লেভানডফস্কিকে কেন গোল না করার অনুরোধ করেছিল বার্সেলোনা

বার্সেলোনা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কিবার্সা/এক্স

স্ট্রাইকারদের কাজই হলো গোল করা। তাঁদের পেছনে ক্লাবগুলো কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালে যাতে প্রতিপক্ষের জাল গোলবন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু সেই স্ট্রাইকারকেই যদি নিজের ক্লাব গোল করতে নিষেধ করে দেয়?

শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও বার্সেলোনায় এমন অদ্ভুত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল রবার্ট লেভানডফস্কিকে। খোদ বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষই নাকি লেভাকে লা লিগা মৌসুমের শেষ দিকে গোল না করার অনুরোধ করেছিল।

ঘটনাটা ২০২২-২৩ মৌসুমের শেষ দিকের। বার্সেলোনা তখন ধুঁকছে চরম আর্থিক সংকটে। পকেট গড়ের মাঠ হলেও মাঠের লড়াইয়ে অবশ্য তাঁরা সফল; লা লিগার শিরোপা ততক্ষণে নিশ্চিত হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন

কিন্তু বিপদটা ছিল লেভানডফস্কির দলবদলের চুক্তির একটি ‘বোনাস’ শর্ত নিয়ে। শর্ত ছিল, লিগে নির্দিষ্টসংখ্যক গোল করলেই লেভার সাবেক ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে বার্সাকে।

লেভানডফস্কিকে গোল করতে নিষেধ করেছিল বার্সেলোনা
এএফপি

সেই মৌসুমে লিগে তখন পর্যন্ত লেভার গোল ছিল ২৩টি। চুক্তির মারপ্যাঁচে আর মাত্র ২টি গোল করলেই বায়ার্নের অ্যাকাউন্টে ২৫ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩২ কোটি টাকা) পাঠানোর বাধ্যবাধকতা তৈরি হতো। একে তো শিরোপা জেতা হয়ে গেছে, তার ওপর কোষাগার শূন্য—তাই এই অতিরিক্ত খরচ এড়াতে ক্লাবের শীর্ষ কর্তারা লেভাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেন যেন তিনি আর গোল না করেন।

সম্প্রতি পোলিশ সাংবাদিক বগদান রিমানোভস্কিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লেভা নিজেই এই হাঁড়ি ভেঙেছেন। তিনি জানান, অনুরোধটা ছিল একদম সোজাসাপ্টা এবং শতভাগ আর্থিক কারণে। লেভানডফস্কির ভাষায়, ‘বিষয়টি ছিল বোনাস–সংক্রান্ত। সবাই জানে সেই সময় বার্সেলোনা প্রতিটি ইউরো বাঁচানোর জন্য লড়ছিল। অঙ্কটা ছোট ছিল না।’

আরও পড়ুন

গোল করাই যাঁর ধ্যানজ্ঞান, সেই লেভাকেই যখন গোল করতে বারণ করা হয়, তখন দ্বিধায় পড়াটাই স্বাভাবিক। লেভা স্বীকার করেছেন, সেই অনুরোধ তাঁর মাথায় গেঁথে গিয়েছিল। স্ট্রাইকার হিসেবে গোলমুখে দাঁড়িয়ে তিনি ভাবছিলেন—বল কি জালে পাঠাবেন, নাকি পাঠাবেন না? একজন পেশাদার স্ট্রাইকারের জন্য এর চেয়ে অদ্ভুত সংকট আর কী হতে পারে!

যদিও লেভা কারও ওপর ক্ষোভ ঝাড়েননি। ক্লাবের প্রতি সম্মান রেখেই পরিস্থিতিটা বুঝতে চেষ্টা করেছেন। তবে এই ঘটনাটি ফুটবল ইতিহাসে বার্সেলোনার সেই চরম আর্থিক দুর্দিনের এক করুণ প্রতীক হয়ে থাকবে।