অবিশ্বাস্য লড়াইয়ে ম্যান সিটিকে বিদায় করে আল হিলালের ইতিহাস
আল হিলাল ৪ : ৩ ম্যান সিটি
রাতের ম্যাচে ইন্টার মিলানকে বিদায় করে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্স। এরপর বাংলাদেশ সময় আজ সকালে ফ্লুমিনেন্সের দেখানো পথে হেঁটে আরেক অঘটনের জন্ম দিল সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল।
উত্থান-পতনের অবিশ্বাস্য এক লড়াইয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটিকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সৌদি ক্লাবটি। আগামী শুক্রবার সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রাত একটায় ফ্লুমিনেন্সের মুখোমুখি হবে আল হিলাল।
আল হিলাল এশিয়ান অঞ্চলের সেরা ক্লাবগুলো একটি হলেও ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে তাদের কোনো তুলনা চলে না। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ জেতা একমাত্র দলও ছিল পেপ গার্দিওলার সিটি। সেই তিন ম্যাচে ১৩ গোল করার সিটির খেলা দেখে অনেকে দুঃসময় কাটিয়ে তাদের ফেরার ঘোষণাও দিয়ে দিয়েছিলেন।
কিন্তু সিটির ফেরার গল্পকে তিন ম্যাচেই থামিয়ে দিল আল হিলাল। অরল্যান্ডোর ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে আজ নতুন এক ইতিহাস রচনা করল তারা। ফিফার অফিশিয়াল টুর্নামেন্টে ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে জয় পাওয়া প্রথম এশিয়ান ক্লাব এখন আল হিলাল। পাশাপাশি এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে এশিয়ান ক্লাবগুলোর টানা ২০ ম্যাচের জয়খরাও।
অরল্যান্ডোতে ম্যাচের শুরুটা অবশ্য সিটির পক্ষেই ছিল। ৯ মিনিটে বের্নার্দো সিলভার গোলে এগিয়ে যায় তারা। লিড নেওয়ার পাশাপাশি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিজেদের হাতে রাখে সিটি। বল দখল ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল তারাই।
প্রথমার্ধে অবশ্য ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত তারা; কিন্তু আল হিলাল গোলরক্ষক ইয়েসিন বুনু বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় একাধিকবার গোলবঞ্চিত হতে হয় সিটিকে। ম্যাচজুড়ে ১০টি সেভ করা বুনু আল হিলালের জয়ের অন্যতম নায়কও বটে।
সিটির আক্রমণাত্মক ফুটবলের বিপরীতে প্রতি আক্রমণের ওপর নির্ভর করে আল হিলাল। যদিও প্রথমার্ধে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় সিটি।
বিরতির পরপরই সিটিকে প্রথম ধাক্কা দেয় আল হিলাল। ৪৬ মিনিটে মার্কোস লিওনার্দোর গোলে ম্যাচ সমতা ফেরায় নেইমারের সাবেক ক্লাব। ৬ মিনিটে সিটিকে স্তব্ধ করে ব্যবধান ২-১ করেন ম্যালকম।
যদিও এই লিড ৩ মিনিটের বেশি ধরে রাখতে পারেনি তারা। আর্লিং হলান্ডের গোলে ফের সমতা ফেরায় সিটি। এরপর পাল্টাপাল্টি আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে চেষ্টা করেও নির্ধারিত সময়ে গোল পায়নি কোনো দল। ২–২ গোলে ড্র অবস্থায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
৯৪ মিনিটি কালিদু কোলিবালির গোলে ৩-২ গোলে লিড নেয় আল হিলাল; কিন্তু ১০৪ মিনিটে সিটি আবার ম্যাচে ফেরে ফিল ফোডেনের গোলে। এরপর ম্যাচের ১১২ মিনিটে লিওনার্দো নিজের দ্বিতীয় ও আল হিলালের হয়ে চতুর্থ গোল করে এগিয়ে দেন হিলালকে। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি গার্দিওলার দল। অবিশ্বাস্য এক জয়ে ইতিহাস গড়েই মাঠ ছাড়ে আল হিলাল।