কোহলির সঙ্গে বাদানুবাদ, এরপর নাভিনের আম-কাহিনি

নাভিন-উল-হকের উইকেট পাওয়ার উদ্‌যাপনআইপিএল

নাভিন-উল-হক আম খেয়েছিলেন। আফগান পেসারকে এর পর থেকে তাড়া করে ফিরছে সেই আম।

কীভাবে নাভিনের আম খাওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা ছড়াল, এর জন্য একটু পেছনে ফিরে যেতে হবে। ১ মে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে আইপিএলের গ্রুপ পর্বে ম্যাচ ছিল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের। ১৮ রানে সে ম্যাচ জিতেছিল বেঙ্গালুরু।

ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়দের করমর্দনের সময় বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় বেঙ্গালুরুর কোহলি ও লক্ষ্ণৌর নাভিনকে। দেখে মনে হয়, বেশ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন তাঁরা। এরপর সেটি ছড়িয়ে পড়ে কোহলি ও লক্ষ্ণৌর মেন্টর গৌতম গম্ভীরের মধ্যেও। শেষ পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হয় তিনজনকেই।

এরপরই আসে নাভিনের ওই আম খাওয়ার ঘটনা। মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও বেঙ্গালুরু মুখোমুখি হয়েছিল লিগ পর্বে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাভিন এবার তাঁর আম খাওয়ার ছবি পোস্ট করেন। ক্যাপশনে লেখেন, ‘মিষ্টি আম।’ ঘটনাক্রমে নাভিনের ওই পোস্টের ঠিক আগের মুহূর্তে মাত্র ১ রান করে আউট হন কোহলি। নাভিনের ওই পোস্ট কোহলির উদ্দেশে—দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে ফেলেন কোহলি-ভক্তরা।

আরও পড়ুন

এর পর থেকে লক্ষ্ণৌ পেসারকে নিয়মিতই মাঠে ‘কোহলি, কোহলি’ চিৎকার শুনতে হয়েছে। বিশেষ করে লক্ষ্ণৌর প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকেরা তিনি বোলিংয়ে এলেই কোহলির নাম ধরে চিৎকার করেছেন। সর্বশেষ এলিমিনেটর ম্যাচেও মুম্বাইয়ের বিপক্ষে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় নাভিনকে।

বোলিংয়ে নাভিন অবশ্য ‘ভালো জবাব’ই দিয়েছেন। ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। প্রতিটি উইকেটের পরই দুই কানে আঙুল এনে ‘কিছু শুনতে পাচ্ছেন না’ ধরনের উদ্‌যাপন করেন। যদিও তাঁর অমন বোলিং পারফরম্যান্স কাজে আসেনি। ব্যাটিং–ধসে পড়ে ৮১ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে বিদায় নেয় লক্ষ্ণৌ।

ম্যাচ শেষে নাভিন দর্শকদের আচরণ নিয়ে বলেন, ‘আমি এটি উপভোগ করি। দর্শকেরা যখন তার (কোহলির) নাম বা অন্য কারও নামে চিৎকার করে। এতে আমার দলের হয়ে ভালো খেলার তাড়না আরও বাড়ে।’

আরও পড়ুন

নাভিন অবশ্য এরপর বলেন, ‘আমি আসলে বাইরের আওয়াজে মনোযোগ দিই না। নিজের প্রক্রিয়ার দিকেই নজর থাকে আমার। দর্শকেরা যদি কারও নামে চিৎকার করে বা এমন কিছু, তাতে আমার কিছু যায়–আসে না। পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এগুলো আপনাকে মেনে নিতে হবে। কোনো দিন আপনি দলের হয়ে নিজের সেরাটা দিতে পারবেন না, দর্শকদের কথা শুনতে হবে তখন। অন্য কোনো দিন আপনি দলের জন্য বিশেষ কিছু করবেন, আপনার নামেও দর্শক চিৎকার করবে। এটা খেলারই অংশ।’

ঘটনা অবশ্য এখানেই শেষ নয়। লক্ষ্ণৌর হারের পর নাভিনকে ‘খোঁচা’ দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বেছে নেন মুম্বাইয়ের কয়েকজন খেলোয়াড়। সন্দীপ ওয়ারিয়ের, কুমার কার্তিকিয়া ও বিষ্ণু বিনোদ—মুম্বাইয়ের তিন ক্রিকেটার ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেন। যাতে দেখা যায়, তাঁদের সামনে টেবিলে রাখা তিনটি আম। কেউ চোখে হাত রেখেছেন, কেউ কানে, কেউ মুখে। পরে অবশ্য সে পোস্ট মুছে ফেলা হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেটি ঠিকই ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে ম্যাচের পর লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের অফিশিয়াল আইডি থেকে আরেকটি টুইট করা হয়। যাতে দেখা যায়, বেশ কিছু শব্দওয়ালা টুইট ‘মিউট’ করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে আছে ‘আম, মিষ্টি’ ইত্যাদি। মানে এসব শব্দ কোনো টুইটে থাকলে সেগুলো তাদের আইডি থেকে দেখানো হবে না।

নাভিন অবশ্য ইনস্টাগ্রামে ঠিকই তাঁর কানে আঙুল দেওয়া উদ্‌যাপনের ছবি পোস্ট করেন। ক্যাপশনে লেখেন, ‘অনেক কিছু বলার আছে। তবে এখন কোচ, ম্যানেজমেন্ট ও এই ভ্রমণে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’

নাভিনের আম-কাহিনি কত দূর গড়াবে, কে জানে!