প্লে-অফের জন্য বিদেশি ক্রিকেটার আনার দৌড়ে শেষ মুহূর্তে একটু পিছিয়েই গেছে ফরচুন বরিশাল। আইএল টি–টোয়েন্টির কারণে নিউজিল্যান্ডের পেসার অ্যাডাম মিলনেকে আনা যায়নি। এসেছেন শুধু আগে খেলে যাওয়া কাইল মায়ার্স। তবে দুপুরে এলিমিনেটর ম্যাচে ‘এক রাতের অতিথি’ ক্রিকেটারদের এনে রংপুর রাইডার্সের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, নতুন কাউকে না আনতে পারাটাকে শাপেবর ভাবতে পারে বরিশাল। তা ছাড়া নতুন করে চমক খোঁজার দরকারও ছিল না বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। চমক তো তাদের সঙ্গেই ছিল!
পাকিস্তানের হয়ে চারটি টেস্ট খেলা পেসার মোহাম্মদ আলী বরিশাল দলে যোগ দিয়েছেন টুর্নামেন্টের শুরুতেই। মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলে ডাক পাওয়ায় দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। কোনো ম্যাচ না খেলেই বিপিএলে চলে আসেন আবার। তবে টুর্নামেন্টে তিনি প্রথম মাঠে নামলেন কাল চিটাগং কিংসের বিপক্ষে। নামলেন, খেললেন এবং জয় করলেন!
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে গতকাল চিটাগংয়ের ৯ উইকেটে করা ১৪৯ রান বরিশাল পেরিয়ে গেছে শুধু অধিনায়ক তামিম ইকবালের (২৬ বলে ২৯) উইকেটটি হারিয়ে, ১৬ বল হাতে রেখে। তাওহিদ হৃদয় অপরাজিত ছিলেন ৫৬ বলে ২ ছক্কা ও ৯ চারে ৮২ রান করে, তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া ডেভিড ম্যালান ২২ বল খেলে অপরাজিত ছিলেন ৩৪ রানে।
বরিশালের দাপুটে এই জয়ের ম্যাচে সবচেয়ে বড় চমক অবশ্যই মোহাম্মদ আলী। এক লাইনে আলীর বোলিং পারফরম্যান্সটাই বলে দেওয়া যাক আগে, ৪–০–২৪–৫। এবারের বিপিএলে এটি তৃতীয়বার ৫ উইকেট নেওয়ার ঘটনা।
তবে পাকিস্তানের এই পেসার যেটি প্রথমবারের জন্য করে দেখিয়েছেন তা হলো, বিপিএলে এক ওভারে ৪ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব। যে কারণে চিটাগংয়ের শুরুর মতো শেষটাও ভেঙে পড়ে হুড়মুড় করে। মাঝে শামীম পাটওয়ারীর ৪৭ বলের মারকাটারি ৭৯ রানের ইনিংসটা না হলে চিটাগংকে শোচনীয় অবস্থায়ই পড়তে হতো পারত। শামীম আর পারভেজ ছাড়া আর কেউ যে দুই অঙ্কেই পৌঁছাতে পারেননি!
৩৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ওপেনার পারভেজ হোসেন ও শামীমের ৭৭ রানের জুটিতে ভালোই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল চিটাগং। কিন্তু ৩৬ বলে ৩৬ রান করে ১৪তম ওভারে পারভেজের বিদায়ের পর আবারও বিপর্যয়। ৯ উইকেটের মধ্যে শেষ ৫টি চিটাগং হারিয়েছে মাত্র ৩৪ রানের মধ্যে, এর মধ্যে শেষ ৪ উইকেট আবার ২ রানের ব্যবধানে।
১৯তম ওভারে বোলিং করতে এসে প্রথম বলেই খালেদ আহমেদকে বোল্ড করেন মোহাম্মদ আলী। তৃতীয় বলে শামীম এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে পরপর ফেরান আরাফাত সানি আর আলিস আল ইলামকে। শেষ দুই ওভারে রান এসেছে মাত্র ৬। ১৪তম ওভারের পঞ্চম বলে পারভেজ আউট হওয়ার পর ইনিংসের শেষ ৩৭ বলে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মাত্র ৩৮ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগং কিংস: ২০ ওভারে ১৪৯/৯ (শামীম ৭৯, পারভেজ ৩৬, হায়দার ৭, ক্লার্ক ৬; আলী ৫/২৪, মায়ার্স ২/২৭, রিশাদ ১/১২)।
ফরচুন বরিশাল: ১৭.২ ওভারে ১৫০/১ (হৃদয় ৮২*, ম্যালান ৩৪*, তামিম ২৯; খালেদ ১/৩৪, বিনুরা ০/১৩, সানি ০/১১)।
ফল: বরিশাল ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মোহাম্মদ আলী (ফরচুন বরিশাল)।