শুধু জুডকেই নয়, গোল করে ল্যাম্পার্ডকেও মনে করিয়ে দিলেন জোব বেলিংহাম

গোলের উদ্‌যাপনেও ভাইকে মনে করিয়ে দিলেন জোব বেলিংহামএএফপি

জুড বেলিংহামের ছোট ভাই। বড় ভাইয়ের সঙ্গে জোব বেলিংহামের তুলনা হবে, সেটি জানাই ছিল। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে প্রথমবার একাদশে সুযোগ পেয়েই জোব প্রমাণ করে দিলেন—তুলনা ফেলে দেওয়ার নয়, টেনে নেওয়ার মতোই।

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ডর্টমুন্ডের হয়ে প্রথমবার শুরুর একাদশে নেমেই গোল করলেন ১৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকান ক্লাব মামেলোদি সানডাউনস। কাল রাতে সেই ম্যাচেই বড় ভাই জুডকে মনে করিয়ে দিলেন ছোট ভাই জোব।

ঠিক চার বছর নয় মাস আর এক সপ্তাহ আগে জার্মান কাপের ম্যাচে প্রথমবার ডর্টমুন্ডের শুরুর একাদশে নেমে গোল করেছিলেন জুড। প্রতিপক্ষ ছিল ডুইসবুর্গ, স্কোরলাইন ছিল ৫-০। এবার সেই পথেই হাঁটলেন জোব। পার্থক্য একটাই, গোল পেতে জুডের চেয়ে ১৫ মিনিট বেশি সময় নিয়েছেন ছোট ভাই।

রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার আগে জুড ডর্টমুন্ডের হয়ে খেলেছেন ১৩২ ম্যাচ, করেছেন ২৪টি গোল। জোব একেবারে শুরুতেই জানিয়ে দিলেন, তিনিও জানেন বক্সে কখন ঢুকলে গোলের সুবাস পাওয়া যায়।

গোলের পর জোব বেলিংহামকে সতীর্থদের অভিনন্দন
এএফপি

গোলটা ছিল নিখুঁত পরিকল্পনার ফসল। সময়মতো দৌড়ে ঢুকেছেন বক্সে, শরীর দিয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে ঠেলে বল নিয়েছেন নিজের আয়ত্তে, এরপর শট নিয়েছেন। যদিও ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বলের দিক সামান্য পাল্টে গেছে, তবু ফিনিশটা ছিল দুর্দান্ত।

১১ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলটি করে সানডাউনস। তবে জোবের গোলে ৩-১ ব্যবধানে প্রথমার্ধ শেষ করে ডর্টমুন্ড। ৫৯ মিনিটে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-১। শেষ পর্যন্ত ৪-৩ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে জার্মান ক্লাবটি।

আরও পড়ুন

অভিষেকে এমন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই খুশি জোব। ম্যাচ শেষে ডিএজেডএনকে বলেন, ‘(গোলটা) দারুণ একটা বোনাস ছিল। অবশ্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা জিতেছি। তবে এখনো আমার এবং দলের অনেক কিছু শেখার ও উন্নতি করার আছে। তবু আমি এই পারফরম্যান্সে খুশি।’

মামেলোদি সানডাউনসের বিপক্ষেই প্রথমবার ডর্টমুন্ডের শুরুর একাদশে ছিলেন জোব বেলিংহাম
এএফপি

যেভাবে গোলটা করেছেন, সেটিকে অনুশীলনের ফলই বললেন এই ইংলিশ তারকা, ‘এই গোলটা করে আমি আনন্দিত। কারণ, এটা ছোটবেলা থেকে আমি অনুশীলন করে এসেছি। ঠিক এমনভাবে ফিনিশ করা নয়, তবে মিডফিল্ডার হিসেবে বক্সের ধারে গিয়ে দেরিতে পৌঁছানো—এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেবেলা থেকেই এটা অনুশীলন করেছি, সান্ডারল্যান্ডে থাকার সময়ও। তাই এই গোলটা নিয়ে আমি সত্যিই গর্বিত।’

এমন খেলায় বড় ভাইয়ের সঙ্গে তুলনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এটাই প্রথম নয়, ভবিষ্যতেও এই তুলনা চলবে। তবে শুধু জুড নয়, জোবের খেলা মনে করিয়ে দিচ্ছে আরেক কিংবদন্তিকেও।

আরও পড়ুন
সে আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে একজন বিশেষ খেলোয়াড়কে—ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড। প্রতি মৌসুমে ২০টা করে গোল করতেন। কারণ, তিনি সব সময় সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকতেন। জোবও ঠিক সেই রকম।
জন ওবি মিকেল, সাবেক ফুটবলার

চেলসির সাবেক মিডফিল্ডার জন ওবি মিকেল বলেন, ‘সে আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে একজন বিশেষ খেলোয়াড়কে—ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড। প্রতি মৌসুমে ২০টা করে গোল করতেন। কারণ, তিনি সব সময় সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকতেন। জোবও ঠিক সেই রকম। ওর খেলা খুব সরাসরি—বল পেলেই সামনে তাকায়, সামনে দৌড়ায়। বক্সে ঢোকে ঠিক সময়ে। আমি নিশ্চিত, ডর্টমুন্ডের হয়ে অনেক গোল করবে সে।’

দুই ভাই জুড বেলিংহাম ও জোব বেলিংহাম
ইনস্টাগ্রাম

জোবের প্রশংসায় মেতেছেন সাবেক ইতালিয়ান তারকা ও ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ান ভিয়েরিও, ‘ও অনেক গোল করবে। কারণ, ও সব সময় গোলমুখে এগিয়ে যায়। মাঠে ওর চলাফেরা একেবারে জুডের মতো, একদম মিল আছে।’

দুই ভাই মাঠে মুখোমুখি হতে পারেন ক্লাব বিশ্বকাপেই। যদি বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ও রিয়াল মাদ্রিদ উভয়ই নিজেদের গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয় ও শেষ ষোলোতে জিতে যায়, তাহলে কোয়ার্টার ফাইনালেই মুখোমুখি হবেন দুই ভাই—জুড ও জোব বেলিংহাম!

আরও পড়ুন