আনচেলত্তির ব্রাজিল দলে খেলতে পজিশন বদলাতে হবে নেইমারকে
২০২৩ সালের অক্টোবরে ব্রাজিল দলের হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন নেইমার। উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সেই ম্যাচে বাঁ হাঁটুর এসিএল ও মেনিসকাসে গুরুতর চোট পান তিনি। সেই চোট তাঁকে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ঠেলে দেয়। এরপর একাধিকবার ব্রাজিল দলে ফেরার সম্ভাবনা জাগলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে নামা হয়নি। কার্লো আনচেলোত্তি ব্রাজিল দলের কোচ হওয়ার পরও তাঁকে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে ডাকেননি।
এই অবস্থায় নেইমারের বিশ্বকাপ ফেরা নিয়ে এখন নানা প্রশ্ন ঘুরছে—তিনি কি ফিরতে পারবেন? ফিরলেও কি আগের মতো ফিট থাকবেন? আর আনচেলোত্তি কি তাঁকে জায়গা দিতে দলের গঠন বদলাবেন? প্রশ্নগুলো যতটা সহজ মনে হয়, উত্তরগুলো ততটাই কঠিন।
নেইমার ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা (৭৯ গোল)। নিজের প্রজন্মে তিনি নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা। ফিট থাকলে একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। অনেকে অবশ্য মনে করেন, চোটই তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ, যে কারণে প্রতিভার পুরো বিকাশটা ঘটেনি। তবু সুস্থ নেইমারকে পেতে চায় যেকোনো দল, যেকোনো কোচ। তবে যখন প্রতিযোগিতা বিশ্বকাপের, আনচেলোত্তির ভাবনায়ও জায়গা পায় অনেক হিসাব-নিকাশ।
নেইমার অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আগামী বছরের বিশ্বকাপে খেলতে চান। সতীর্থদের সঙ্গে আবার মাঠে নামার ইচ্ছাও প্রবল তাঁর। তবে আনচেলোত্তি প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, নেইমারের ফিটনেস তাঁকে ভাবায়।
নভেম্বরে সেনেগাল ও তিউনিসিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের দলেও জায়গা হয়নি তাঁর। কোচের যুক্তি—নেইমার এখনো ম্যাচ খেলার মতো ফিট নন। কিন্তু ফিট হয়েও দলে ফিরলে তাঁর আগের মতো স্বাধীনতা হয়তো আর পাবেন না।
আনচেলোত্তি ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, নেইমারকে তিনি দলে চান, তবে নতুন ভূমিকায়। তাঁর মতে, এখন উইংয়ের বদলে মাঝমাঠে খেললেই নেইমারের জন্য সুবিধা হবে। তাতে গোল করার সুযোগ বাড়বে, আবার শারীরিক চাপও কমবে।
আনচেলোত্তি বলেছেন, ‘সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন শুনেছি নেইমারকে নিয়েই। এটা স্বাভাবিক, কারণ নেইমার ব্রাজিল ফুটবলের এক কিংবদন্তি। সবাই চায়, সে যেন পুরো ফিটনেস ফিরে পাক—বোর্ড, কোচিং স্টাফ, আমরা সবাই। তবে আজকের ফুটবলে শুধু প্রতিভা যথেষ্ট নয়। এখন শারীরিক সক্ষমতা, গতি, তীব্রতা সবকিছুরই দাবি আছে। আমি বিশ্বাস করি, নেইমার আবারও তার সেরা ফর্মে ফিরবে।’
নেইমারের নতুন ভূমিকা নিয়ে আনচেলোত্তির ভাবনাটা আরও স্পষ্ট, ‘আমার মনে হয়, এখন ওর খেলা উচিত ডান-বাঁ প্রান্তে নয়, বরং কেন্দ্রে। কারণ, আধুনিক ফুটবলে উইঙ্গারদের শুধু আক্রমণ নয়, রক্ষণেও সাহায্য করতে হয়। মাঝখানে খেললে সেই চাপটা অনেক কমে যায়। আর গোলপোস্টের কাছাকাছি থাকলে প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের সামনে গোল করার সুযোগও বেড়ে যায়। তাই ‘‘ফলস নাইন’’ হতে পারে নেইমারের জন্য আদর্শ পজিশন।’