নতুন মৌসুম, নতুন বল, গোলকিপারদের আতঙ্ক
প্রিমিয়ার লিগে নতুন মৌসুমের মাত্র দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। এরই মধ্যে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে গোলকিপারদের জীবন। কারণ? এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের নতুন অফিশিয়াল বল! যে বলে ‘হাস্যকর’ সব ভুল করছেন গোলকিপাররা। কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছেন, এটা ফুটবল নয়, যেন ভলিবল!
এই মৌসুম থেকে ম্যাচ বল সরবরাহ করছে ক্রীড়াসামগ্রী নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পিউমা। এর আগের ২৫ বছর প্রিমিয়ার লিগে বল সরবরাহ করেছে নাইকি। এবার পিউমার সঙ্গে নতুন চুক্তি, নতুন বলের নাম ‘অরবিটা আলটিমেট পিএল’। কিন্তু এরই মধ্যে পিউমার তৈরি এই বল অধিকাংশ গোলরক্ষকের আতঙ্ক হয়ে উঠেছে।
মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গোলরক্ষক আলতায় বায়িন্দির ও চেলসির রবার্তো সানচেজ এই বলে নাকানিচুবানি খেয়েছেন। বিশেষ করে সানচেজ তো হাত ফসকে বল প্রায় জালেই পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, শেষমেশ ভিএআরে রক্ষা!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রিমিয়ার লিগের এক গোলরক্ষক ইংল্যান্ডের সান স্পোর্টকে বলেছেন, ‘এটা অনেকটা ভলিবলের মতো এবং বাতাসে অনেক নড়াচড়া করে। নাইকির বল এমন ছিল না। আমার মনে হয় না এর আগে কখনো কোনো বল এমন ছিল। আমি বাড়িতে একটা বল নিয়ে এসেছি, যেন এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারি।’
ওই গোলরক্ষক আরও বলেছেন, ‘বলটা খুবই পিচ্ছিল। ধরতে গেলেই হাত ফসকে যায়। এবার অনেক ভুল দেখবেন। এটা নাকি স্ট্রাইকারদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু বলের মুভমেন্টের কারণে তারাও ঝামেলায় পড়ছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রিমিয়ার লিগের আরেক গোলরক্ষক বলেছেন, ‘এই বলটা নিশ্চিতভাবেই গোলরক্ষকদের জন্য বানানো হয়নি। আমার মনে হয়, এটা খুবই জঘন্য একটা বল। যতক্ষণ না পুরোনো হয়, ততক্ষণ ভালোভাবে ধরাই যায় না। কিন্তু ম্যাচে তো সব সময় নতুন বল দেওয়া হয়। নিশ্চিত করে বলতে পারি, এবার (পরিষ্কারভাবে) খুব বেশি বল ধরার দৃশ্য দেখবেন না।’
পিউমা ইংলিশ ফুটবল লিগের (ইএফএল) সব প্রতিযোগিতাতেই বল সরবরাহ করছে। অন্যদিকে এফএ কাপের বল তৈরি করে মিট্রে, আর চ্যাম্পিয়নস লিগের বল তৈরি করে অ্যাডিডাস।
গত মৌসুমে কারাবাও কাপেও পিউমার বল সমালোচিত হয়েছিল। সেমিফাইনালের প্রথম লেগে নিউক্যাসলের কাছে ২-০ গোলে হেরে যাওয়ার পর আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা বল নিয়ে প্রশ্ন তুলে উল্টো সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আর্তেতা বলেছিলেন, ‘আমরা ২৩টা শট মেরেছি। কিন্তু লক্ষ্যে মাত্র তিনটা। অনেক বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে গেছে। এই বলগুলো অনেক বেশি উড়ে যায়। এটা আলাদা বল। প্রিমিয়ার লিগের বলের সঙ্গে একেবারেই মেলে না। গ্রিপও আলাদা। মানিয়ে নিতে হয়।’
আর্তেতার ওই মন্তব্যের পর ইএফএল জবাব দিয়েছিল, ‘সব ক্লাবই একই বলে খেলে।’ তবে গোলরক্ষকসহ অনেক খেলোয়াড় আর্তেতার সঙ্গে একমত হয়েছিলেন যে এই বল সামলানো কঠিন।
কতটা কঠিন, সেটা তো এই মৌসুমের শুরু থেকেই দেখা যাচ্ছে।