ম্যাচসেরার পুরস্কার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের উৎসর্গ মুজিবের

ব্যাটে বলে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন মুজিবছবি: রয়টার্স

একপেশে জয়ে বিশ্বকাপটা শুরু থেকেই যেন খানিকটা ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে পড়েছিল। ১০ দিন পার হয়ে গেলেও দেখা যায়নি নাটকীয় কোনো জয় কিংবা অঘটন। অবশেষে সেই অঘটনের জন্ম দিয়ে বিশ্বকাপে যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার করল আফগানিস্তান। দিল্লিতে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়েছে তারা। টস হেরে আগে ব্যাট করে ২৮৪ রান করে আফগানিস্তান। জবাবে ৪০.৩ ওভারে ২১৫ রানে ইংল্যান্ডকে অলআউট করে তারা।

আফগানিস্তানের এ জয়ে নায়কের ভূমিকা পালন করেছেন মুজিব উর রেহমান। ব্যাটিংয়ে ১৬ বলে ২৮ রানের ক্যামিও খেলার পর বল হাতে ৫১ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে এ স্পিনার বলেছেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারাতে পারার মুহূর্তটা দারুণ জন্য দারুণ গর্বের। পাশাপাশি ম্যাচসেরার পুরস্কারটি দেশের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের উৎসর্গ করেছেন মুজিব।

আরও পড়ুন

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও ফেবারিট ইংল্যান্ডকে হারানোর অনুভূতি জানতে চাইলে মুজিব বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে আসতে পারা এবং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারাতে পারার মুহূর্তটা গর্বের। দলের জন্য এটা দারুণ অর্জন। এটা এমন কিছু যার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। আমরা অনেক বড় একটি দলকে হারিয়েছি। বোলার এবং ব্যাটসম্যানরা দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।’

উইকেট নেওয়ার পর মুজিব যেন আকাশে উড়তে চাইলেন
ছবি: রয়টার্স

সম্প্রতি আফগানিস্তানের হেরাত শহরে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রায় দুই হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বিশ্বকাপে ম্যাচসেরার পুরস্কার দেশের মানুষকে উৎসর্গ করেছেন মুজিব, ‘আমি এই পুরস্কার (ম্যাচ সেরার পুরস্কার) দেশের মানুষকে উৎসর্গ করছি, যারা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা এমন কিছু যা দল হিসেবে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি করতে পারি।’

ঘূর্ণি জাদুতে শুরু থেকেই ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখেন মুজিব। অভিজ্ঞ ও ছন্দে থাকা জো রুটকে ১১ রানে বোল্ড করার পর ফেরান থিতু হয়ে যাওয়া হ্যারি ব্রুককেও (৬৬)। এ ছাড়া বোল্ড করেছেন ৯ রান করা ক্রিস ওকসকে।

আরও পড়ুন

নিজের বোলিং পারফরম্যান্স নিয়ে জানতে চাইলে মুজিব বলেছেন, ‘স্পিনার হিসেবে পাওয়ার প্লেতে বল করাটা বেশ কঠিন। কারণ বাইরে কেবল দুজন ফিল্ডার থাকে। আমি নেট অনুশীলনে নতুন বলে বল করেছি এবং যথাসম্ভব ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। এটাই আমাকে অনেক বেশি কার্যকর করে তুলেছে। বাইরে বল ফেলার মতো ভুলের সুযোগ এখানে নেই, তাই আমি উইকেট লক্ষ্য করে বল করেছি। আমরা জানতাম শিশির এখানে ভূমিকা রাখবে, তাই আমি পাওয়ার প্লেতে বল করতে চেয়েছি। আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। আমি চেয়েছি ব্যাটসম্যানদের খুব বেশি জায়গা না দেওয়ার এবং ঠিকঠাক জায়গায় বল করার।’

শুধু বোলিংয়েই নন, ব্যাট হাতেও ভূমিকা রেখেছেন মুজিব। ১৬ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় করেছেন ২৮ রান। ব্যাটিংয়ের কৃতিত্বটা অবশ্য ম্যানেজমেন্টকেই দিয়েছেন এই আফগান তারকা, ‘ব্যাটিংয়ের কৃতিত্ব ম্যানেজমেন্টকে দিতে হবে। তারা আমাদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। আমি চেয়েছি লোয়ার অর্ডারে নিজের অবদান রাখার। সেই ২৫-৩০ রান দলকে সাহায্য করেছে। আমি চাই এটা চালিয়ে যেতে।’