ঈশ্বরের সঙ্গে যুবরাজের চুক্তি, ‘বিশ্বকাপটা দাও, বিনিময়ে যা খুশি নাও’
যুবরাজ সিং। ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। টি-টোয়েন্টিতে এক ওভারে ছয় ছক্কা মারা প্রথম ব্যাটসম্যান। দুর্দান্ত অলরাউন্ডার এবং লড়াকু এক চরিত্র। শুধু ক্রিকেট মাঠে নয়, যুবরাজ জয়ী হয়েছেন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেও। সেই লড়াই আর জয়ী হওয়ার গল্প আছে যুবরাজের আত্মজীবনী দ্য টেস্ট অব মাই লাইফ: ফ্রম ক্রিকেট টু ক্যানসার অ্যান্ড ব্যাক বইয়ে।
কী লিখেছেন যুবরাজ
২০১১ সাল। স্বপ্নের এক বছর ছিল আমার জন্য। ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আমার তৃতীয় বিশ্বকাপ ছিল সেটা। আর কী ভাগ্য, আমরা সেই বিশ্বকাপ জিতে গেলাম! সে এক অসাধারণ অনুভূতি। টুর্নামেন্টটা হয়েছিল উপমহাদেশেই, ফাইনাল আমাদের ঘরের মাঠে। দেশের লাখ লাখ দর্শকের সামনে বিশ্বকাপ জেতা, এর চেয়ে ভালো চিত্রনাট্য আর কী হতে পারে!
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অবশ্য আমাকে নিয়ে অনেকে অনেক বাঁকা কথা বলছিল। আমার ওজন নিয়ে, দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে, এমনকি চোট থেকে সেরে ওঠার পর আমার ‘খারাপ ফর্ম’ নিয়েও। কিন্তু এসব আমাকে দমাতে পারেনি।
টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছিল, আমাদের দলটা তত অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছিল। একটা হার আর একটা ড্র ছাড়া বাকি সব ম্যাচই আমরা জিতেছিলাম। যদি দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে না হারতাম, তাহলে অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলতাম।
সাত সপ্তাহের ওই টুর্নামেন্টটা ছিল প্রচণ্ড গরমের মধ্যে, ওই সময়েই আমার শরীরেও কিছু লক্ষণ স্পষ্ট হতে শুরু করল। ঘুম আসত না রাতে, আর কেমন যেন বমি বমি লাগত সব সময়। সে সময় বুঝিনি, কিন্তু এর কয়েক মাস পর আমার জীবনে এল এক নতুন ‘C’— ক্রিকেট নয়, ক্যানসার! আর এই নতুন ‘C’ এর সঙ্গে লড়াই করতে একসময় আমি চলে গেলাম বরফ-ঠান্ডা ইন্ডিয়ানাপলিসে।
২৪ জানুয়ারি ২০১২।
আমার মা, ডাক্তার নিতেশ আর আমি একটা ছোট্ট, ছিমছাম চেম্বারে। দেয়ালে টাঙানো ফুলের ছবি, আর সামনে ডাক্তার আইনহর্ন। তিনি আমাকে পরীক্ষা করলেন, তারপর অনেক কিছু বোঝালেন। বললেন, পরের দিন থেকেই কেমোথেরাপি শুরু হবে। আমাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। কেমোথেরাপি শেষ হলে আবার বাড়ি ফিরতে পারব।
আমরা ঠিক করেছিলাম, নিতেশ প্রথম দিনের কেমো শেষ করেই ভারতে ফিরে যাবে। কারণ, তার অনেক কাজ আর রোগী অপেক্ষা করছিল। আর আমি? আমি নিজেকে প্রস্তুত করলাম ইন্ডিয়ানাপলিসে কেমোথেরাপি চক্রের জন্য। ছুটির দিনগুলো বাদ দিলে মোট ৫৭ দিনের লড়াই! নিজের মনকে বোঝালাম, ‘ঠিক আছে, ৫৭ দিন! আমি পারব।’
হাসপাতাল থেকে ফিরে আরেকটা সমস্যা দেখা দিল! যত দিন বুকিং করা আছে, হোটেল আপনাকে তত দিনই থাকতে দেবে। আমার সমস্যাটা এমন আকস্মিকভাবে ধরা পড়েছিল যে শেষ মুহূর্তে আমরা রুম বুক করেছিলাম। আগের দিন আমি ট্রেনিং করছিলাম, পরের দিনই আমি রোগী! সবকিছুই এমন হঠাৎ করে ঘটেছিল যে আমরা মাত্র পাঁচ দিনের জন্য রুম বুক করতে পারলাম।
ইন্ডিয়ানাপলিসে তখন সুপার বোল (আমেরিকান ফুটবলের ফাইনাল) শুরু হতে যাচ্ছিল। ৫ ফেব্রুয়ারি ফাইনাল। নিউইয়র্ক জায়ান্টস আর নিউ ইংল্যান্ড প্যাট্রিয়টস-এর খেলা দেখতে আসা উন্মত্ত ভক্তদের ভিড়ে ইন্ডিয়ানাপলিসের প্রতিটি হোটেল রুম, রেস্টুরেন্ট, পাব আর বার সব ভর্তি! আমার হোটেলের জানালা দিয়ে স্টেডিয়ামের আলো দেখা যায়। শহরের সবখানে ব্যানার! হোটেলের লবি আর করিডরে খেলা নিয়ে মানুষের আড্ডা। ভারতে আইপিএল বা কোনো হোম সিরিজের সময় যে রকম উত্তেজনা থাকে, এখানেও ঠিক তেমনই। অথচ এই চেনা পরিবেশে আমি একজন খেলোয়াড় নই, ক্যানসার রোগী! মনে হলো, জীবন আমার সঙ্গে একটা মজা করছে!
ভারত থেকে আমার ম্যানেজার পাগলের মতো অনলাইনে আমার থাকার জায়গা খুঁজতে শুরু করল। শেষ পর্যন্ত ক্যানালের পাশে ‘কসমোপলিটন’ নামের একটা বিল্ডিংয়ে সে একটা বাসা খুঁজে পেল। আমরা তা দেখতে গেলাম। হাসপাতাল থেকে এক মাইল আর শহরের কেন্দ্র থেকে দেড় মাইল দূরে। বাড়িটা ছিল হালকা কমলা হালকা গোলাপি রঙের, কাছেই একটা ছোট্ট সবুজ সেতু। নামের মতোই, ‘কসমোপলিটান অন দ্য ক্যানাল’ ছিল ইন্ডিয়ানাপলিসের সুন্দর স্বচ্ছ লেকের পাশে। অ্যাপার্টমেন্টটা ছিল দোতলা, নিচতলায় ডুপ্লেক্স। মা আর আমি একঝলক দেখেই ‘হ্যাঁ’ বলে দিলাম। আমি আমার রুমটা বেছে নিলাম—দোতলার শোবার ঘর, যেখান থেকে লেক দেখা যেত।
এই দুই কামরার ফ্ল্যাটেই আমার কয়েকটা মাস কেটেছে। কখনো হতাশ হয়েছি, কখনো লড়াই করেছি, কখনো ফিরে আসার ছক কষেছি, হেসেছি, বমি করেছি, কেঁদেছি, মাথা কামিয়েছি। আর মিস করেছি ক্রিকেট, আমার বন্ধুদের, আর আমার দেশকে।
আমরা যেন সহজে শিফট হতে পারি, সে জন্য আমার এক বন্ধু, রিতেশ মালিক, কানাডা থেকে চলে এল। ও সবে ভারত থেকে কানাডা ফিরেছিল, সেই জেট লেগ সামলেই ৯ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে এল আমার কাছে। দুই হাত ভর্তি করে বাজার নিয়ে এল। আমাদের জিনিসপত্র সরাতে সাহায্য করল। আমার অসুস্থতার সময় আমি এমন অনেক সাহায্য পেয়েছি বন্ধুদের কাছ থেকে।
কসমোপলিটান অন দ্য ক্যানালের সেই অ্যাপার্টমেন্টে প্রথম রাতে, আমি বিছানায় ক্লান্ত হয়ে শুয়েছিলাম, রিতেশ আমাকে নতুন একটা প্লে-স্টেশন এনে দিল। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মা কি ঘুমিয়ে গেছে?’
সে বলল, ‘হ্যাঁ।’
সেই রাতে আমি রিতেশকে এমন একটা কথা বললাম, যা আগে কাউকে বলার সাহস পাইনি। ১ এপ্রিল ২০১১, ‘এপ্রিল ফুলস ডে’ আর বিশ্বকাপের ফাইনালের আগের রাতের ঘটনা। ফাইনালের আগের ওই রাতে আমি একটু বোকার মতো একটা কাজ করেছিলাম।
বিশ্বকাপ জিততে আমরা মরিয়া ছিলাম, আমি মরিয়া ছিলাম। ব্যর্থ হওয়ার ভয়টা ছিল অনেক বেশি। সারা দিন নেটে অনুশীলন করেছিলাম, তারপর সাধারণ রুটিন মেনে বিশ্রাম নিয়েছি এবং পুলে গিয়েছি। সন্ধ্যায় আমার মুম্বাইয়ের বন্ধুদের জন্য ফাইনালের টিকিট জোগাড় করার চেষ্টা করছিলাম, কারণ ফাইনালের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। ভারতে বড় ক্রিকেট ম্যাচের টিকিট জোগাড় করা খুবই কঠিন, এমনকি জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের জন্যও। সেদিন সন্ধ্যায় আমি টিকিটের জন্য তিন লাখ টাকা খরচ করেছিলাম।
আমার মাকে স্টেডিয়ামে এসে খেলা দেখতে রাজি করানোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তিনি খুব জেদি। রাজি হননি। আমার চেয়েও তিনি বেশি নার্ভাস থাকেন, তাই কখনোই গুরুত্বপূর্ণ কোনো ম্যাচ দেখেন না। এমনকি টিভিতেও না।
তো মা আমাকে বললেন, ফাইনালের দিনে তিনি চণ্ডীগড়ে বাড়িতেই থাকবেন। অথবা নিজের গাড়িতে শহর ঘুরবেন আর ফোনে ম্যাচের আপডেট দেখবেন। অথবা হয়তো সে হানসালি বা দুফেদা সাহিবে গিয়ে তার বাবাজিদের সঙ্গে ফাইনালের সময়টা প্রার্থনা করে কাটাবেন।
তো যা–ই হোক, শেষ পর্যন্ত বন্ধুদের জন্য টিকিট জোগাড় হলো। ক্লান্ত, চিন্তিত হয়ে আমি বিশ্রাম নিতে গেলাম। সেই তন্দ্রাচ্ছন্ন মুহূর্তে আমি মনে মনে বলতে থাকলাম, ‘কাল যা–ই ঘটুক না কেন, আমি শুধু ঈশ্বরের কাছে চাই, যেন তিনি আমাদের বিশ্বকাপটা দেন।’ আমি তখন ঘুমের ওষুধ খাচ্ছিলাম। নীতিন (নীতিন প্যাটেল, ভারত দলের তখনকার ফিজিও) আমাকে দেখতে এসেছিল। আমি নীতিনকে বললাম, ‘জানো, তিনি (ঈশ্বর) যা চান তা নিতে পারেন, আমার জীবনও নিয়ে নিতে পারেন, আমাকে কষ্ট দিতে পারেন...তবু আমি চাই, হে ঈশ্বর, শুধু আমাদের বিশ্বকাপটা দাও।’
নীতিন এক সেকেন্ডের জন্য স্থির হয়ে গেল। সে হয়তো ভেবেছিল আমি আবোলতাবোল বকছি। সেই রাতে, আমি সাড়ে দশটায় ঘুমিয়ে গেলাম। অনেক দিন পর গভীর এবং একটানা ঘুম হলো আমার। পরের দিন যখন ঘুম থেকে উঠলাম, ঘড়ি দেখে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। টুর্নামেন্টের মধ্যে এই প্রথম আমি সারা রাত ঘুমিয়েছি! তাজ হোটেলের আমার কোনার ঘরের পর্দাগুলো সরিয়ে মুম্বাইয়ের ঝলমলে সকাল দেখলাম। বিশ্বকাপ ফাইনাল আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
১২ ঘণ্টা পর, আমরা সত্যি সত্যি বিশ্বকাপ জিতে গেলাম। ২৮ বছরের প্রার্থনা আর অপেক্ষার পর অবশেষে বিশ্বকাপ আমাদের হলো। সেই রাতে পুরো দেশ আনন্দে ফেটে পড়ল। সর্বশেষবার ভারত যখন বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখন আমার বয়স ছিল এক বছর। আর এখন, আমি ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট!
অনেক মাস পর এবং হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে বসে, যখন আমি রিতেশকে এই গল্পটা বলছিলাম, মনে হচ্ছিল, যেন একটা জীবন পার হয়ে গেছে। আমি এটাকে ঈশ্বরের সঙ্গে আমার চুক্তি হিসেবে ভাবতে শুরু করেছিলাম। আমি রিতেশকে বলেছিলাম, এটা একটা পরিষ্কার চুক্তি ছিল। তিনি আমার যা খুশি নিয়ে নেবেন, কিন্তু আমাকে বিশ্বকাপ দেবেন।
আমার কোনো দুঃখবোধ হচ্ছিল না। কেন হবে? যখন আমার ফর্ম ফিরে আসত বা যখন আমি উইকেট পেতাম বা যখন আমি বড় স্কোর করতাম বা যখন আমি ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতাম বা ছক্কা মারতাম, তখন কি আমি কখনো ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘কেন আমি?’
অবশ্যই না। আমার ক্যারিয়ারে আমি বেশ সফল মানুষ ছিলাম। আমি কি কখনো ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করেছি, ‘কেন আমি?’ না, কখনো না। তাহলে যখন অসুস্থ হলাম, তখন কেন জিজ্ঞেস করব, ‘কেন আমি?’ জিজ্ঞেস করার কোনো অধিকার আমার ছিল না।
আমি কি ক্যানসার চেয়েছিলাম? সেদিন রাতে, যখন আমি ঈশ্বরের সঙ্গে একটা চুক্তি করার জন্য অনুরোধ করছিলাম, তখন কি নিজের ভাগ্যের সঙ্গে খেলা করেছিলাম?
চিকিৎসা শেষে ভারতে ফিরে আসার পর, আমি দিল্লিতে ইন্ডিয়ান ক্যানসার সোসাইটির অনারারি সেক্রেটারি জ্যোৎস্না গোভিলের সঙ্গে দেখা করি। তিনি বললেন, ‘যুভি, তুমি যেভাবে প্রকাশ্যে তোমার যুদ্ধটা লড়েছ, সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে তুমি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ফিরে আসা মানুষদের দূত হয়ে গেছ। এই দেশে যেখানে ৫০ লাখ ক্যানসার রোগী আছে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে কোনো সেলিব্রেটির কখনো ক্যানসার হয়নি। আমার মনে শেষ যে মানুষটার কথা আসে, তিনি হলেন নার্গিস দত্ত। এরপর আর কেউ তোমার মতো এমন প্রকাশ্যে লড়াই করেনি।’
আসলেই কি আমি কি নার্গিস দত্তের পর ভারতের প্রথম তারকা, যার ক্যানসার হয়েছে? আমার মনে হয় না। তবে সম্ভবত আমিই ভারতের প্রথম সুপরিচিত মানুষ, যে এটা নিয়ে বাঁচতে, এটা মেনে নিতে, এর কারণে টাকমাথা হয়ে যেতে এবং এর সঙ্গে যুদ্ধ করতে ভয় পায়নি।
বিশ্বাস করুন, এর কোনো কিছুই সহজ নয়। ফেরার কিছুদিন পর, আমি মুম্বাইতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম। আমার জন্য আয়োজিত একটা ওয়েলকাম পার্টিতে আমরা হাসাহাসি করছিলাম, মজা করছিলাম। এক বন্ধু আমাকে বলল, ‘আশা করি ২০১২ সালের বাকিটা ভালো কাটবে।’ ২০১২? আমি ভাবলাম, সে আমার সঙ্গে মজা করছে। অন্যরা ভাবল, আমিই তাকে নিয়ে মজা করছি, তাই তারাও তাকে খ্যাপাতে শুরু করল। সবাই চিৎকার করে হাসতে লাগল, ‘এটা তো ২০১১ সাল!’ আমি বিভ্রান্ত হলাম। এটা কি সত্যিই ২০১১ সাল নয়? ২ এপ্রিল, যেদিন আমরা বিশ্বকাপ জিতলাম, ওটা কয়েক মাস আগে ছিল না?
বুঝলাম, আমার অনেক স্মৃতি মুছে গেছে। এক বছরের বেশি সময় কেটে গেছে। জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিনটা হারিয়ে ফেলা কী যে ভয়ংকর অনুভূতি।
কয়েক বছর আগে আমি ল্যান্স আর্মস্ট্রং-এর ইটস নট অ্যাবাউট দ্য বাইক পড়তে শুরু করেছিলাম, কিন্তু শেষ করিনি। হয়তো, যেমনটা লোকে বলে, এটাও ভাগ্য নির্ধারিত ছিল। নিয়তিই ঠিক করে রেখেছিল, আমাকে ল্যান্সের কাছে ফিরে এসে তার বইটা অন্য সময়ে শেষ করতে হবে।
আমি আমার কেমোথেরাপির সময় ওর বইটা পুরোটা পড়েছি, ওটাকে একজন বন্ধু, একজন গাইড, একজন সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করেছি। ওর বইটা আমাকে নিজের গল্প বলতেও উৎসাহিত করেছে। আমরা যেমন আমাদের জয় আর আনন্দ ভাগ করে নিই, তেমনি আমাদের দুঃখও ভাগ করে নেওয়া দরকার। যাতে অন্য কেউ অনুভব করতে পারে যে সে একা নয়। ল্যান্স আর্মস্ট্রংয়ের ক্যানসারের গল্প আমাকে যেভাবে সাহায্য করেছিল, সেভাবে আমার গল্পও যদি অন্য কাউকে সাহায্য করে, আমি খুব খুশি হব।
আমার মনে হবে, আমার জীবনের যে বছরটা হারিয়ে গেছে, সেটা নষ্ট হয়নি।