বিপিএলে দুর্নীতি: কী করবে নতুন কমিটি
বিপিএলের গত আসরের দুর্নীতি নিয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি করেছিল বিসিবি। তারা বোর্ডের কাছে একটি প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাদের দেওয়া পরামর্শের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে বিসিবির পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে চার সদস্যের আরও একটি কমিটি করা হয়েছে।
আজ সিলেটে বিসিবি পরিচালকদের সভার পর বিসিবির সহসভাপতি নাজমূল আবেদীন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মূলত আইনি দিকগুলো দেখে পরবর্তী করণীয়ের বিষয়ে পরামর্শ দেবেন নতুন এই কমিটির সদস্যরা। তাঁদের ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে নাজমূল বলেছেন, ‘এটা ট্রাইব্যুনাল (বিচার করার জন্য) নয়, এখানে সবগুলো বিষয়ের সঙ্গে আইনি ব্যাপার জড়িত। সেটাকে কাভার করার জন্য আইনি দিকটা দেখবে (নতুন কমিটি)। তারা দ্রুততম সময়ে ক্রিকেট বোর্ডের কী করণীয়, তা জানাবে। কারণ, রিপোর্টে যে পরামর্শ আছে, যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে, সেগুলো নিয়ে বোর্ড কাজ করতে চায়। এখানে অনেক বিষয় হয়তো থাকতে পারে, যেটা আমাদের ক্রিকেটের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করেছে।’
বিপিএলের দুর্নীতির ঘটনাগুলো নিয়ে কোনো ট্রাইব্যুনাল গঠন হবে কি না, তা নতুন এই চার সদস্যের কমিটির করণীয় জানানোর পর ঠিক করবে বিসিবি।
আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারের নেতৃত্বে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিটিতে অন্য দুই সদস্য ছিলেন আইনজীবী ড. খালেদ এইচ চৌধুরী ও সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাসেম। বিসিবির কাছে তাঁরা যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, সেখানে বিপিএলের আগামী আসরের জন্যও কিছু পরামর্শ ছিল।
এ নিয়ে কমিটির সদস্য আইনজীবী খালেদ এইচ চৌধুরী প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘প্রাথমিক রিপোর্টে আমরা মূলত আমাদের ফাইন্ডিংস উল্লেখ করব। কেন এসব হচ্ছে, এসব বন্ধে বিসিবির কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, ফ্র্যাঞ্চাইজি কাঠামো ঠিক করা—এসব ব্যাপারে আমাদের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ থাকবে।’ তাঁদের দেওয়া প্রতিবেদনে যেসব খেলোয়াড়ের বিষয়ে অভিযোগ উঠে এসেছে, তাঁরা আসন্ন এনসিএল টি–টোয়েন্টি এবং পরবর্তী টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নও করা হয়েছে নাজমূলকে। তিনি বলেছেন, এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই তাঁরা চার সদস্যের কমিটি করেছেন।
উনি কীভাবে করবেন, কোন কোন ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকজন থাকবে—সেটার গাইডলাইন দেওয়া আছে। (স্বার্থের সংঘাত হয় কি না) আমি জানি না। সভাপতি অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবেন।বিসিবি সভাপতি আমিনুল নির্বাচন কমিশন গঠন করলে স্বার্থের সংঘাত হয় কি না—প্রশ্নের উত্তরে নাজমূল আবেদীন
এদিকে বিপিএলের আগামী তিন আসরের জন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএমজিকে চূড়ান্ত করেছে বিসিবি। সভার পর নাজমূল জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন নাজমূল। তিন সদস্যের কমিশন গঠনের জন্য নাম প্রস্তাবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামকে। আবারও সভাপতি হওয়ার আগ্রহের কথাও ইতিমধ্যে জানিয়েছেন তিনি।
সে ক্ষেত্রে আমিনুলই নির্বাচন কমিশন গঠন করলে তা স্বার্থের সংঘাত হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে নাজমূল বলেছেন, ‘উনি কীভাবে করবেন, কোন কোন ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকজন থাকবে—সেটার গাইডলাইন দেওয়া আছে। (স্বার্থের সংঘাত হয় কি না) আমি জানি না। সভাপতি অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এ মাসেই অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশলে রসকে এনে ব্যাটিংয়ের জন্য কোচদের একটি তিন দিনের কর্মশালার আয়োজন করা হবে। যেখানে বিসিবির ও বাইরের মিলিয়ে ২৫–৩০ জন কোচ থাকবেন বলে জানিয়েছেন নাজমূল। এ ছাড়া একটি লেভেল থ্রি কোর্সও আয়োজন করবে বিসিবি।