মেসি-নেইমারের বন্ধুত্বে চিড় ধরেছে?
একে তো মাঠে তাঁদের পারফরম্যান্সের কাঁটাছেড়া চলছে চারদিকে। কাঁটাছেড়ায় ভালো কিছু আসছেও না। নেইমার আর কিলিয়ান এমবাপ্পে তো ছিলেনই, তাঁদের সঙ্গে লিওনেল মেসিও যোগ হওয়ার পর যে চোখধাঁধানো ফুটবল আর গোলের ছড়াছড়ির আশা করেছিল পিএসজি, তা হচ্ছে না।
এর মধ্যে মেসি আর নেইমারকে নিয়ে শোনা যাচ্ছে নতুন দুঃসংবাদ। বার্সেলোনায় দুজনের বন্ধুত্বের গল্প সবার জানা, বার্সেলোনার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর মেসির পিএসজিতে যাওয়ার অন্যতম বড় কারণও নেইমারই ছিলেন বলে জানা গেছে। প্রিয় বন্ধুকে ক্লাবে আনতে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড পিএসজি কর্তাদের উৎসাহ আরও চাগিয়ে দিয়েছিলেন। সেই মেসি আর নেইমারের সম্পর্কটাই নাকি আর আগের মতো সহজ নেই!
এমন খবর অবশ্য ফ্রান্স নয়, স্পেন থেকেই আসছে। বার্সেলোনাভিত্তিক সাংবাদিক শাভি তোরেস জানাচ্ছেন, মেসি আর নেইমারের সম্পর্ক আর আগের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ নয়।
খবরটা এমন সময়ে আসছে, যখন গত পরশু চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে হারের পর পিএসজির ফুটবল নিয়ে সমালোচনার কমতি নেই।
এর একটা বড় কারণ অবশ্য পিএসজি কোচ মরিসিও পচেত্তিনো। পিএসজির দল কেমন হবে, ফুটবলের কৌশল কেমন হবে; পিএসজিতে যাওয়ার দেড় বছরেও তা-ই এখনো গোছাতে পারেননি পিএসজি কোচ মরিসিও পচেত্তিনো। লিগে পিএসজি ১১ পয়েন্টে এগিয়ে লিগ শীর্ষে আছে ঠিকই, তবে তাদের খেলার ধরন মন ভরাতে পারছে না কারও।
চ্যাম্পিয়নস লিগে তো গত পরশু ম্যান সিটির কাছে ২-০ গোলের হারে ‘ফুটবলের শিক্ষা’ই পেল পিএসজি!
এই হারে গ্রুপে পিএসজির দ্বিতীয় হওয়াও নিশ্চিত। তার মানে শেষ ষোলোতে বায়ার্ন মিউনিখ, আয়াক্স, লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি কিংবা জুভেন্টাসের মতো কোনো দলের বিপক্ষে পড়ার সম্ভাবনা বেশি!
আর পচেত্তিনোর পিএসজির এই ছন্নছাড়া ফুটবলের বলি হচ্ছে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পের সমন্বয়। তিনজন মিলে এখন পর্যন্ত গোলই করেছেন মাত্র ১৫টি। তিনজনই কখনো না কখনো চোটে ছিলেন। আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে-পরের ঝামেলা থাকায় তিনজনের একসঙ্গে খেলা হয়েছেই খুব কম সময়, তবে এর মধ্যে মেসি আর এমবাপ্পের সমন্বয়ই যা একটু চোখে পড়েছে। তিনজনের মধ্যে নেইমারকেই যেন একটু খাপছাড়া লাগছে।
এর মধ্যে গতকাল স্প্যানিশ টিভি ‘উনজ টিভি থ্রি’তে সাংবাদিক শাভি তোরেসের খবরটা পিএসজি সমর্থকদের উদ্বেগ আরও বাড়াবে। বার্সেলোনার খবরাখবর বের করে আনায় খ্যাতি আছে এই সাংবাদিকের।
মেসি আর নেইমারের বন্ধুত্বের দারুণ গল্প বার্সেলোনাতেই শুরু বলে, বার্সেলোনার অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে এখনো দুজনের সম্পর্ক অনেক ভালো বলে তাঁর কথাগুলোকে একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যায় না।
তা কী বলেছেন তোরেস? ‘ওরা আগের মতো আর ভালো বন্ধু নয়। ওদের মধ্যে রসায়নটা আর আগের মতো নয়।’ এখানে অবশ্য মেসির পরিবারের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন তোরেস, ‘ওর (মেসির) পরিবারও স্বস্তি বোধ করছে না। আন্তোনেল্লাকে বার্সেলোনাতেই বেশি দেখা যায়।’
এখানে অবশ্য একটা ‘কিন্তু’ থেকে যায়। মেসি পিএসজিতে যাওয়ার পর বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এত বছরে বার্সেলোনায় তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল যে এখন হঠাৎ এই বদলে মানিয়ে নিতে তাদের কষ্ট হচ্ছে। মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লার বার্সেলোনাতে ব্যবসাও আছে, সেটিও তাঁর বারবার বার্সেলোনায় যাওয়ার কারণ হতে পারে।