রিয়াল ও আলোনসোর দুর্দশা বাড়িয়ে বার্নাব্যুতে জিতল ম্যানচেস্টার সিটি

গোলের পর আর্লিং হলান্ডকে ঘিরে সিটির খেলোয়াড়দের উদ্‌যাপনএক্স/ম্যানচেস্টার সিটি

রিয়াল মাদ্রিদ ১:২ ম্যানচেস্টার সিটি

লিগে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই পয়েন্ট খোয়ানোর পর এবার চ্যাম্পিয়নস লিগেও বড় ধাক্কা খেল রিয়াল মাদ্রিদ।

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে আজ লিগ পর্বের খেলায় ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ২-১ গোলে হেরেছে জাবি আলোনসোর দল। সফরকারী সিটির হয়ে গোল দুটি করেছেন নিকো ও’রিলি ও আর্লিং হলান্ড। রিয়ালের গোলটি রদ্রিগোর।

তিন দিন আগে লা লিগায় সেলতা ভিগোর কাছে হার, লিগ-শিরোপা দৌড়ে বার্সেলোনার কাছে পিছিয়ে পড়া মিলিয়ে কদিন ধরে বেশ চাপেই আছেন রিয়াল কোচ আলোনসো। চাকরি যায়-যায় অবস্থা। আজ সিটির বিপক্ষে আলোনসোর সেই চাপ আরও বাড়ে খেলা শুরুর আগেই।

দানি কারভাহাল ও ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ডের পর সিটি ম্যাচ থেকে ছিটকে যান আরেক ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও। সঙ্গে যোগ হয়ে আক্রমণভাগে কিলিয়ান এমবাপ্পের অনুপস্থিতিও। আগের ম্যাচে হাঁটুতে চোট পাওয়া এই স্ট্রাইকার পুরো ফিট না থাকায় আলোনসো তাঁকে বেঞ্চে রাখেন।

আরও পড়ুন

তবে এবারের আসরে ৭ গোল করা তারকা ফরোয়ার্ড না থাকার পরও ম্যাচে প্রথম গোল পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি রিয়ালকে। শুরু থেকে সিটি বলে দখল ও আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও প্রতি-আক্রমণে ভালোই চাপ তৈরি করছিলেন ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগো-জুড বেলিংহামরা। আর তেমনই এক প্রতি-আক্রমণে ২৮ মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল।

বেলিংহামের বাড়ানো বল ধরে বক্সের ভেতরে ঢুকে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান রদ্রিগো। ২৪ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের চলতি মৌসুমে প্রথম গোল এটি। শুধু চলতি মৌসুমই নয়, মার্চের পর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩২ ম্যাচ পর গোল পেয়েছেন রদ্রিগো।

তবে তাঁর দারুণ গোলটির সুবিধা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি রিয়াল। আর সেটা থিবো কোর্তোয়ার দুর্বলতায়।

সিটির হয়ে প্রথম গোল করেন নিকো ও’রিলি
রয়টার্স

৩৫তম মিনিটে রায়ান চেরকির কর্নার কিকে ইয়োস্কা গাভার্দিওল হেড নিলে সরাসরি রিয়াল গোলকিপারের হাতে যায়। তবে সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। সামনে থাকা ও’রিলি খুব কাছ থেকে বল জালে পাঠাতে সময় নেননি।

৮ মিনিট পর রিয়াল হজম করে দ্বিতীয় গোলও। এটিতে দায় অ্যান্টনিও রুডিগারের। জার্মান ডিফেন্ডার হলান্ডকে বক্সের মধ্যে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় সিটি। নরওয়েজিয়ান তারকা সুযোগটি কাজে লাগান কোর্তোয়াকে ভুল দিকে পাঠিয়ে বল জালে ঠেলে।

পেনাল্টি থেকে গোল করেন আর্লিং হলান্ড
রয়টার্স

প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরও পিছিয়ে যেতে পারত রিয়াল। দশ গজ দূর থেকে নেওয়া হলান্ডের শট রুখে দেন কোর্তোয়া, ফিরতি শটে জাল কাঁপানোর চেষ্টা করেন চেরকি। সেটিও আটকে দেন রিয়ালের বেলজিয়ান-গোলকিপার।

দ্বিতীয়ার্ধেও রিয়ালকে একাধিকবার বাঁচিয়েছেন কোর্তোয়া। এর মধ্যে ৫২ মিনিটে চেরকি এবং ৬১ মিনিটে জেরেমি ডকুর শট ছিল সিটিকে হতাশ করার মতো। সব মিলিয়ে ম্যাচে মোট ৬টি সেভ করেছেন কোর্তোয়া।

সিটি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মাকে অবশ্য এত বেশি পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। তবে ৮৫ মিনিটে এনদ্রিকের হেড প্রতিহত করতে না পারলে ম্যাচে সমতাই পেয়ে যেত রিয়াল।

হতাশায় মুখ ঢাকতে হয়েছে জুড বেলিংহামদের
রয়টার্স

বার্নাব্যুতে শেষ দিকে রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর যে প্রবণতা, সেটি দেখা গেছে আজও। সিটি বক্সে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে গেছেন ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগো-আর্দা গুলেরা। কিন্তু এ সময়ে রক্ষণে বেশি মনোযোগী হওয়া সিটি সে সব সফল হতে দেয়নি। সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা তো রুডিগারের লাল কার্ড চেয়ে আবেদন করে হলুদ কার্ডও দেখেছেন। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধের ২:১ ব্যবধান নিয়েই ৩ পয়েন্টের জয়ে বার্নাব্যু ছেড়েছে তাঁর দল।

৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে সিটি এখন ৪ নম্বরে। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্টে নিয়ে রিয়ালের অবস্থান সাতে।

আরও পড়ুন