ফাঁকা হচ্ছে রিয়ালের চেক বই, দলবদলে রেকর্ড খরচ ২,৫১৫ কোটি টাকা
ব্যর্থ মৌসুমের পর রিয়াল মাদ্রিদ নতুন কোচ আলোনসোর অধীন ১৭ কোটি ৮০ লাখ ইউরো খরচ করে স্কোয়াড ঢেলে সাজাচ্ছে, যা ছয় বছরের সর্বোচ্চ।
গত মৌসুমটা রিয়াল মাদ্রিদের জন্য যেন ভুলে যাওয়ার মতো এক অধ্যায়। লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগ—কোনোটাই ধরে রাখতে পারেনি তারা। কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপেও ফাইনালে গিয়ে হেরে বসেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে। এমন ব্যর্থতার ধাক্কায় মৌসুম শেষে চাকরি হারান অভিজ্ঞ কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
তাঁর জায়গায় এবার হাল ধরেছেন জাবি আলোনসো—বায়ার লেভারকুসেনকে রূপকথার মতো সাফল্য এনে দেওয়া স্প্যানিশ কোচ। দায়িত্ব নিয়েই আলোনসো মনোযোগ দিয়েছেন দল ঢেলে সাজাতে। নতুন রিয়াল গড়ার মিশনে এখন পর্যন্ত ট্রান্সফারমার্কেটে ক্লাবটির ব্যয় ১৭ কোটি ৮০ লাখ ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা! অঙ্কটা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ আর গত ১৬ বছরে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
লা লিগার অন্য ক্লাবগুলো মিলে যেখানে এখন পর্যন্ত খরচ করেছে ৩৯ কোটি ইউরো, সেখানে রিয়াল একাই ঢেলেছে তার প্রায় অর্ধেক।
তবে এবারের দলবদলে রিয়ালের পরিকল্পনা পরিষ্কার—পুরো স্কোয়াড বদলে না ফেলে নজর দিচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু পজিশনে। বিশেষ করে গত মৌসুমে সবচেয়ে দুর্বল ছিল রক্ষণভাগ। একের পর এক ইনজুরিতে ডিফেন্ডাররা ছিটকে পড়লে দলটা হয়ে পড়ে অসম্পূর্ণ। তাই এবার রক্ষণের ভিত মজবুত করতেই বেশি জোর দিয়েছে ক্লাবটি।
এ পর্যন্ত রিয়াল চারজন নতুন খেলোয়াড়কে দলে টেনেছে, যাঁদের তিনজনই মূলত ডিফেন্ডার।
তাদের সর্বশেষ সংযোজন আইভারো কারেরাস। বেনফিকা থেকে আসা এই লেফট ব্যাককে কিনতে রিয়ালের খরচ হয়েছে ৫ কোটি ইউরো। তবে সবচেয়ে দামি সাইনিং? আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্কো মাস্তাতুয়োনো, যাঁকে দলে পেতে রিয়াল খরচ করেছে ৬ কোটি ৩০ লাখ ইউরো।
পাশাপাশি সেন্টার ব্যাক দেয়ান হুইসেনের জন্য ক্লাবটির খরচ ৫ কোটি ৮০ লাখ ইউরো। আর ইংলিশ তারকা আলেক্সান্দার আরনল্ড লিভারপুল থেকে ফ্রি ট্রান্সফারে এলেও তাঁকে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলাতে ৭০ লাখ ইউরো খরচ করতে হয়েছে রিয়ালকে।
পেছনের মৌসুমগুলোয় এমন খরচের নজির খুব বেশি নেই। ২০২৩–২৪ মৌসুমেই কেবল একবার ১০ কোটি ইউরোর গণ্ডি পার করেছিল রিয়াল। ওই মৌসুমে জুড বেলিংহামকে কিনতেই লেগেছিল ১০ কোটি ৩০ লাখ ইউরো। এ ছাড়া অন্য মৌসুমগুলোর মধ্যে ২০২৪–২৫ মৌসুমে ৪ কোটি ৯০ লাখ ইউরো, ২০২২–২৩ মৌসুমে 8 কোটি ইউরো, ২০২১–২২ মৌসুমে ৩ কোটি ১০ লাখ ইউরো এবং ২০২০–২১ মৌসুমে কোনো খরচই করেনি রিয়াল।
সে সময়ে রিয়ালের খরচ শূন্য হয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ ছিল করোনা মহামারি। পাশাপাশি এক মৌসুম আগে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করে স্কোয়াড পুনর্গঠনের বিষয়টিও এখানে ভূমিকা রেখেছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো–পরবর্তী যুগে ২০১৯–২০ মৌসুমেই রিয়াল খরচ করেছিল ৩৬ কোটি ১৩ লাখ ইউরো।