পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ওঠা যে প্রশ্নগুলোর উত্তর মিলল না

অনেক প্রশ্ন উঠেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেএএফপি

প্রশ্নের অভাব ছিল না। প্রশ্ন না বলে কৌতূহল বলা ভালো। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের এমন ব্যাটিং মনোহর উইকেটেও কেন বাংলাদেশ গুটিয়ে গেল ১৯৩ রানে? ব্যাটিং উইকেটেও কেন ব্যাটিংটা এত কঠিন হয়ে পড়ল?

আরও প্রশ্ন ছিল। লিটন দাস তো ফিরেছেন এবং যতটুকু খেলেছেন স্বচ্ছন্দেই খেলেছেন। ১৬ রানের ইনিংসেই চারটা চার। তবু কেন আগের ম্যাচের মেকশিফট ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজকেই মোহাম্মদ নাঈমের ওপেনিং সঙ্গী করা? ওপেনিং জুটিটা অনভিজ্ঞতার মোড়কে সাজিয়ে পাকিস্তানের আগুনে পেস বোলিংয়ের সামনে শুরুতেই কি বাংলাদেশ নিজেদের বিপদ ডেকে আনল না? আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিকল্প ওপেনার হিসেবে সেঞ্চুরি করেছেন বলেই কি মিরাজ থেকে গেলেন ওপেনিংয়ে? নাকি অন্য কোনো কারণও ছিল?

কিন্তু পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হারের পর গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেবে এলেন সহকারী কোচ নিক পোথাস। এসব প্রশ্ন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাঁকেও করা হয়েছে। কিন্তু কোনোটারই যেন ঠিক সদুত্তর মিলল না।

ওপেনিং জুটিটা অনভিজ্ঞতার মোড়কে সাজিয়ে পাকিস্তানের আগুনে পেস বোলিংয়ের সামনে শুরুতেই কি বাংলাদেশ নিজেদের বিপদ ডেকে আনল না?
এএফপি

সুপার ফোরের চার ম্যাচের মধ্যে প্রথম দুটোই বাংলাদেশকে খেলতে হচ্ছে ‘স্বাগতিক’ দলের বিপক্ষে। কাল লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর কলম্বোতে ৯ সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব-মুশফিকদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। আবার পেছন ফিরে যদি তাকান, এখন পর্যন্ত খেলা তিন ম্যাচের দুটোরই প্রতিপক্ষ ছিল স্বাগতিক। ক্যান্ডিতে শ্রীলঙ্কা ও লাহোরে পাকিস্তান। সহকারী কোচ পোথাসের চোখে বাংলাদেশের জন্য সে কারণেই সময়টা এখন পর্যন্ত কঠিন যাচ্ছে, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে আমরা খেললাম ওদের হোম কন্ডিশনে। লাহোরেও পাকিস্তানের হোম কন্ডিশনেই খেললাম আমরা। এই ম্যাচগুলো সব সময়ই একটু কঠিন এবং ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে।’

পরের ম্যাচগুলোতে দলের প্রধান চিন্তাটাও জানিয়ে দিয়েছেন পোথাস—পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা খোঁজা, ‘ক্যান্ডিতে খুব ভালো করিনি আমরা। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে খুব ভালো খেললাম। কিন্তু আজ (গতকাল) আবার আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলাম না। নিজেদের জন্য সঠিক কম্বিনেশন খোঁজার চেষ্টা করছি আমরা। এই মুহূর্তে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা আনাই মূল লক্ষ্য।’

লাহোরের ব্যাটিং উইকেটেও এমন হতাশাজনক ব্যাটিং কেন জানতে চাইলে পোথাসের কথা, ‘আমরা সম্ভবত প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণের জন্য কাজটা সহজ করে তুলেছিলাম। এই গরমের মধ্যে ওদের সুযোগ দিয়ে গেছি। ব্যাটসম্যানদের উচিত ছিল ম্যাচটিকে টেনে নিয়ে যাওয়া। ভালো মানের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে খেলার ধরন ও রকমই হওয়া উচিত। এখানে আমাদের উন্নতির দরকার আছে।’

আরও পড়ুন
বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ নিক পোথাস
ফাইল ছবি

সঙ্গে এটাও মেনে নিয়েছেন যে পাকিস্তানের এমন বোলিং আক্রমণ সামলানোটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন, ‘আমার মনে হয় না আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খুব বেশি খেলি। আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা একটি দলের বিপক্ষে খেলা খুব সহজও নয়। ওরা বিশ্বের এক নম্বর দল। এই মাঠের কন্ডিশনও বিশ্বের যেকোনো দলের চেয়ে ভালো জানা ওদের।’

সুপার ফোরের কলম্বো অংশের আলোচনায় সবার আগে আসছে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা। পাকিস্তান থেকে এশিয়া কাপের বিদায়বেলায় পোথাস এবং পাকিস্তান দলের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে আসা ম্যান অব দ্য ম্যাচ হারিস রউফের কাছেও প্রশ্ন ছিল এ নিয়ে। দুজনই অবশ্য ‘বৃষ্টির ওপর কারও হাত নেই’ বলে এড়িয়ে গেছেন সে প্রসঙ্গ।

কলম্বোতে যেমন বৃষ্টির সম্ভাবনা, পাকিস্তানেও ছিল প্রচণ্ড গরম। রউফ অবশ্য বলেছেন, এসবের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই পেশাদার ক্রিকেটারদের দায়িত্ব। দেশের মানুষের প্রত্যাশা মিটিয়ে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ খেলতে কলম্বো যেতে পারছেন বলে একটা বাড়তি তৃপ্তিও খুঁজে পাওয়া গেছে তাঁর কথায়।

আরও পড়ুন