নারী এশিয়ান কাপে ভালো করলে বিশ্বকাপের টিকিটও মিলতে পারে ঋতুপর্ণাদের

প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপে সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় চূড়ান্ত পর্ব কাজ করবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব হিসেবেও।

এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলএএফসি

ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। বাছাইপর্ব পেরিয়ে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে মেয়েদের এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে। গতকাল ঋতুপর্ণা চাকমার অসাধারণ দুই গোলে স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয়ে ২০২৬ এশিয়ান কাপে এক পা দিয়ে রাখে বাংলাদেশ। এরপর গ্রুপের অন্য ম্যাচে বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান ড্র করতেই নিশ্চিত হয়ে যায় এক ম্যাচ হাতে রেখেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত পর্বে উত্তরণ। ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চূড়ান্ত পর্ব কাজ করবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব হিসেবেও।

মেয়েদের এশিয়ান কাপ প্রথম শুরু হয় ১৯৭৫ সালে। এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রথম ২০ আসরে খেলেছে ২২টি দল। বাংলাদেশ সুযোগ পেল ২৩তম দল হিসেবে। ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপে বাংলাদেশসহ এখন পর্যন্ত পাঁচটি দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে।

এক নজরে ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ

স্বাগতিক হিসেবে অস্ট্রেলিয়া সুযোগ পেয়েছে। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নারী এশিয়ান কাপের ফলের ভিত্তিতে সুযোগ পেয়েছে তিনটি দেশ। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চীন, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া ও তৃতীয় হওয়া জাপান সরাসরি সুযোগ পেয়েছে ১২ দলের ২০২৬ এশিয়ান কাপে। বাছাইপর্ব পেরিয়ে সুযোগ পাবে আট গ্রুপের আট চ্যাম্পিয়নরা। সেই আট দলের একটিকে পেয়ে গেছে ২০২৬ এশিয়ান কাপ। ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে প্রথম দল হিসেবে টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশ।

এশিয়ান কাপ খেলে বিশ্বকাপে যাওয়ার সুযোগ আছে ঋতুপর্ণাদের
এএফসি

২০২৬ সালের ১ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার তিনটি শহরের পাঁচটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়ান কাপ। সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্টার্ন সিডনি স্টেডিয়াম, গোল্ড কোস্টের গোল্ড কোস্ট স্টেডিয়াম ও পার্থের রেকটাঙ্গুলার স্টেডিয়াম ও পার্থ স্টেডিয়ামে হবে খেলা।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ কোন গ্রুপে কাদের বিপক্ষে খেলবে, সেটি নির্ধারিত হবে ২৯ জুলাই সিডনি টাউন হলে অনুষ্ঠেয় ড্রতে।

কীভাবে হবে ড্র ও টুর্নামেন্টের ফরম্যাট

চূড়ান্ত পর্বে তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে ১২টি দল। ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার খেলাটা নির্ধারিত হয়ে আছে আগেই। বাকি ১১টি দল কে কোন গ্রুপে খেলবে, সেটি নির্ধারিত হবে ড্রতে। চারটি পটে বা পাত্রে ভাগ করা হবে ১২টি দলকে। প্রতিটি পটে থাকবে তিনটি করে দল। স্বাগতিক হিসেবে অস্ট্রেলিয়া থাকবে ১ নম্বর পটে। অন্য ১১টি দলকে গত ১২ জুন প্রকাশিত সর্বশেষ ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে ক্রমানুযায়ী বিভিন্ন পটে রাখা হবে। সর্বশেষ র‍্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ সম্ভবত ৪ নম্বর পটেই থাকবে। গ্রুপ পর্ব শেষে তিন গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল ও তৃতীয় হওয়া সেরা দুটি দল উঠবে কোয়ার্টার ফাইনালে। এরপর সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।
আরও পড়ুন

বিশ্বকাপ খেলতে কী করতে হবে

২০২৬ নারী এশিয়ান কাপটা ২০২৭ নারী বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব হিসেবেও কাজ করবে। ২০২৭ সালে নারী বিশ্বকাপ হবে ব্রাজিলে। এশিয়া থেকে সরাসরি ৬টি দল ও আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ খেলে সুযোগ পেতে পারে আরও দুটি দল। সেমিফাইনাল ওঠা চার দল সরাসরি সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে। কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়া চার দল দুটি প্লে-ইন ম্যাচে মুখোমুখি হবে। জয়ী দুই দল পেয়ে যাবে বিশ্বকাপের টিকিট। হেরে যাওয়া দুই দল যাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে।

অলিম্পিকের বাছাইপর্বও এশিয়ান কাপ

২০২৬ নারী এশিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা আটটি দল সুযোগ পাবে ২০২৮ অলিম্পিক ফুটবলের বাছাইপর্ব খেলার। সেই বাছাইপর্বে দুই গ্রুপে ভাগ খেলবে দলগুলো। দুই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের নারী ফুটবলে সুযোগ পাবে।

আরও পড়ুন