লিভারপুলকে জিতিয়ে ১৬ বছর বয়সী কিশোরের ইতিহাস

শেষ মুহূর্তে গোলের পর এনগুমোয়ার উচ্ছ্বাসরয়টার্স

১০ জনের নিউক্যাসলের বিপক্ষে ২–০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর লিভারপুলের জয় একরকম নিশ্চিতই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলা নিউক্যাসল যেন হাল ছাড়তে নারাজ। সেই দৃঢ়তাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ফিরিয়ে আনে তাদের। ৮৮ মিনিটের মাথায় ম্যাচে ২–২ গোলে সমতা ফেরায় নিউক্যাসল।

কিন্তু নাটকের তখনো বাকি। অতিরিক্ত সময়ে একেবারে শেষ মুহূর্তে ম্যাচ যখন সমতায় শেষ হওয়ার অপেক্ষায়, তখনই চমক নিয়ে হাজির হন লিভারপুলের জার্সিতে প্রিমিয়ার লিগে অভিষিক্ত ১৬ বছর বয়সী কিশোর রিও এনগুমোয়া। যোগ করা সময়ের ১০ মিনিটে এই ফরোয়ার্ডের করা গোল বদলে দেয় ম্যাচের গতিপথ। সমতায় শেষ হতে যাওয়া ম্যাচটি লিভারপুল জিতে যায় ৩–২ গোলে।

জয়সূচক এই গোলে ইতিহাস গড়েছেন কিশোর এনগুমোয়া। ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব–১৭ দলের এই কিশোর এখন লিভারপুলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা। প্রিমিয়ার লিগে ১৬ বছর বয়সে জয়সূচক গোল করা দ্বিতীয় খেলোয়াড়ও এনগুমোয়া।

আরও পড়ুন

তাঁর আগে সর্বশেষ ২০০২ সালে এভারটনের হয়ে আর্সেনালের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিলেন ওয়েইন রুনি। আর বয়সের হিসাবে রুনির চেয়ে মাত্র এক দিন বেশি বয়সে গোলটি করলেন এনগুমোয়া। গোল করার সময় তাঁর বয়স ১৬ বছর ৩৬১ দিন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এনগুমোয়া চতুর্থ সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা।

এনগুমোয়াকে ঘিরে কার্টিস জোন্সদের উদ্‌যাপন
রয়টার্স

এর আগে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচেও শেষ মুহূর্তের রোমাঞ্চে জিতেছে লিভারপুল। গতকাল রাতের মতো সেদিনও শুরুতে ২–০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর লিড হারিয়ে বসে ‘অল রেড’রা। এরপর শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় নিশ্চিত করে। এর ফলে লিগে দ্বিতীয় রাউন্ড শেষ হওয়ার পর দুই ম্যাচই জেতা তৃতীয় দল হচ্ছে লিভারপুল। অন্যদের মধ্যে শুধু আর্সেনাল ও টটেনহামই দুই ম্যাচেই জিতেছে।

নিউক্যাসলের মাঠে গতকাল রাতে লিভারপুলের শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না। একের পর এক আক্রমণে লিভারপুলকে একরকম কোণঠাসা করে রাখে স্বাগতিকেরা। তবে ম্যাচের ৩৫ মিনিটে সবাইকে চমকে দিয়ে আকস্মিক এক গোলে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন রায়ান গ্রাভেনবার্চ। বক্সের বাইরে থেকে মাটি কামড়ানো এক শটে গোল করেন এই ডাচ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। এরপর নিউক্যাসলের দুঃখ আরও বাড়ে ৩৫ মিনিটে—লিভারপুল অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইককে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন উইঙ্গার অ্যান্থনি গর্ডন।

আরও পড়ুন

বিরতির পর খেলা শুরু হতে না হতেই লিভারপুলকে আবারও এগিয়ে দেন হুগো একিতিকে। লিভারপুলের হয়ে এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে গোল করলেন একিতিকে। এই গোলের পর একজন কম নিয়ে নিউক্যাসলের ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভবই মনে হচ্ছিল। কিন্তু হাল না ছাড়া দলটি ৫৭ মিনিটে ব্রুনো গিমারেসের গোলে ব্যবধান ২–১ করে এবং ৮৮ মিনিটে উইলিয়াম ওসুলার সমতাও ফিরিয়ে আনে।

গোলের পর রায়ান গ্রাভেনবার্চ
এএফপি

তবে শেষ পর্যন্ত ১৬ বছর বয়সী এনগুমোয়ার কাছে ম্যাচটি হাতছাড়া করে তারা এবং বাজিমাত করে লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগে টানা ১৭ ম্যাচে লিভারপুলকে হারাতে ব্যর্থ হলো নিউক্যাসল। লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে নিউক্যাসল সর্বশেষ জিতেছিল ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে।

ম্যাচ শেষে এনগুমোয়াকে প্রশংসায় ভাসিয়ে লিভারপুল অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক বলেছেন, ‘এটা তার জন্য স্বপ্নের অভিষেক। ওর টেকনিক ছিল একেবারে নিখুঁত। শেষ দিকে আমরা শান্ত ছিলাম এবং চেষ্টা করেছি সঠিক সমাধানটা খুঁজে নিয়ে গোল করতে। আমরা সেটা করতে পেরেছি। রিওর (এনগুমোয়া) জন্য আমি ভীষণ খুশি।’