মাঠে বাঙালি ভাইয়েরা থাকবেন, তাই জিততে মরিয়া বাংলাদেশও
সব ভুলে সামনে তাকিয়ে আছেন তপু বর্মণ। ৯ অক্টোবর ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে হংকংয়ের সঙ্গে ৭ গোলের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে বাংলাদেশ শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হেরে গেছে। সেই হার দর্শক ও খেলোয়াড়দের মনে প্রবল আক্ষেপ হয়ে আছে।
বাংলাদেশ দলের এখন একটাই চাওয়া, ১৪ অক্টোবর হংকংয়ের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচটি জিতে সেই হারের হতাশা ভোলা। হংকংয়ে ডিফেন্ডার তপু বর্মণও আজ সেই চাওয়ার কথাই বলেছেন, তাঁদের চোখ তিন পয়েন্টে।
ঢাকার ম্যাচে অর্ধেক ফিট ছিলেন তপু। ম্যাচের শেষ দিকে নিরুপায় হয়ে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা তাঁকে নামালেও তপু রক্ষণভাগ পুরোপুরি সংগঠিত করতে পারেননি। ফিরতি ম্যাচে তিনি চান রক্ষণভাগকে সুরক্ষা দিতে। গতকাল মধ্যরাতে জাতীয় দল হংকংয়ে পৌঁছে গতকাল প্রথম অনুশীলন করেছে। হংকং থেকে বাফুফের পাঠানো অডিও বার্তায় তপু বলেন, পেশাদার ফুটবলার হিসেবে ভবিষ্যতের দিকে তাকানোই তাঁদের একমাত্র পথ।
ঢাকায় ম্যাচ শেষ হওয়ার ৩০ সেকেন্ড আগে গোল খেয়ে হেরেছে বাংলাদেশ। ড্রয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হতাশার এক হার। বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দায়টা নিচ্ছেন নিজেদের কাঁধেই, ‘শেষ সময়ে একটু মনোযোগী হওয়া উচিত ছিল। কোন সময় ম্যাচটা ধীর করতে হবে, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল ওই পরিস্থিতিতে।’
ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার ওপরই এখন জোর দিচ্ছেন বাংলাদেশ দলের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার, ‘এখনো আমাদের হাতে সুযোগ আছে। হংকংয়ের সঙ্গে ফিরতি ম্যাচটা সবাই ভালো খেলে জিততে চাই। আমাদের জেতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সেভাবেই মাঠে নেমে ম্যাচ শেষ করতে চাই।’
হংকংয়ের কাছে ফিরতি ম্যাচেও হারলে ২০২৭ এশিয়ান কাপ খেলার সুযোগ আর কাগজে–কলমেও থাকবে না বাংলাদেশ দলের। তপু চান সেই সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে। আর তাতে প্রবাসীদেরও পাশে পাওয়ার আশা তাঁর, ‘আমরা জানি, ১৪ অক্টোবরের ম্যাচের টিকিট এখানে মাত্র দেড়–দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেছে। আপনি দর্শকদের মধ্যে খেলবেন, বাঙালি ভাইয়েরা থাকবেন। দলের জন্য ভালো হবে তা।’
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে প্রায় চার বছর হচ্ছে হাভিয়ের কাবরেরার। ঢাকায় হংকং ম্যাচে তাঁর একাদশ নির্বাচন ও কৌশল নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে ফুটবল মহলে। বাফুফের ভেতরেও কোচ বাদ দেওয়ার দাবি আছে। বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, ১৪ অক্টোবরের ম্যাচ শেষে সবকিছু মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বলা যায়, কাবরেরার চাকরি ঝুলছে সুতোয়। হংকংয়ের বিপক্ষে এই ম্যাচ তাঁর জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে অগ্নিপরীক্ষা।
তবে অডিও বার্তায় সামনে তাকানোর আশার কথা বলেন কোচ কাবরেরাও, জানিয়েছেন জয়ের জন্য তাঁর দল সর্বোচ্চ চেষ্টাই করবে। কাবরেরার কথায় এসেছে ৯ অক্টোবরের ম্যাচ নিয়ে প্রশংসা আর হতাশা দুটোই, ‘ঢাকায় হংকং ম্যাচের প্রথমার্ধটা ছিল আমি বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর সম্ভবত সেরা প্রথমার্ধ। ছেলেরা দারুণ খেলেছে। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে আমরা ভুল করে গোল খেয়েছি। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ১৫ মিনিট আমাদের ভালো যায়নি, এরপর আমরা বদল আনি। এতে কাজ হয়েছে। আমরা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলেছি। শেষ ১৫-২০ মিনিট ভালো গেছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আরেকটি ভুল করে ম্যাচ হেরেছি।’
এই হতাশা কি দূর হবে ফিরতি ম্যাচে?