ইসরায়েলি ফুটবলারকে দেশে ফেরত পাঠাল তুরস্কের ক্লাব
ইসরায়েলের ক্লাব ম্যাকাবি নেতানিয়া থেকে গত বছরের জানুয়ারিতে এদেন কারজেভকে উড়িয়ে এনেছিল তুরস্কের প্রথম বিভাগের দল বাশাকশেহির। কিন্তু আজ এই মিডফিল্ডারকে ধারে ইসরায়েলি ক্লাব ম্যাকাবি তেল আবিবে পাঠিয়েছে তুর্কি ক্লাবটি। কারণ? গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে ফিলিস্তিনের গেরিলা সংগঠন হামাস অনেককেই বন্দী করেছে; তাঁদের মুক্তি দেওয়ার দাবিটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুনরায় পোস্ট করেছিলেন কারজেভ। এ নিয়ে তদন্ত শুরুর পর তাঁকে ধারে ইসরায়েলি ক্লাবে পাঠিয়ে দেয় বাশাকশেহির।
‘তাদের এখনই ঘরে ফিরিয়ে আনো’—এই বার্তা দেওয়ার পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে কারজেভের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভাঙার তদন্ত শুরু করে বাশাকশেহির। একই দিনে তুর্কি সুপার লিগ ম্যাচে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের বার্তা প্রদর্শন করায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ইসরায়েলের আরেক ফুটবলার সাগিব জেহেসকেল। পরে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। তবে গত সোমবার ইস্তাম্বুলের আদালতে জেহেসকেলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের পর তিনি তুরস্ক ছেড়ে যান।
বাশাকশেহির বিবৃতিতে বলেছে, ‘ক্লাবের শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী খেলোয়াড়কে জরিমানা করা হয়েছে এবং বিদেশে খেলাধুলার ক্যারিয়ার চালিয়ে যাওয়াই তার জন্য সঠিক বলে মনে হয়েছে।’ ইসরায়েলের হয়ে ৫ ম্যাচ খেলা এ ফুটবলারকে ধারে নেওয়ার বিষয়ে ম্যাকাবি তেল আবিব জানিয়েছে, মৌসুমের বাকি সময়ের জন্য তিনি দলে যোগ দেবেন। ক্লাবটির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০২৩–২৪ মৌসুমে বাকি সময়ের জন্য তুর্কি দল বাশাকশেহিরের সঙ্গে চুক্তির পর ২৩ বছর বয়সী এদেন কারসেভ ধারে ফিরবেন ম্যাকাবি তেল আবিবে। এই দলবদল স্থায়ী করার সুযোগও আছে (চুক্তিতে)।’
বাশাকশেহিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের। ক্লাবটির বর্তমান সভাপতি গোকসেল গুমুসদাগ বৈবাহিক সূত্রে এরদোয়ানের আত্মীয়। ক্লাবের অনুশীলন কেন্দ্রে লবিতে এরদোয়ানের ছবিও আছে। আর এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) কমলা ও নীল রংকে নিজেদের জার্সিতে ব্যবহার করেছে বাশাকশেহির। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ১৯৯৪ থেকে ২০০০ পর্যন্ত এরদোয়ান নিজেই বাশাকশেহিরের সভাপতি পদ সামলেছেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে ১ হাজার ১৪০ জনকে হত্যা করে এবং প্রায় ২৫০ জনকে বন্দী করে নিয়ে যায় হামাস। এর মধ্যে ১৩২ জনকে গাজায় রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। এর জবাবে ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার প্রতিজ্ঞা করে এবং গাজায় নিয়মিত সামরিক হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত ২৩ হাজার ৯৬৮ জনকে হত্যা করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিদের মধ্যে অন্যতম প্রতিবাদী কণ্ঠ এরদোয়ান।