টি–টোয়েন্টিতে ‘ডটের রাজা’ এখন মোস্তাফিজ
প্রতিপক্ষের রানের চাকা থামাতে হবে। কে আসবেন বোলিংয়ে? কে আবার, বাংলাদেশ দলে ‘ডেথ ওভার বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত সবেধন নীলমণি একজনই আছেন—মোস্তাফিজুর রহমান!
তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল সিরিজ জয়ের ম্যাচে ডেথ ওভারে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ১৮ ও ২০তম ওভার মিলিয়ে দিয়েছেন ১৬ রান। ১৮তম ওভারে ৬ রান দিলেও শেষ ওভারে দেন ১০ রান। সব মিলিয়ে ৪ ওভার বোলিং করে উইকেটশূন্য থেকে দেন ৪০ রান। কিপটেমি খুব একটা দেখাতে না পারলেও এর মধ্যেই ৭টি ডেলিভারি ছিল ‘ডট’। আর সেই ডট দিয়েই আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির দারুণ এক রেকর্ডে শীর্ষে উঠে গেছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার।
টি–টোয়েন্টি যেহেতু চার–ছক্কার খেলা, সেখানে প্রতিটি ডট বল সোনার চেয়েও দামি। মোস্তাফিজ এখন আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ডট বল আদায় করা বোলার। গতকাল ম্যাচ চলাকালীন তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট করে জানানো হয়, ‘আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ডট বল করার রেকর্ড এখন মোস্তাফিজুর রহমানের—১১৪২!’
অর্থাৎ এ পর্যন্ত ১১৪২টি ডট আদায় করেছেন মোস্তাফিজ, যা এই সংস্করণে সর্বোচ্চ। তালিকায় দ্বিতীয় নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার টিম সাউদি, তৃতীয় বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। চারে ইংল্যান্ডের লেগ স্পিনার আদিল রশিদ, পাঁচে আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান।
মোস্তাফিজ ১২০ ইনিংসে বোলিং করেছেন। তাঁর ২৬১৬টি বৈধ ডেলিভারির মধ্যে ডট ১১৪২টি—অর্থাৎ ৪৩.৬৫ শতাংশ বলেই ব্যাটসম্যান রান নিতে পারেননি। মোট রান দিয়েছেন ৩১৯৫। সাউদি ১২৩ ইনিংসে ২৭৫৩ বল করে ডট আদায় করেছেন ১১৩৮টি (৪১.৩৩ শতাংশ)। সাকিব ১২৬ ইনিংসে ২৭৪৫ বল করে ডট আদায় করেছেন ১০৭৮টি (৩৯.২৭ শতাংশ)।
এই তালিকায় এক হাজারের বেশি ডট দেওয়া বোলার আছেন কেবল তিনজন—মোস্তাফিজ, সাউদি ও সাকিব। আদিল রশিদ ১২৬ ইনিংসে ২৭৫৬ বল করে ডট আদায় করেছেন ৯৮৮টি (৩৫.৮৪ শতাংশ)। আফগান রশিদ খান ১০৫ ইনিংসে ২৪০৮ বল করে ডট আদায় করেছেন ৯৮৪টি (৪০.৮৬ শতাংশ)।
শীর্ষ দশে বাংলাদেশের আর কোনো বোলার নেই। তবে ১১তম স্থানে আছেন তাসকিন আহমেদ। তিনি ৮১ ইনিংসে ১৭৫৫ বল করে ডট আদায় করেছেন ৮৩৮টি—অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক বলেই (৪৭.৭৪ শতাংশ) ব্যাটসম্যানকে আটকে রেখেছেন।
ডট আদায় করা শীর্ষ পাঁচ বোলারের মধ্যে সবচেয়ে কম ছক্কা হজম করেছেন রশিদ খান (৮২টি)। এরপর আছেন মোস্তাফিজ (১০৪), সাকিব (১২০), সাউদি (১৪২) ও আদিল রশিদ (১৮৪)।
উইকেট শিকারে এই পাঁচজনের মধ্যে এগিয়ে আছেন রশিদ খান। ১৭৯ উইকেট নিয়ে তিনি টি–টোয়েন্টির সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। সাউদি নিয়েছেন ১৬৪, মোস্তাফিজ ১৫২, সাকিব ১৪৯ ও আদিল ১৪১ উইকেট।
কিপটেমির দিক থেকেও শীর্ষে রশিদ খান। তাঁর ইকোনমি রেট ৬.১২। এরপর সাকিব (৬.৮০), মোস্তাফিজ (৭.৩২), আদিল (৭.৪৮) ও সাউদি (৮.০০)।
অর্থাৎ উইকেট, ইকোনমি কিংবা ডট—সব জায়গাতেই নাম আছে মোস্তাফিজের। কখনো কৃপণ, কখনো শিকারি।