মেসি–রোনালদোরা ছুটি কাটাতে কোথায় যান

ইবিজায় ছুটি কাটাতে গিয়ে এভাবেই ছবি তুলেছিলেন মেসিরাছবি: ইনস্টাগ্রাম

ক্লাব ফুটবলের বিরতি চলছে এখন। নতুন মৌসুম শুরুর আগে জাতীয় দলের হয়ে দু-একটি ম্যাচ ছাড়া প্রাক্‌-মৌসুম ট্যুরের আগে তেমন কোনো ব্যস্ততা নেই ফুটবলারদের। পুরো বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ অবসরের সময় এটাই। সময়টা কাজে লাগাতে অবকাশ যাপনে ফুটবল তারকারা ছুটছেন দেশান্তরে। লিওনেল মেসি-ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোসহ বেশির ভাগ ফুটবলারদেরই দেখা যায় স্ত্রী বা সঙ্গীদের নিয়ে ছুটি কাটাতে যেতে।

নেইমার-এমবাপ্পেদের মতো কেউ কেউ আবার যান বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে। সাধারণত, জুন-জুলাইয়ে ঘুরে বেড়ানোর ধুম চলে। সময়-সুযোগ মিললে বছরের অন্য সময়েও বিশ্বের শীর্ষ পর্যটন অঞ্চলগুলোতে ভ্রমণে যান তাঁরা। ফুটবল তারকাদের তেমনই কিছু পছন্দের অবকাশ যাপনের জায়গা নিয়ে এই প্রতিবেদন।

আরও পড়ুন

ইবিজা এবং ফরমেন্তেরা

মেসি-নেইমারদের ভ্রমণ নিয়ে যাঁরা কিঞ্চিৎ খোঁজখবর রাখেন, তাঁদের স্প্যানিশ দ্বীপ ইবিজা এবং ফরমেন্তেরার নাম অবশ্যই শোনার কথা। অনেক বছর ধরে ফুটবলারদের ভ্রমণের কেন্দ্রস্থল হয়ে আছে এই স্প্যানিশ দ্বীপ দুটি। তরুণ অ্যাথলেটরা ইবিজায় রাত কাটাতে বেশ পছন্দ করেন। এখানকার নাইট ক্লাবগুলোও বেশ বিখ্যাত। ক্লাবগুলোকে রাতভর মাতিয়ে রাখে ডিজে ও ব্যান্ড দল। অবশ্য তরুণদের মাঝে বিশেষ জনপ্রিয় হলেও সবার জন্য এই দ্বীপগুলোয় কিছু না কিছু উপভোগের আছে। ২০২২ সালে লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও সেস ফেব্রেগাসকে পরিবার নিয়ে এখানে ছুটি কাটাতে দেখা গেছে। সে সময় ইয়টে তাঁদের ছবিও বেশ ভাইরাল হয়েছিল। জুন-জুলাই মাসে এখানকার তাপমাত্রাও ভ্রমণের জন্য বেশ উপযোগী।

বাস্কেটবল তারকা জিমি বাটলারের সঙ্গে নেইমার
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

নিউইয়র্ক

নিউইয়র্ক নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে দর্শনীয় স্থানগুলোর একটি এটি। তারকা ফুটবলারদের কাছেও ঘুরতে যাওয়ার জন্য পছন্দের জায়গাগুলোর প্রথম দিকেই অবস্থান নিউইয়র্কের। বলা হয় নিউইয়র্ক শহর নাকি কখনো ঘুমায় না। হয়তো এ কারণেই খেলার ব্যস্ততার অবকাশে সব ভুলে নির্ঘুম রাত কাটাতে নিউইয়র্কে যান ফুটবলাররা। এই শহরের জীবনযাত্রাও ফুটবল তারকাদের বেশ পছন্দের। অনেকে আবার বাস্কেটবলের এনবিএ ম্যাচ দেখতেও যুক্তরাষ্ট্রের শহরটিতে পাড়ি জমান। অনেক ফুটবলারকে আবার এই শহরে গিয়ে ছুটি কাটানোর পাশাপাশি প্রচারণামূলক কাজে অংশ নিতেও দেখা যায়।

