‘সবচেয়ে ব্যয়বহুল’ ক্লাবে জাম্পাকে গোপনে স্বাগত জানিয়েছিলেন লুইস

সেঞ্চুরিয়নে গত শুক্রবার মিক লুইসের সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন অ্যাডাম জাম্পাএএফপি

একটা সময় এ কাজটি নিয়মিতই করতেন জেসন গিলেস্পি। কোনো ব্যাটসম্যান প্রথমবারের মতো টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি পেলে টুইটারে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে ‘ডাবল সেঞ্চুরি ক্লাবে’ স্বাগত জানাতেন গিলেস্পি। সাবেক অস্ট্রেলীয় পেসার এর মাধ্যমে মনে করিয়ে দিতেন, টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি আছে তাঁরও।

২০০৬ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন গিলেস্পি। একমাত্র নাইটওয়াচম্যান হিসেবে এ কীর্তি আছে তাঁর। মারনাস লাবুশেনের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির পর তো তাঁকে উদ্দেশ করে একটা চিঠিই লিখে ফেলেছিলেন গিলেস্পি!

ওই কীর্তিটা নিয়ে গর্ব করতেই পারেন গিলেস্পি। অভিনন্দনটাও প্রকাশ্যেই জানাতেন তাই।

মিক লুইসের কীর্তিটা ঠিক গর্বের নয়। তিনিও অ্যাডাম জাম্পাকে একটা নির্দিষ্ট ‘ক্লাবে’ স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ঠিক প্রকাশ্যে নয়।

আরও পড়ুন

সেঞ্চুরিয়নে গত শুক্রবার হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার ঝড় তুলেছিলেন। ঝড় না বলে টর্নেডো বা এমন কিছু বলাই ভালো। সেটির সবচেয়ে বড় প্রভাবটা পড়েছিল অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার জাম্পার ওপর। প্রথম ৫ ওভারে ৩৮ রান দেওয়া জাম্পা পরের ৫ ওভারে দেন আরও ৭৫ রান!

সব মিলিয়ে জাম্পার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় এমন—১০ ওভার, ০ মেডেন, ১১৩ রান, ০ উইকেট! আর তাতেই হয়ে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত সেই রেকর্ডটা। ওয়ানডেতে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন জাম্পা।

মিক লুইসের কীর্তিটা ঠিক গর্বের নয়
এএফপি

যে রেকর্ড এত দিন ছিল লুইসের। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে ৪৩৪ রান তুলেও হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওয়ানডেতে পরে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছিল ৪৩৮ রান, জিতেছিল ১ বল ও ১ উইকেট বাকি রেখে। সেদিনও সবচেয়ে বড় ঝড়টা গিয়েছিল লুইসের ওপর দিয়েই। জাম্পার মতো তাঁরও বোলিং ফিগার ছিল সেদিন এমন—১০ ওভার, ০ মেডেন, ১১৩ রান, ০ উইকেট! ইতিহাসে ১ ইনিংসে ১০০ রান খরচ করার দ্বিতীয় রেকর্ড ছিল সেটি।

আরও পড়ুন

সেদিক থেকে গিলেস্পির সঙ্গে মিল আছে লুইসেরও। চট্টগ্রামের ওই ডাবল সেঞ্চুরির টেস্টই হয়ে আছে গিলেস্পির ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। লুইসও জোহানেসবার্গের পর আর কোনো ওয়ানডে খেলেননি।

এ স্ক্রিনশটটা নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন অ্যাডাম জাম্পা
অ্যাডাম জাম্পার ইনস্টাগ্রাম আইডি থেকে নেওয়া

লুইসের পর ১০০ মারার এ কীর্তি জাম্পার আগে ছুঁয়েছিলেন আরও ১৩ জন। তবে কেউই লুইসকে ছুঁতে পারেননি। সে অর্থে তাঁর সবচেয়ে কাছে গিয়েছিলেন রশিদ খান। ২০১৯ বিশ্বকাপে ওল্ড ট্রাফোর্ডে এউইন মরগানের কবলে পড়েছিলেন আফগান লেগ স্পিনার। তবে ৯ ওভারে ১১০ রান দেওয়ার পর আর দশম ওভারটি করতে আসেননি রশিদ, না হলে হয়তো সে দিনই সঙ্গী পেয়ে যেতেন লুইস। মরগান সেদিন একাই রশিদের ২০ বলে তুলেছিলেন ৫৮ রান।

অবশেষে গত শুক্রবার এসে জাম্পা ছুঁয়ে ফেললেন লুইসকে। সেটি নজর এড়িয়ে যায়নি লুইসের। হোয়াটসঅ্যাপে সেদিনই জাম্পাকে মেসেজ দেন তিনি, ‘ওয়েলকাম টু দ্য ক্লাব মেট’। মানে, ‘এ ক্লাবে তোমাকে স্বাগত!’

সে মেসেজের একটা স্ক্রিনশট আজ ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন জাম্পা। হাজার হলেও, রেকর্ড বলে কথা!