ইংল্যান্ডের ২০১১ অ্যাশেজ জয়ের নায়ক এখন বডিবিল্ডার

ইংল্যান্ডের সাবেক ফাস্ট বোলার ক্রিস ট্রেমলেট অবসরের পর শরীর গঠনে ঝুঁকেছেনছবি : এএফপি, ইনস্টাগ্রাম

ক্রিস ট্রেমলেটের কথা মনে আছে? বাংলাদেশের আগের প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে না থাকার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশের বিপক্ষেই যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ট্রেমলেটের!

২০০৫ সালের ২১ জুন ন্যাটওয়েস্ট ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সেদিনই অভিষেক হয় ট্রেমলেটের। ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা এই ইংলিশ ফাস্ট বোলার প্রথম ম্যাচেই অনন্য কীর্তিটা প্রায় গড়েই ফেলেছিলেন।

আশরাফুলের ব্যাট ছুঁয়ে বল স্টাম্পে লাগলেও বেল না পড়ায় অভিষেকে হ্যাটট্রিক করা হয়নি ট্রেমলেটের
ছবি : ইসিবি

ইনিংসের দশম ওভারে টানা দুই বলে আউট করেন শাহরিয়ার নাফীস ও তুষার ইমরানকে। হ্যাটট্রিক ঠেকানোর চ্যালেঞ্জ নিতে পাঠানো হয় মোহাম্মদ আশরাফুলকে। সেই বলটা আশরাফুলের ব্যাট ছুঁয়ে স্টাম্পে লাগলেও বেল পড়েনি। বেল পড়লেই ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক হয়ে যেত ট্রেমলেটের। সেদিনের ওই মুহূর্ত এখনো অনেকের চোখে ভাসে। ‘জীবনটা’ পাওয়ার পরেই তো আশরাফুল উপহার দিয়েছিলেন ৫২ বলে ৯৪ রানের চোখধাঁধানো ইনিংস।

২০১১ সালে ইংল্যান্ডকে অ্যাশেজ জেতাতেও বড় অবদান রেখেছেন ট্রেমলেট। সেবার তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ড অ্যাশেজও জিতেছিল সেবার।

আরও পড়ুন

সেই ট্রেমলেট এত দিন পর আবার আলোচনায় অ্যাশেজের কারণেই। লন্ডনের ওভালে চলছে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম ও শেষ টেস্ট। এই টেস্ট জিতলে ২২ বছর পর ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ জিতবে অজিরা। বিপরীতে সিরিজ হার এড়াতে ওভালে জিততেই হবে ইংলিশদের। ওভালে উত্তরসূরি ও সাবেক সতীর্থদের রোমাঞ্চকর ম্যাচ দেখতে গেছেন ট্রেমলেট। তবে গত দশকের অ্যাশেজের নায়ককে চিনতে অনেকেরই কষ্ট হতে পারে। কুস্তিগিরদের মতোই যে শরীর বানিয়েছেন ৪১ বছর বয়সী সাবেক ফাস্ট বোলার!

ওভালে ইংল্যান্ড–অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দেখতে গিয়েছিলেন ট্রেমলেট (বাঁয়ে)। পাশে টিভি উপস্থাপক গ্রেগ ওয়ালেস
ছবি : টুইটার

ওভালে টিভি উপস্থাপক গ্রেগ ওয়ালেসের পাশে বসে ছিলেন ট্রেমলেট। অ্যাশেজের সম্প্রচারকারী চ্যানেল ‘স্কাই স্পোর্টস’–এর ক্যামেরায় ধরা পড়েন তিনি। সে সময় ওয়ালেসকে বোলিং নিয়ে কিছু একটা বলছিলেন ট্রেমলেট।

নিজের জিম করার মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন ট্রেমলেট। হাতের মাংসপেশি ও সিক্স প্যাক শরীর দেখে বোঝার উপায় নেই একসময় ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। অথচ ২০১৫ সালে খেলোয়াড়িজীবনকে বিদায় বলেছিলেন ফিটনেস নিয়ে হতাশার কারণে। পিঠ ও কাঁধের চোট তাঁকে বেশ ভুগিয়েছে। যে কারণে নিয়মিত খেলতে পারেননি। এসব থেকে মুক্তি পেতে ৩৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককেও দেখান। কোনো কিছুতেই কাজ না হওয়ায় সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। পরে নিজেকে বডিবিল্ডারে রূপান্তর করেন।

ইনস্টাগ্রামে ট্রেমলেটের অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। সম্প্রতি তাঁর জিম করার মুহূর্তের একটি ছবিতে একজন মজা করে লিখেছেন, ‘আমার মনে হয় শিগগিরই তোমাকে ডব্লুডব্লুইতে দেখব।’

চোটের কারণে ট্রেমলেটের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও খুব একটা দীর্ঘ হয়নি। আট বছরের ক্যারিয়ারের তিন সংস্করণ মিলিয়ে ট্রেমলেট খেলতে পেরেছেন মাত্র ২৮ ম্যাচ। উইকেট নিয়েছেন ৭০টি।