গোলে পিছিয়ে থাকলেও আতঙ্ক ছড়ানোয় সবার শীর্ষে মেসি
ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে মৌসুমের শুরু থেকেই জ্বলছেন বেশির ভাগ তারকা। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ইউনাইটেডে শুরুর একাদশেই খুব একটা সুযোগ পাচ্ছেন না। ম্যানচেস্টার ডার্বিতে তো তাঁকে মাঠেই নামাননি কোচ এরিক টেন হাগ। এ ছাড়া রিয়াল মাদ্রিদের করিম বেনজেমার মতো কয়েকজন অবশ্য এখনো ছন্দে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।
তবে ফ্রেঞ্চ লিগ ‘আঁ’-তে আলো ছড়াচ্ছে পিএসজির ত্রয়ী লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমার। লা লিগায় রবার্ট লেভানডফস্কি আর ভিনিসিয়ুস জুনিয়ররা নিয়মিত গোল পাচ্ছেন। প্রিমিয়ার লিগে আর্লিং হলান্ড তো অবিশ্বাস্য সব কীর্তি গড়ে চলেছেন।
গোল বিবেচনায় নিলে হলান্ড, নেইমার ও লেভার কথা সবার আগেই বলতে হয়। তিন লিগের গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে আছেন এই তিন তারকা। গোল করায় তাঁদের থেকে একটু পিছিয়ে থাকলেও প্রতিপক্ষের রক্ষণে আতঙ্ক ছড়ানোয় এগিয়ে আছেন মেসিই। সম্প্রতি ফুটবল পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট অপ্টার এক পরিসংখ্যানে এমনটাই উঠে এসেছে।
ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে হলান্ডের গোল সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১১ ম্যাচে ১৭টি, অ্যাসিস্ট ৩টি। বার্সেলোনার হয়ে লেভার গোল ৯ ম্যাচে ১২টি, অ্যাসিস্ট ২টি। নেইমার ১২ ম্যাচে গোল করেছেন ১১টি, অ্যাসিস্ট ৮টি।
মেসি সব মিলিয়ে ১২ ম্যাচে গোল করেছেন ৭টি, অ্যাসিস্ট ৮টি। তবে গোল ও অ্যাসিস্টই ফুটবলে সব নয়। প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ভীতসন্ত্রস্ত করে সতীর্থদের কাজটি সহজ করে দেওয়াও ফুটবলে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এদিক থেকে অন্যদের চেয়ে মেসিই প্রতিপক্ষের রক্ষণে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন বেশি। অপ্টা বলছে, আর্জেন্টাইন তারকা প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ৫.২৫টি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। যেখানে পিছিয়ে পড়েছেন বাকিরা।
হলান্ড-লেভারা খেলেন স্ট্রাইকার হিসেবে। যেখানে প্লে-মেকার হিসেবে খেলা মেসি গোল করার পাশাপাশি গোল বানানোর কাজটিও করছেন। এ দিকই এগিয়ে দিয়েছে মেসিকে। পরিসংখ্যানটি তৈরির ক্ষেত্রে গোল, অ্যাসিস্ট, ফিনিশিং, পাস ও ড্রিবল দ্বারা খেলোয়াড়েরা নিজ নিজ দলের খেলায় কীভাবে সরাসরি প্রভাব রাখছে, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
এ দিকেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলেছেন মেসি। দারুণভাবে মৌসুম শুরু করা হলান্ড গোল করেছেন মেসির দ্বিগুণের বেশি। তবে গোল করার বাইরে ম্যানচেস্টার সিটির খেলায় তাঁর প্রভাব কম, যা এই পরিসংখ্যানকেও প্রভাবিত করেছে। একই কারণে পিছিয়ে পড়েছেন হলান্ড-এমবাপ্পেরাও।
এর আগে ম্যানচেস্টার সিটি কোচ গার্দিওলাও বলেছিলেন, হলান্ড এখনো মেসির পর্যায়ের নন। নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে এই স্প্যানিশ কোচ বলেছেন, ‘পার্থক্য হচ্ছে, এই গোলগুলো করার জন্য হলান্ডের হয়তো তার সব সতীর্থকে প্রয়োজন। এটা অবিশ্বাস্য। তবে মেসি নিজে নিজেই এটা করার সামর্থ্য রাখে।’
গার্দিওলার এমন মন্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তবে এবার পরিসংখ্যানও গার্দিওলাকে সমর্থন করল। মাঠে এখনো প্রতিপক্ষের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম লিওনেল আন্দ্রেস মেসি!