এক রানের দিন শেষ, চার–ছক্কার ....
একদিন আগের ঘটনা। আইপিএলে লক্ষ্ণৌ বনাম গুজরাটের ম্যাচ। আগে ব্যাটিং করা লক্ষ্ণৌ ১৪.২ ওভারে ১৫২। ২২ রান নিয়ে স্ট্রাইকে নিকোলাস পুরান, নন স্ট্রাইক মিচেল মার্শ। অস্ট্রেলিয়ার মার্শ অপরাজিত ৮৭ রানে। বোলিং করছেন বাঁহাতি স্পিনার সাই কিশোর। ওই সময়ে তাঁর বলে এক রান নেওয়ার সুযোগ থাকলেও পুরান সেটি নেননি, মার্শকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। নন স্ট্রাইকে ৮৭ রানে ব্যাটিং করা মার্শ থাকার পরও।
কী কারণে সিঙ্গেল নেননি? বাঁহাতি স্পিনারের বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পুরান ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন। পরের বলটিতে মেরেছেনও। এটি কি শুধুই একটা ছক্কা নাকি টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন দিনের বাস্তবতাও?
টি–টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের উদ্দেশ্যে যত পারো দ্রুত রান তোলো। সেটা যদি ছক্কা মেরে করা যায় তাহলে এক রানের কী দরকার! এমন একটা প্রশ্ন এখন প্রাসঙ্গিক। টপ অর্ডারে খেলা ব্যাটসম্যানরা এখন হয়তো এটাই বিশ্বাস করেন। অন্তত পরিসংখ্যান সেটাই বলছে।
২০২৪ সালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ওপেনার অভিষেক শর্মা ও ট্রাভিস হেড নতুন ধারার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন। এর প্রভাব পড়ে অন্য দলেও। এবার যেটা বেশি দেখা গেছে নিকোলাস পুরান, মার্শদের ব্যাটে।
শুরু থেকে বাউন্ডারি না মারতে পারার প্রভাব কতটুকু, সেটা তো এবার চেন্নাই দলটাকে দেখলেই বোঝা যায়। চলতি আইপিএলে পাওয়ার-হিটিংকে উপেক্ষা করে ধাক্কা খেয়েছে দলটি। একসময় আইপিএলে রাজত্ব করা দলটি শুরুতে ব্যাটিং করেছে সেকেলে টি-টোয়েন্টির মতো। ফলে শুরুর দিকে একাধিক ম্যাচে তারা পিছিয়ে পড়ে। তবে মৌসুমের মাঝপথে কৌশলে পরিবর্তন এনে, দুই তরুণ ব্যাটসম্যানকে দলে নিয়ে নতুন ছন্দ খুঁজে পায় তারা।
১৭ বছর বয়সী আয়ুশ মাহাত্রে ও দক্ষিণ আফ্রিকান তরুণ ডেভাল্ড ব্রেভিস ছিলেন সেই দুই মিড-সিজন সাইনিং। মাত্র ৬টি ম্যাচ খেলা ওপেনার মাহাত্রে পাওয়ার প্লেতে ১৯০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ১৪৩ রান করেন, যা চেন্নাইয়ের পাওয়ারপ্লে দুর্বলতা কিছুটা দূর করে। অন্যদিকে ব্রেভিস পাঁচটি ম্যাচেই মারেন ১২টি ছক্কা। ছক্কার সংখ্যায় তিনি চেন্নাইয়ের হয়ে দ্বিতীয়, তার ওপরে আছেন শুধু শিবম দুবে, যিনি ১৯টি ছক্কা মেরেছেন।
চলতি আইপিএলে ১০টি ম্যাচ হারলেও রাজস্থান রয়্যালস ব্যাট হাতে আগ্রাসী রূপ দেখিয়েছে। দলটি পুরো আসরে ১৪৬টি ছক্কা মেরেছে, যার মধ্যে ৫৭টি এসেছে পাওয়ার-প্লেতে, যা সব দলের মধ্যে সর্বোচ্চ। পাওয়ার-প্লেতে রাজস্থান তুলেছে ৯১৪ রান। স্ট্রাইক রেট ১৭৪.০৫। এই রানের ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে বাউন্ডারি থেকে। আইপিএল ইতিহাসে যে তিনটি দল ৯০০–এর বেশি রান পাওয়ারপ্লেতে তুলেছে, তাদের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ।