মেসিরও তাহলে ক্লান্ত লাগে

লিওনেল মেসি। ইকুয়েডরের বিপক্ষে জয়ের পরছবি: এএফপি

বুয়েনস এইরেসের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের তখন ৮৮ মিনিট। দর্শকদের কাছে দৃশ্যটা প্রায় অপরিচিতই। লিওনেল মেসিকে মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে! আনহেল দি মারিয়ার বাহুতে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরিয়ে দিয়ের মেসি যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন দর্শকেরা। তবু প্রশ্নটা থেকেই যায়, মেসিকে কেন তুলে নেওয়া হলো? তবে কি চোট!

আরও পড়ুন

ইকুয়েডরের বিপক্ষে আজ ১-০ গোলের জয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব অভিযান শুরু করেছে আর্জেন্টিনা। ৭৮ মিনিটে ফ্রি–কিক থেকে মেসির গোলে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট তুলে নিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচ শেষে মেসি নিজেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁকে তুলে নেওয়ার কারণ, ‘একটু ক্লান্ত ছিলাম। তবে সম্ভবত ম্যাচ থেকে উঠে আসার এটাই শেষ ঘটনা হবে না। এমনিতে ভালোই অনুভব করেছি। ম্যাচটা কঠিন ছিল। শারীরিকভাবেও লড়তে হয়েছে।’

আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’ জানিয়েছে, জাতীয় দলের হয়ে অফিশিয়াল ম্যাচে আজকের আগে মেসিকে শেষ বদলি করা হয়েছিল ৯ বছর আগে। ২০১৪ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে। পোর্তো অ্যালেগ্রেতে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ৩-২ গোলে জয় পাওয়া সে ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন মেসি। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ১৭ মিনিট আগে তাঁকে তুলে রিকার্দো আলভারেজকে মাঠে নামিয়েছিলেন কোচ আলেহান্দ্রো সাবেয়া। আর আজ ইকুয়েডরের বিপক্ষে মেসির বদলি হয়ে নেমেছেন এজেকুয়েল প্যালাসিওস।

গত ডিসেম্বরে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই ফুরফুরে মেজাজে আছেন আর্জেন্টিনা দলের খেলোয়াড়েরা। প্রায় ৯ মাস আগের সেই মহাকাব্যিক বিজয়গাথা এখনো স্মরণ করেন দি মারিয়া-রদ্রিগো দি পলরা। বিশ্বকাপ জেতায় আর্জেন্টিনার এই দলের সামনে আর এমন কোনো কিছু নেই যে য়ের ক্ষুধাটা থাকবে বা বাড়বে—কিছুদিন আগপর্যন্তও অনেকেই এমন ভেবেছিলেন। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের পর ৫ ম্যাচের সব কটি জিতে এবং সেই পথে মোট ১৪ গোল করে আর্জেন্টিনা বুঝিয়ে দিয়েছে যে জয়ের ক্ষুধা তাঁদের এতটুকু কমেনি। মেসিও ম্যাচ শেষে জানান সে কথাই।

আরও পড়ুন

‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’ এ নিয়ে তাঁর উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে, ‘আমরা জানি সামনে এগিয়ে যেতে হলে প্রতি ম্যাচেই শতভাগ উজাড় করে খেলতে হবে। এর আগে প্রীতি ম্যাচগুলোয় আমরা তা দেখিয়েছি এবং আজও সেটাই করে বুঝিয়ে দেওয়া হলো, এই দল যা কিছুই জিতুক না কেন, কখনো আত্মতুষ্টিতে ভুগবে না। আমরা একটু ঢিলেমি করলেই বাকিরা আমাদের পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে।’

মাঠ ছাড়ার আগে দি মারিয়াকে অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী পরিয়ে দেন মেসি
ছবি: এএফপি

দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এ নিয়ে ২৯ গোল হয়ে গেল মেসির। এই মহাদেশের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন ইন্টার মায়ামি তারকা। সুয়ারেজ মেসির বন্ধু, বার্সেলোনায় তাঁর সতীর্থও ছিলেন। বন্ধুর রেকর্ডে ভাগ বসাতে পেরে ভালোই লাগছে মেসির, ‘রেকর্ডটা দুজনের জন্যই আনন্দের। আর একসঙ্গে যেহেতু (রেকর্ডে) আছি, তাই দুজনের জন্যই এটা আনন্দের।’

আরও পড়ুন