ইয়ামালকে স্পেনের জন্য ছাড়বে না বার্সেলোনা

বার্সেলোনার অনুশীলনে লামিনে ইয়ামাল

বার্সেলোনা নাকি লামিনে ইয়ামালকে এ মাসে জাতীয় দল স্পেনের হয়ে খেলতে দেবে না। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে জর্জিয়া ও বুলগেরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ আছে স্পেনের।

তবে ইয়ামাল কুঁচকির চোটে ভুগতে থাকায় তাঁর ক্লাব বার্সেলোনা তাঁকে ছাড়তে রাজি নয়। সেপ্টেম্বরে এই কিশোর তারকাকে স্পেন ব্যথানাশক ওষুধ খাইয়ে খেলানোয় কাতালান ক্লাবটি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। চোট নিয়ে ম্যাচ খেলায় ইয়ামালের অবস্থা আরও খারাপ হয়, এরপর বার্সা তাঁকে বেশ কয়েকটি ম্যাচে পায়নি।

কাতালান সংবাদমাধ্যম এআরএ জানিয়েছে, স্পেন দলে যোগ দেওয়ার আগেই ইয়ামালকে ক্লাব ম্যাচে খেলাবে বার্সেলোনা। গত রোববার রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে লা লিগায় ফিরে আসার পর তাঁকে এই সপ্তাহেই পিএসজি ও সেভিয়ার বিপক্ষে খেলানোর পরিকল্পনা করেছেন কোচ হানসি ফ্লিক। এরপরই ইয়ামালকে জাতীয় দলে খেলার জন্য আনফিট ঘোষণা করবে বার্সেলোনা।

স্পেনের জার্সিতে লামিনে ইয়ামাল
এএফপি

এর আগে জানা যায়, স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বুলগেরিয়া ও তুরস্কের বিপক্ষে খেলতে ইয়ামালকে ব্যথানাশক দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে তাঁর কুঁচকির পুরোনো সমস্যাটা আরও বেড়ে যায়। এরপর বার্সেলোনার হয়ে ভ্যালেন্সিয়া, হেতাফে ও রিয়াল ওভিয়েদোর বিপক্ষে লিগ ম্যাচ এবং নিউক্যাসলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে খেলতে পারেননি ইয়ামাল।

আরও পড়ুন

গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ইয়ামালকে পাওয়া যাবে না বলে হতাশা প্রকাশ করে বার্সা কোচ ফ্লিক বলেছিলেন, ‘লামিনে ইয়ামাল খেলতে পারবে না। চোট নিয়েই সে জাতীয় দলের ক্যাম্পে গিয়েছিল এবং অনুশীলন করতে পারেনি। তবু ওকে ব্যথানাশক দিয়ে খেলানো হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচেই স্পেন অন্তত তিন গোলে এগিয়ে ছিল। তবু সে ৭৩ ও ৭৯ মিনিট খেলেছে। ম্যাচের মাঝখানে সে অনুশীলন করতে পারেনি। এটা কোনোভাবেই খেলোয়াড়ের প্রতি যত্ন নেওয়া নয়। আমি সত্যিই ব্যথিত।’

বার্সা সমর্থকদের কোপা ট্রফি দেখাচ্ছেন লামিনে ইয়ামাল
রয়টার্স

ইয়ামালকে নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে ফিফপ্রো

ইয়ামালের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বার্সেলোনা ও স্পেনের দ্বন্দ্ব যেমন বাড়ছে, তেমনি দুপক্ষকেই সতর্ক করে দিয়েছে ফুটবলারদের সংগঠন ফিফপ্রো। সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, ইয়ামালের ওপর অল্প বয়সেই অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

ফিফপ্রোর হিসাব অনুযায়ী, মাত্র ১৮ বছর বয়সে ইয়ামাল খেলেছেন ১৩০টি ম্যাচ। তুলনা করতে গিয়ে বলা হয়, বার্সেলোনা কিংবদন্তি আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা যখন ওই বয়সে ছিলেন, তাঁর ম্যাচসংখ্যা ছিল মাত্র ৪০, যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি ক্লাবটির হয়ে ৬৭৪ ম্যাচ খেলেন।

আরও পড়ুন

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফিফপ্রোর হাই-পারফরম্যান্স অ্যাডভাইজরি নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান ড্যারেন বার্গেস বলেছেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। ২৪-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত ফুটবলারদের ওপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া মানে তাঁদের বড় ধরনের চোটের ঝুঁকিতে ফেলা।’

ফিফপ্রোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই বয়সে হাড়ের বৃদ্ধি, টেন্ডন আর লিগামেন্ট নাজুক অবস্থায় থাকে। অতিরিক্ত জোরে দৌড়ানো বা অল্প বিশ্রামের মধ্যে খেলা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। মানসিক চাপের প্রভাবও হেলাফেলা করার মতো নয়।’

আরও পড়ুন