হৃদয়ের আবার শাস্তি হাস্যকর, বলেছেন তামিম

তামিম ইকবালপ্রথম আলো

তাওহিদ হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে নাটক যেন থামছেই না। সর্বশেষ সে নাটকে যোগ দিয়েছেন তামিম ইকবালসহ মোহামেডান এবং অন্য কয়েকটি দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার।

এ মৌসুমে অসুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে মোহামেডানের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন তামিম। আজ দুপুরে মিরপুরের একাডেমি ভবনে নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর তামিমের নেতৃত্বে ক্রিকেটাররা বিসিবি কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে। সেখানে ছিলেন বিসিবির আরও দুই পরিচালক ক্রিকেট পরিচলনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন ও আম্পায়ার্স এবং মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান।

আরও পড়ুন

দীর্ঘ সভা শেষে তামিম ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার যে শাস্তিটা ছিল, সেটা কিন্তু সে ভোগ করেছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর কাল শুনলাম, তাকে আবার বহিষ্কার করেছে। এটা কোন আইনে, কীভাবে করেছে, এটা আমার জানা নেই। এটা খুবই হাস্যকর, কোনোভাবেই সে আবার বহিষ্কার হতে পারে না। যাকে বিসিবি দুই ম্যাচ খেলতে দিয়েছে, তাকে আবার কীভাবে বহিষ্কার করে?’

আম্পায়ারের সঙ্গে তাওহিদ হৃদয়ের তর্ক
শামসুল হক

তামিম ইকবাল আরও বলেন, ‘তাওহিদ হৃদয়কে যখন দুই ম্যাচের জন্য বহিষ্কার করে, তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি যে সিদ্ধান্তটা বেশি কঠোর হয়ে গেছে। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পর দেখলাম যে নিষেধাজ্ঞা দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো। এটা বিসিবি করেছে। তখনো আমরা কোনো কথা বলিনি।’

আরও পড়ুন

মোহামেডানের চাপে বিসিবি হৃদয়কে এক ম্যাচ শাস্তি ভোগ করার পর খেলতে দিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তামিম বলেন, ‘মোহামেডান চাপ দিয়েছে কি না, এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যেহেতু বিসিবি তাকে খেলতে অনুমতি দিয়েছে, তার মানে সে তার শাস্তি ভোগ করেছে। একই ঘটনায় এখন আবার শাস্তি হয় কীভাবে? এটা হাস্যকর।’

তামিমের কথার সুর শুনে মনে হয়েছে, হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে নাটকের আরও একটি পর্ব শিগগিরই দেখা হতে পারে। সেটি হলো কাল রাতে নেওয়া টেকনিক্যাল কমিটির তাঁকে আরও এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত। তামিম বলেছেন, ‘আমরা বোর্ড সভাপতিকে আমাদের পয়েন্ট বলেছি, এগুলো নিয়ে আমরা আপসেট। বলেছি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন, কাল খেলা। আপনারা হয়তো দ্রুতই কোনো সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন, আমরাও জানতে পারব।’

আম্পায়ার শরফুদ্দৌলার সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন মোহামেডান অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয়
ছবি: শামসুল হক

তামিম জানান বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আরও দুটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা। প্রিমিয়ার লিগে গুলশান–শাইনপুকুর ম্যাচে সন্দেহজনক আউটের তদন্ত করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দুই ক্রিকেটারকে একাডেমি মাঠে ডেকে এনে প্রকাশ্যে ম্যাচের ওই সময়কার ঘটনা পুনঃমঞ্চস্থ করেছিল বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ। বোর্ড সভাপতি ফারুকের কাছে এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রিকেটাররা। তামিম বলেন, ‘গুলশান-শাইনপুকুর ম্যাচে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কেউ অনিয়ম করে থাকলে আমরাও চাই তার শাস্তি হোক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের ডেকে এনে অভিনয় করাতে হবে। বিশ্বের কোথাও কোনো দুর্নীতি দমন বিভাগে এ রকম নিয়ম নেই। এটা ক্রিকেটারদের জন্য অপমানজনক।’

এ ছাড়া সর্বশেষ বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের জড়িত সন্দেহে কিছু ক্রিকেটারের নাম প্রকাশ্যে চলে আসে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে এভাবে প্রকাশ্যে নাম ফাঁস করে দেওয়াটাও ক্রিকেটারদের জন্য অপমানজনক বলে মনে করেন তামিম। এ নিয়েও বিসিবি সভাপতির কাছে নালিশ জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। তামিম জানান, এসব ঘটনা নিয়ে গত দুই তিন মাস ধরে ক্রিকেটাররা হতাশ। সে জন্যই সবাই একসঙ্গে সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন।

তামিমের প্রেস ব্রিফিং চলার সময়ই বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন।

আরও পড়ুন