আরও পড়ুন

দুবাই

এক দশকের বেশি সময় ধরে পেশাদার ফুটবলারদের জন্য দুবাই শহরটি নতুন তীর্থ হয়ে উঠেছে। ছুটি কাটাতে অনেক ফুটবলারকে মধ্যপ্রাচ্যের ধনী এই শহরটিতে যেতে দেখা যায়। এখানকার রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়াও নাকি খেলোয়াড়দের বেশ পছন্দের। খেলা ও অন্যান্য অঙ্গনের তারকাদের পছন্দের জায়গা হওয়ায় দুবাই শহরটি নিজেদের তৈরিও করেছে সেভাবে। অতিথিদের এখানে বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। ভ্রমণে আসা তারকাদের সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে গড়ে তোলা হয়েছে এখানকার আবাসন, বিপণিবিতান, রাস্তা ও জিমসহ অন্যান্য স্থাপনা। আছে দুর্দান্ত গলফ কোর্সও।

লাস ভেগাস

লাস ভেগাসের আরেক নাম ‘সিন সিটি’ বা ‘পাপের শহর’। নাম দিয়েই মূলত পরিচয় পাওয়া যায় ক্লাবটির। ভ্রমণপিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের এই শহরটি। ফুটবল তারকাদের অনেকেই নিজেদের ঘুরতে যাওয়ার প্রধান গন্তব্য হিসেবে বেছে নেন লাস ভেগাস শহরকে। ২০২২ সালের প্রিমিয়ার লিগ জয়ের পর বন্ধুদের নিয়ে লাস ভেগাসে ঘুরতে দেখা গেছে ম্যানচেস্টার সিটির ইংলিশ ফুটবলার জ্যাক গ্রিলিশকে। এখানকার আতিথেয়তা ও উন্মাদনা সব সময় তুঙ্গে থাকে। তা ছাড়া লাস ভেগাসের ক্যাসিনো, পুল রিসোর্ট ও মিউজিক শোগুলোও প্রাণবন্ত করে রাখে শহরটিকে।

আরও পড়ুন

মাইকোনোস

অবকাশে ফুটবলারদের আরেক পছন্দের স্থান গ্রিসের দ্বীপ শহর মাইকোনোস। সাম্প্রতিক সময়ে এটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। লিভারপুল তারকা মোহাম্মদ সালাহকে মাইকোনোসে ছুটি কাটাতে দেখা গেছে। সামনের কিছুদিনেও ফুটবলারদের আগমনে দারুণভাবে জমে উঠতে পারে এই দ্বীপটি। ইবিজার মতো এখানকার রাতের যাপনও ফুটবলারদের বেশ পছন্দের।

বার্সেলোনা

ফুটবলের কারণে সারা বছরই আলোচনায় থাকে বার্সেলোনা। তবে ঘুরতে যাওয়ার জন্যও এই শহরটি বিশেষভাবে পরিচিত। ছুটিতে অনেকে ফুটবলার সময় কাটানোর জন্য বেছে নেন শহরটিকে। কিছুদিন আগে লিভারপুল তারকারাও এখানে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। এর আগে ২০২২ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নান্দেজ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে বার্সেলোনায় ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। কদিন আগে কিলিয়ান এমবাপ্পে, নেইমার ও হোয়াও ফেলিক্সকেও স্প্যানিশ গ্র্যান্ড প্রিক্সে দেখা গেছে। ইউরোপীয় শহর হিসেবে বার্সেলোনায় আসাটাও বেশ সহজ। তাই ছোটখাটো সময়ের ছুটিতে খেলোয়াড়েরা এই শহরটিকেই বেছে নিচ্ছেন।  

দুবাইয়ে অবকাশে গিয়েছিলেন রোনালদোও
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

মায়ামি

আর কিছুদিনের মধ্যে মায়ামি হতে যাচ্ছে মেসির শহর। তবে এ পরিচয় সরিয়ে রাখলেও মায়ামি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকাদের অবকাশ যাপনের তীর্থস্থান। এমনকি মেসি নিজেও সময় কাটানোর জন্য মায়ামিকে বেশ পছন্দ করেন। মেসি ছাড়া আগুয়েরো-নেইমারদের বিশেষ পক্ষপাত আছে মায়ামি নিয়ে। কদিন আগে নেইমারকে মায়ামিতে দেখা গেছে। মেসিকে ঘিরে সামনে হয়তো মায়ামি নিয়ে ফুটবলার এবং অন্য তারকাদের আগ্রহ আরও বাড়বে।