সুপার লিগ থেকে ১০০ কোটি ইউরো করে আনুগত্য বোনাস পেতে পারে রিয়াল-বার্সা

সুপার লিগের মূল পরিকল্পনাকারী রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ (ডানে) ও হোয়ান লাপোর্তাটুইটার

ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালত গতকাল এক যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, বিদ্রোহী টুর্নামেন্ট হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সুপার লিগে অংশ নিলে ক্লাব ও খেলোয়াড়কে ফিফা ও উয়েফা নিষিদ্ধের যে নিয়ম তৈরি করেছে, তা বেআইনি। এর মাধ্যমে ফুটবলের বাজারে তাদের প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, আদালতের এ রায়ের মধ্য দিয়ে ফিফা ও উয়েফার একচেটিয়া আধিপত্য শেষ হতে চলেছে। রায়ের পর সুপার লিগের প্রোমোটার প্রতিষ্ঠান এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট ও দুই ‘মূল হোতা’ রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা নিজেদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে।

২০২১ সালে প্রথম সুপার লিগ আয়োজনের চেষ্টা করা হয়েছিল। সেবার ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২২ সালের শেষের দিকে এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানই মূলত সুপার লিগের প্রোমোটার।

কাল আদালতের রায়ের পর এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট ঘোষণা দিয়েছে, ৬৪টি দল নিয়ে তারা নতুন টুর্নামেন্ট আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে। এর আগে ১২ ক্লাব নিয়ে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল তাদের।

শুধু তাই নয়, সুপার লিগ আলোর মুখ দেখলে রিয়াল ও বার্সা ১০০ কোটি ইউরো (প্রায় ১২ হাজার ৮০ কোটি টাকা) করে আনুগত্য বোনাসও পেতে পারে। আর সুপার লিগ থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ও টুর্নামেন্টে অংশ নিতে না চাওয়া ক্লাবগুলোকে গুনতে হতে পারে মোটা অঙ্কের জরিমানা।

আরও পড়ুন

২০২১ সালে লা লিগার রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও আতলেতিকো মাদ্রিদ, প্রিমিয়ার লিগের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল, টটেনহাম, আর্সেনাল ও চেলসি এবং সিরি ‘আ’–এর জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান ও এসি মিলান সুপার লিগ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল।

কিন্তু উয়েফার চাপে আর সমর্থকদের বিরোধিতার মুখে নিজেদের এই প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে নেয় প্রিমিয়ার লিগের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল, টটেনহাম, আর্সেনাল ও চেলসি, সিরি ‘আ’–এর জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান ও এসি মিলান এবং লা লিগার দল আতলেতিকো মাদ্রিদ।

আরও পড়ুন

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম দিয়ারিও স্পোর্ত ও পালকো২৩ জানিয়েছে, সুপার লিগের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবগুলো একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, কোনো কারণে ক্লাবগুলো খেলতে না চাইলে বা প্রকল্প ছেড়ে চলে গেলে ৩০ কোটি ইউরো করে (৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা) জরিমানা দিতে বাধ্য থাকবে। জরিমানার এই অর্থই রিয়াল–বার্সাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালত কাল এক যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন
ফেসবুক

তবে দিয়ারিও স্পোর্ত এও জানিয়েছে, এই অর্থ পাওয়ার দাবিটি কিছুটা অস্পষ্ট। কারণ, এটি সম্ভাব্য ১ হাজার ৫০০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ থেকেও আসতে পারে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত সুপার লিগ না হলে রিয়াল–বার্সা কি সত্যি সত্যিই ১০০ কোটি ইউরো করে পাবে?

টুর্নামেন্টে অংশ নিতে না চাওয়া ক্লাবগুলো যদি জরিমানা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বিষয়টি আদালতে গড়ায়, তাহলে রিয়াল–বার্সার দাবি করা পাওনা বুঝে পেতে অনেক সময় লাগতে পারে। তা ছাড়া আইনি জটিলতা সৃষ্টি হলে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও সরে যেতে পারে।