৭২ রান তুলতেই ৪ উইকেট উধাও। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিততে ভারতের তখনো প্রয়োজন ছিল ১৮৮ রান। জয়ের বন্দরে পৌঁছানোর পথটা বেশ লম্বাই ছিল বলতে হবে। লম্বা সেই পথ ভারত সহজে সফলভাবে পাড়ি দিতে পেরেছে হার্দিক পান্ডিয়া ও ঋষভ পন্তের ব্যাটে চড়ে!
পঞ্চম উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে তুলেছেন ১৩৩ রান। ভারতও পেয়েছে ৫ উইকেটের জয়। ৫৫ বলে ১০টি চারে ৭১ রান করে পান্ডিয়া আউট হয়ে গেলেও দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে পন্ত করেছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। ম্যাচ শেষে ১৬টি চার ও ২টি ছয়ে ১১৩ বল খেলে ১২৫ রান করে ছিলেন অপরাজিত।
পান্ডিয়া-পন্তের ইনিংস দুটি এবং তাঁদের অসাধারণ জুটিটি কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারকে মনে করিয়ে দিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও যুবরাজ সিংয়ের কথা। ম্যাচ শেষ করে আসার অসাধারণ দক্ষতা ছিল ধোনি ও যুবরাজের। কঠিন পরিস্থিতিতেও ঠান্ডা মাথায় ম্যাচের ফল দলের পক্ষে নিয়ে আসতে পারতেন তাঁরা।
একটা সময় ছিল, ধোনি আর যুবরাজ জুটি গড়ে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন ভারতকে। তাঁদের অনেক জুটির মধ্যে এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের মনের মধ্যে হয়তো বেশি করে গেঁথে আছে ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে ম্যাচ জেতানো ৫৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিটি। ধোনি ৭৯ বলে ৮ চার ও ২ ছয়ে ৯১ রানে অপরাজিত ছিলেন। আর যুবরাজ অপরাজিত ছিলেন ২ চারে ২৪ বলে ২১ রান করে।
ধোনি-যুবরাজের ২০১১ সালের ফাইনালের সেই জুটি অতটা বড় ছিল না। কিন্তু গৌতম গম্ভীর আউট হয়ে যাওয়ার পর একটু চাপেই পড়ে গিয়েছিল ভারত। সেই চাপ জয় করেছেন ধোনি-যুবরাজ। কালও দারুণভাবে চাপ জয় করে ভারতকে ম্যাচ ও সিরিজ জিতিয়েছেন পান্ডিয়া-পন্ত।
দুজনের খেলা দেখে গাভাস্কারের মনে হয়েছে, ভারতের এই দলের ‘ধোনি-যুবরাজ’ হতে পারেন পান্ডিয়া-পন্ত। ম্যাচ শেষে ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান স্পোর্টস তাক পত্রিকাকে বলেছেন, ‘এটা অবশ্যই হতে পারে।’
কেন গাভাস্কারের এমনটা মনে হয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ‘যুবরাজ ও ধোনি যে ধরনের ছয় মারত, যেভাবে তারা ইনিংস টেনে নিয়ে যেত এবং তাদের রানিং বিটুইন দ্য উইকেট...সব মিলিয়ে তারা ভারতের জন্য অমন একটা জুটি হতে পারে। আমি আশা করছি, পান্ডিয়া ও পন্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করে নিতে পারে।’
২০০৫ থেকে ২০১৭—এই ১২ বছরে ধোনি ও যুবরাজ একসঙ্গে ব্যাট করেছেন ৬৭ বার। ১০টি শতরান, ১৩টি অর্ধশত রানের জুটিসহ ৫১.৭৫ গড়ে তাঁরা দুজনে মিলে তুলেছেন ৩১০৫ রান।