয়সী রাজীব কুমার বুঝতেই পারছেন না সমস্যাটা আসলে কী হয়েছে। কেন এবং কোথায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেল ভারত, সেই প্রশ্নেরই জবাব খুঁজছিলেন রাজীব, ‘সারারাত উদ্‌যাপন করার পরিকল্পনা ছিল। টুর্নামেন্টজুড়ে তারা ছিল দুর্দান্ত, সেরা এবং আমি বুঝতেই পারছি না আজ (গতকাল) কী হলো।’

এভাবে হৃদয় ভেঙে যাওয়ার পর আর কিছুই ভালো লাগার কথা নয়। রাজীবের কাছেও কিছুই ভালো লাগছিল না। তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া সাংবাদিককে শুধু বলেছেন, ‘আমি এখন হোটেলে ফিরে যেতে চাই। আমাকে ঘুমাতে দিন। এটা নিয়ে এখন আর কিছু ভাবতে চাই না।’

আরও পড়ুন
হতাশ ভারতের সমর্থকেরা
ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে উঠেছিল সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে। সেই দক্ষিণ আফ্রিকার এক সমর্থক রোয়েলফ হুগো কাল মাঠে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার হার দেখতে। কিন্তু তাঁর স্বপ্নও পূরণ হয়নি। ৫১ বছর বয়সী হুগো বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ছিটকে যাওয়ার পরও আমরা ফাইনাল দেখার জন্য থেকে গিয়েছিলাম। কারণ, ভারত ফাইনালে উঠেছিল। আমরা ভারতের কাছে অস্ট্রেলয়ার হার দেখতে চেয়েছিলাম।’

৩৩ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জ্যাকব দিয়াজ জীবনে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছিলেন বান্ধবী প্রভাতি সুব্রামনিয়ানের সঙ্গে। তাঁদের কী পরিকল্পনা ছিল, সেটা জানাতে গিয়ে ৩৩ বছর বয়সী সুব্রামনিয়ান বলেছেন, ‘এ রকম ভুলে যাওয়ার মতো ফল না হলে আমরা মাঠের আশপাশেই থাকার পরিকল্পনা করেছিলাম। ভারতের কাছ থেকে আরও ভালো খেলা আশা করেছিলাম।’

আরও পড়ুন