অভিষেক থেকে আজও—টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব মানে মেসি অপরাজেয়
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৩৭ বার গ্রুপ পর্বে খেলে প্রতিবারই বাধা টপকে পরের ধাপে পৌঁছেছেন লিওনেল মেসি।
হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে লিওনেল মেসি আজ খেলতে পারেননি। তবে সপরিবার ছিলেন গ্যালারিতে। ইন্টার মায়ামির পুরো ম্যাচেই নজর ছিল তাঁর।
৩৪ মিনিটে ইন্টার মায়ামি পিছিয়ে পড়ার পর মেসিকে কিছুটা চিন্তিত দেখাচ্ছিল। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল সব কীর্তির মধ্যে একটিতে তখন শতভাগ সাফল্যের ধারায় ছেদ পড়ার শঙ্কা।
তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। লুইস সুয়ারেজ-রদ্রিগো দি পলদের সৌজন্যে শঙ্কা উড়িয়ে দারুণভাবে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়েছে মায়ামি। মেক্সিকোর ক্লাব পুমাসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ক্লাব হিসেবে ২০২৫ লিগস কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে তারা।
সতীর্থদের তরফ থেকে পাওয়া উপহারের জয়ে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে গ্রুপ পর্বে শতভাগ সাফল্যের রেকর্ড ধরে রেখেছেন মেসি। এখন পর্যন্ত ৩৭ বার গ্রুপ পর্বে খেলে প্রতিবারই বাধা টপকে পরের ধাপে পৌঁছেছে তাঁর দল। ক্লাব পর্যায়ে হোক কিংবা জাতীয় দলের হয়ে—যতবারই মেসি প্রথম পর্বে অংশ নিয়েছেন, তাঁর দল কখনো বাদ পড়েনি।
কোনো টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে মেসির সাফল্যের এই যাত্রা মৌসুম হয়েছিল ২০০৪-০৫ মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে, বার্সেলোনার হয়ে। চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসির অভিষেক মৌসুমে বার্সেলোনা ছিল ‘এফ’ গ্রুপে। মেসি খেলেছিলেন একটি ম্যাচ, ইউক্রেনীয় ক্লাব শাখতার দোনেৎস্কের বিপক্ষে।
তখন থেকে মোট ছয়টি দলের হয়ে আটটি টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে ৩৭ বার খেলেছেন মেসি। সবচেয়ে বেশি গ্রুপ পর্বে খেলেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগেই; ১৯ বার (১৭ বার বার্সেলোনা, ২ বার পিএসজির হয়ে)।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে মেসি কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্বের বাধা পেরিয়েছেন সাতবার। এর মধ্যে টানা দুবার (২০২১ ও ২০২৪) শিরোপা জিতেছেন। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব টপকেছেন পাঁচবার। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ জয় তো তাঁকে ‘অমরত্বের স্বাদ’ দিয়েছে।
অথচ কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়ার পর গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কা জেগেছিল। এরপর টানা ছয় জয়ে সব বাধা টপকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা, তাতে নেতৃত্ব দেন মেসি।
বড়দের বিশ্বকাপ জেতার আগে ছোটদের বিশ্বকাপও জিতেছেন মেসি। ২০০৫ সালে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে বিশ্ব জয় করেন তিনি। সে বছরই অনূর্ধ্ব-২০ কোপা আমেরিকায় তৃতীয় হয় তাঁর দল। ২০০৮ সালে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে বেইজিং অলিম্পিকের সোনার পদক এনে দিতে বড় অবদান রাখেন মেসি।
ক্লাব ক্যারিয়ারে মেসি সর্বশেষ তিনবার গ্রুপ পর্বের বাধা টপকেছেন ইন্টার মায়ামির হয়ে। আজ লিগস কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করা মায়ামি ২০২৩ সালে এই প্রতিযোগিতায় মেসির হাত ধরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, যা ছিল ডেভিড বেকহামের মালিকানাধীন ক্লাবটির ইতিহাসের প্রথম শিরোপা।
যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর ক্লাবগুলোকে নিয়ে আয়োজিত লিগ কাপের গত আসরেও গ্রুপ পর্ব ও শেষ বত্রিশ পেরিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গিয়েছিল মায়ামি। কিন্তু কলম্বাস ক্রুর কাছে হেরে বাদ পড়তে হয়। তবে পায়ের পেশিতে চোটের কারণে মেসি লিগস কাপের গত আসরে খেলতে পারেননি মেসি।
এ ছাড়া সম্প্রতি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলো পর্বে খেলে মেসির ইন্টার মায়ামি।