গোল করে, গোল করিয়ে সিটিকে শীর্ষে তুললেন শেরকি
নটিংহাম ফরেস্টের মাঠ সিটি গ্রাউন্ডে আজ রাতটা ছিল অন্যরকম। একদিকে ক্লাব কিংবদন্তি জন রবার্টসনের প্রয়াণে বিষাদমাখা আবহ, অন্যদিকে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়াই করার রোমাঞ্চ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রায়ান শেরকির জাদুতে হাসি ফুটেছে পেপ গার্দিওলার সিটির মুখেই। নটিংহামকে ২-১ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে সিটি। এই জয়ে ফরেস্ট কোচ শন ডাইচের বিপক্ষে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকলেন গার্দিওলা।
সিটির শীর্ষস্থানে চলে উঠে আসাটা অবশ্য সাময়িক হতে পারে। রাতেই ব্রাইটনের বিপক্ষে আর্সেনাল জিতলে আবার দুই নম্বরে নেমে যাবে সিটি।
ম্যাচের শুরুটা ছিল আবেগঘন। ফরেস্টের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় রবার্টসনের স্মরণে এক মিনিট করতালিতে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম। হাতের কালো ব্যান্ড আর মনে প্রিয় তারকাকে নিয়ে মাঠে নেমেছিল স্বাগতিকেরা। শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল তারা। ফরেস্ট উইঙ্গার ক্যালাম হাডসন-ওডোইয়ের বাঁকানো ক্রসটা শুধু আলতো ছোঁয়ার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু তাঁর সতীর্থ মর্গান গিবস-হোয়াইট বলের নাগাল পাননি।
প্রথমার্ধের বাকি সময়টা ছিল বেশ নিরুত্তাপ। ফরেস্টের জমাট রক্ষণের সামনে সিটির আক্রমণভাগ বারবার খেই হারিয়েছে। টানা সাত ম্যাচে প্রথমার্ধে গোল করার যে ধারা সিটির ছিল, তা সিটি গ্রাউন্ডে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে। বিরতির আগ পর্যন্ত কোনো দলই গোলমুখে ঠিকঠাক শট নিতে পারেনি।
তবে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। তিন মিনিটের মাথায় ডেডলক ভাঙেন সিটির তিয়ানি রেইন্ডার্স। সাবেক এসি মিলান মিডফিল্ডার শেরকির দারুণ এক পাস ধরে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়ান। অ্যাসিস্ট করার পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল শেরকিরও। কিছু সময় পর নিজের নামটাও স্কোরশিটে তুলে ফেলতে পারতেন তিনি। তবে ফরেস্ট গোলরক্ষক জন ভিক্টরকে ফাঁকি দিতে পারেননি।
পিছিয়ে পড়েও দমে যায়নি ফরেস্ট। পাল্টা আক্রমণে সিটির রক্ষণে কাঁপন ধরিয়ে দেয় তারা। ফলও আসে দ্রুত। ওডোই আর গিবস-হোয়াইটের পাস থেকে বল পান ইগর জেসুস। তাঁর পাস থেকে ওমারি হাচিনসন নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করে গ্যালারিতে উৎসবের ঢেউ তোলেন।
কিন্তু শেরকি হয়তো অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন। ম্যাচের শেষ দিকে যখন ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছিল লড়াই, তখনই জ্বলে ওঠেন ২২ বছর বয়সী এই ফরাসি তরুণ। কর্নার থেকে আসা বল ফিরে পেয়ে নিচু শটে জালে জড়ান তিনি। গিবস-হোয়াইটের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল যখন জালে ঢোকে, গোলরক্ষক ভিক্টর স্রেফ দর্শক হয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি।
সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি সিটির টানা অষ্টম জয়।