মোহামেডানে নেই সাফল্যের নায়ক দিয়াবাতে

মোহামেডানের জার্সিতে ৭ বছর খেলেছেন সুলেমান দিয়াবাতে।শামসুল হক

২০০৭ সালে পেশাদার লিগ শুরুর পর এবারই প্রথম ঘরোয়া ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহামেডান। অথচ বড় বাজেটের দল ছিল না এটি, ঘাম ঝরানো পরিশ্রম আর কিছু দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এসেছে এই সাফল্য।

সাফল্যের সেই নায়কদের অগ্রণী ছিলেন সুলেমান দিয়াবাতে। মালির এই স্ট্রাইকার গত কয়েক মৌসুম ধরে ছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক। ২০১৮ সালে ক্লাবে যোগ দিয়ে খেলেছেন শতাধিক ম্যাচ, করেছেন প্রায় ১০০ গোল। ২০২০–২১ মৌসুমে হয়েছেন লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা (২১ গোল)। আর সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমেও করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ গোল (সর্বোচ্চ ২১ গোল রহমতগঞ্জের স্যামুয়েল বোয়াটেংয়ের)।

২০২৩ সালে মোহামেডানের ফেডারেশন কাপ জয়ের নায়কও ছিলেন দিয়াবাতে। কুমিল্লায় ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে ৪–৪ গোলে ড্র করা ম্যাচে চার গোলই করেছিলেন এই ফরোয়ার্ড। টাইব্রেকারে জিতে শিরোপা হাতে তোলে মোহামেডান।

তবে সবকিছু বদলে গেছে এক মৌসুমেই। নতুন মৌসুমের জন্য মোহামেডানের দলবদলের তালিকায় নেই দিয়াবাতে। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, মোহামেডানের সঙ্গে আর থাকছেন না।

২০২৩ ফেডারেশন কাপের ট্রফির সঙ্গে সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড়ের ট্রফি হাতে সুলেমান দিয়াবাতে।
ছবি: শামসুল হক

দিয়াবাতে এখন নিজের দেশ মালিতে। সেখান থেকে প্রথম আলোকে ফোনে তিনি বলেন, ‘মোহামেডান ম্যানেজার নকীব (ইমতিয়াজ আহমেদ) আমাকে “না” করে দিয়েছে। ফলে আমি আর মোহামেডানে নেই।’

তাহলে কী অন্য কোনো ক্লাবে যাচ্ছেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশেই খেলার ইচ্ছা আছে। ক্লাব খুঁজছি, দেখি কোথায় খেলা যায়।’

আরও পড়ুন

মোহামেডান ক্লাব থেকে দিয়াবাতের বিদায়ের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো না হলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দিয়াবাতে আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছে ঠিক। কিন্তু ওর আচরণ ভালো ছিল না। ক্লাব যখন আর্থিক সংকটে পড়ে, সময়মতো বেতন দিতে পারেনি, তখন দিয়াবাতে নানা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এই কারণেই ওকে নিয়ে আর আগ্রহ দেখাইনি।’

তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দিয়াবাতে। তাঁর বক্তব্য, ‘মোটেও এমন কিছু হয়নি। মোহামেডানে সংকট ছিল, ২–৩ মাস বেতন পাইনি। কিন্তু কখনোই অনুশীলন বর্জন করিনি।’

এক কর্মকর্তা আচরণগত সমস্যার কথা বললেও ক্লাবের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, দিয়াবাতেকে না রাখার পেছনে আর্থিক সংকটই বড় কারণ। তাঁকে রাখলে মাসিক বেতন–ভাতাই দিতে হতো ১০–১২ হাজার ডলার।

মোহামেডানের  এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন মৌসুমে স্ট্রাইকার হিসেবে দলে যোগ দিতে যাচ্ছেন রহমতগঞ্জের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল বোয়াটেং, যিনি সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন। পাশাপাশি উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার মোজাফফরভকেও দলে রাখছে মোহামেডান।

আরও পড়ুন