২০১৮ বিশ্বকাপ জিতে ১৯ বছর বয়সেই নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যান কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফরাসি তারকার সামনে এখন ইতিহাসের হাতছানি। ফ্রান্সের হয়ে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জিতলে সেরাদের তালিকায় এমবাপ্পের জায়গাটা আরেকটু দৃঢ় হবে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমবাপ্পে বলেছেন, বিশ্বকাপে চোখ রেখেই নিজেকে প্রস্তুত করছেন। চেষ্টা করবেন দেশকে টানা দ্বিতীয় শিরোপা এনে দিতে। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, কেন জাতীয় দলকে বিদায় বলতে চেয়েছিলেন। এমবাপ্পের সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো—
আবার বিশ্বকাপ জেতা প্রসঙ্গে
শৈশব থেকে আমার মানসিকতা এমন যে আমি সব সময় আরও বেশি করতে চাই, নিজের সামর্থ্যকে আরও বাড়াতে চাই। আমার জন্য, আমি বিশ্বকাপ জিতেছি মানে সেখানেই সব শেষ নয়। রোমাঞ্চকর কিছুর প্রথম পর্ব সেটা। পরপর দুবার বিশ্বকাপ জেতা খুবই কঠিন। তবে আমি যদি ইতিহাস লিখতে চাই, এমন কিছু করতে হবে, যা কেউ করেনি। তাই আমরা চেষ্টা করব। আমি মনে করি, আমাদের দল বেশ ভালো। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা দারুণ। কোচও তাই। আর দেশের মানুষ আমাদের পাশে আছে।
বর্ণবাদ মোকাবিলা
আমি বলেছিলাম, যারা আমাকে বানর মনে করে, তাদের জন্য আমি খেলতে পারি না। আমি জাতীয় দলে খেলব না। তবে এরপর যারা আমার সঙ্গে খেলে এবং শুভাকাঙ্ক্ষী, তাদের কথা ভাবি। আমার মনে হলো, হাল ছেড়ে দেওয়ার বার্তা ভালো কিছু নয়। কারণ, আমার মনে হয়, আমি সবার জন্য দৃষ্টান্ত। এটা নতুন ফ্রান্স...ফলে আমি জাতীয় দল ছেড়ে দিতে পারি না। এখানে নতুন প্রজন্মের জন্য একটা বার্তাও যা বলছে, আমরা এর চেয়ে (বর্ণবাদ) শক্তিশালী।
২০১৮ বিশ্বকাপ জিতে বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে
সেটি (বিশ্বকাপ জয়) আমার জীবন বদলে দিয়েছে। বিশ্বকাপের পর সবকিছুই অন্য রকম হয়ে গেছে। কারণ, গোটা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল। আর আপনি যখন ভালো কিছু করবেন, এরপর সবকিছু পাগলাটে লাগে। আমি বিশ্বকাপের আগেও বিখ্যাত ছিলাম, তবে এ রকম নয়। মাথা খারাপের মতো অবস্থা। পরে শান্ত হতে আমার কিছু সময় লেগেছিল।
মাদ্রিদকে ফিরিয়ে পিএসজিতে থেকে যাওয়া
এমানুয়েল মাখোঁ আমাকে ফোন করে বলেন, ‘আমি জানি তুমি যেতে চাও, তবে তোমাকে বলতে চাই, তুমি ফ্রান্সের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমি চাই না তুমি চলে যাও। এখানে তোমার ইতিহাস লেখার সুযোগ আছে। সবাই তোমাকে ভালোবাসে।’ আমি এটা সমর্থন করি। কারণ, এটা দারুণ বিষয়। প্রেসিডেন্ট আমাকে ফোন করেছেন এবং তিনি চান আমি থেকে যাই। আমি ভীত নই। আমি প্রস্তুত।
নিজের সে সময়ের ভাবনা কী ছিল
রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়া আমার জন্য সহজ ছিল। তবে আমি ফ্রেঞ্চ। আমি প্যারিসের সন্তান এবং এখানে জিততে চাই। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু। এটা দেশের ইতিহাসে সর্বকালের জন্য আমার নামটা লিখে দেবে। সফলতার জন্য আমি এখানে থাকতে পারি। আমাদের জন্য এটা অনেক বড় বার্তা ছিল। কারণ, আমার থেকে যাওয়ার ঘোষণা মানুষের মানসিকতার অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। মানুষ তখন বলতে শুরু করে, ‘আমাদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, আমাদের দেশ ত্যাগের দরকার নেই।’