বিশ্বকাপ ফাইনালে সেই অবিশ্বাস্য সেভটি যেভাবে করেছিলেন মার্তিনেজ

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে একাধিকবার আর্জেন্টিনার রক্ষণ দেয়াল হয়ে ওঠেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজএএফফি

কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের সেই সেভ মনে আছে?

বক্সের ভেতর আর্জেন্টিনা গোলকিপারকে সামনাসামনি একা পেয়ে গিয়েছিলেন র‍্যান্ডাল কোলো-মুয়ানি। চলতি বলে ভলি করে শটও নিয়েছিলেন, কিন্তু মার্তিনেজ কোন জাদুবলে বাঁ পা দিয়ে বলটি ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন, তা গবেষণার বিষয়।

সেই সেভের পর থেকেই মার্তিনেজ অন্য রকম পরিচিতি পেয়ে গেছেন। সদ্য শেষ হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবলের কথাই ধরুন। ভারতের বিপক্ষে প্রায় একইভাবে একটি সেভ করার পর গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশের ‘মার্তিনেজ’। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের এমন জনপ্রিয়তা পাওয়ার পেছনে কিন্তু সেই অবিশ্বাস্য সেভ। বিশ্বকাপজুড়েই দারুণ কিছু সেভ করার পরও ফাইনালে মার্তিনেজের ওই সেভটি আলাদা জায়গা করে নিয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে। কীভাবে বলটি ঠেকালেন মার্তিনেজ?

আরও পড়ুন

এই প্রশ্নের উত্তর স্বয়ং মার্তিনেজের কাছ থেকেই জেনে নিলে কেমন হয়!
ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে কথা বলেছেন মার্তিনেজ।

অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষক জানিয়েছেন ফরাসি স্ট্রাইকার কোলো-মুয়ানির সামনে তিনি কীভাবে ফাঁকা জায়গা কাভার করেছেন। মুয়ানির সামনে বলটি পড়ে একটু বাঁক নিয়েছিল। মার্তিনেজ তা খেয়াল করেন।

১২৩ মিনিটে মার্তিনেজের সেই সেভ
রয়টার্স

বাকিটা শুনুন তাঁর মুখেই, ‘বলটা পড়ার পর অদ্ভুতভাবে বাঁক নিয়েছিল। বুঝতে পেরেছিলাম ভলি করতে পারে। তাই আমার বাঁ পাশের ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে ইচ্ছে করেই (মুয়ানির সামনে) আড়াআড়িভাবে পা বাড়িয়ে দিই।’ তারপর কী ঘটেছে সেটি প্রায় সবাই দেখেছেন। মুয়ানির শট মার্তিনেজের বাঁ পায়ে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৩-৩ গোলে সমতায় থাকে ম্যাচ। এরপর টাইব্রেকারে ফাইনাল জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। সেখানেও কম বীরত্ব দেখাননি মার্তিনেজ।

আরও পড়ুন

তবে মুয়ানির সেই শটে করা সেভটি ছিল বিশেষ কিছু। বলা যায়, মার্তিনেজের পক্ষ থেকে আর্জেন্টিনার জন্য ‘উপহার’। সেটি কীভাবে সম্ভব হলো, তার বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন মার্তিনেজ, ‘তাকে (মুয়ানি) আমার বাঁ দিকে মারতে আমিই প্রলুব্ধ করেছি। সে শট নেওয়ামাত্রই আমি বাঁ হাত ও বাঁ পা’টা বাড়িয়ে দিই, যেন ফাঁকা জায়গাটা পূরণ হয়। অবশ্যই এটা নিয়ে অনুশীলন করেছি। আক্রমণে দুর্দান্ত কিছু খেলোয়াড়ের সঙ্গে বছরের পর বছর অনুশীলন করেই নিজেকে এভাবে তৈরি করেছি।’

আরও পড়ুন

মার্তিনেজ জানিয়েছেন, মুয়ানির সেই শট সেভ করার পর টাইব্রেকারে গিয়ে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন, ‘ম্যাচ শেষ হওয়ার পর নিজেই নিজেকে বলেছি, কী দুর্দান্ত ফিনিশ! ড্র করায় খারাপ লাগেনি। মনে হচ্ছিল, অসাধারণ এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। পেনাল্টি শুটআউটে অনেক আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’ টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ফ্রান্সের কিংসলে কোমানের শট টাইব্রেকারে রুখে দিয়েছিলেন মার্তিনেজ।

আরও পড়ুন