হলান্ডের রেকর্ডের দিনে সিটি-লিভারপুলের পয়েন্ট ভাগাভাগি

লিভারপুলের জালে গোলের পর আর্লিং হলান্ড। এই গোলে গড়েছেন রেকর্ডওছবি: রয়টার্স

ঘরের মাঠ ইতিহাদে ম্যানচেস্টার সিটি প্রায় অজেয় বলেই রেকর্ডের সুবাসটা পাওয়া যাচ্ছিল। ইতিহাদে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৩ ম্যাচ জয়ের ধারায় ছিল সিটি। আজ জিতলে ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে খেলা ক্লাবগুলোর মধ্যে সান্ডারল্যান্ডের গড়া (১৮৯০-১৮৯২) ঘরের মাঠে টানা সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলত পেপ গার্দিওলার দল। কিন্তু লিভারপুল সেটি হতে দেয়নি।

আর্লিং হলান্ডের গোলে ম্যাচের ৭৯ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে থাকার পর ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড। ৮০ মিনিটে তাঁর কোনাকুনি শটে ব্যবধান ১-১ করে লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগিতেই শেষ হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এবারের মৌসুমে অন্যতম বড় এই ম্যাচ।

আরও পড়ুন

পয়েন্ট ভাগাভাগির পর ১৩ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে সিটি। সমান ম্যাচে তাঁদের চেয়ে ১ পয়েন্ট পিছিয়ে দুইয়ে লিভারপুল। ইংলিশ ফুটবলের দুই পরাশক্তি এই ম্যাচে নিজেদের প্রথাগত ফুটবলই খেলেছে। সিটি বেশির ভাগ সময় বল দখলে রেখে ছোট ছোট পাসে আক্রমণ গড়েছে। লিভারপুল চেষ্টা করেছে দমিনিক সোবোসলাই, দিওগো জোতা ও দারউইন নুনিয়েজদের গতি ব্যবহার করে সিটির রক্ষণ ভাঙতে। ৮০ মিনিটের গোলটি ঠিক এই চেষ্টারই ফসল। বাঁ প্রান্ত থেকে ডানে বল খেলে সেখান থেকে সিটির বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোহাম্মদ সালাহ পাস পান। পাশেই একটু ফাঁকায় দাঁড়ানো ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ডকে পাস দেন মিসরীয় তারকা। ডান পায়ের দারুণ কোনাকুনি শটে গোল করে ইতিহাদের গ্যালারির এক অংশের সামনে গিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে সবাইকে চুপ করিয়ে দেওয়ার ভঙ্গি করেন ইংল্যান্ড রাইটব্যাক।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দ্রুততম ৫০ গোল
গ্রাফিকস: প্রথম আলো

এর আগে সিটিকে এগিয়ে দেওয়া গোলটি যথারীতি আর্লিং হলান্ডের! আন্তর্জাতিক বিরতিতে নরওয়ের হয়ে ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন। লিভারপুল ম্যাচ খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ ছিল। কিন্তু লিগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নরওয়ে তারকাকে একাদশের বাইরে রাখার ঝুঁকি নেননি সিটি কোচ গার্দিওলা। তারই পুরস্কার হিসেবে ২৭ মিনিটে গোল করেন হলান্ড। তাতে লিভারপুল গোলকিপার আলিসনেরও পরোক্ষ ‘অবদান’ আছে। বল ধরে দ্রুত ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুলে সিটির সেন্টার ব্যাক নাথান আকেকে পাস দেন আলিসন। লিভারপুলের বক্সের একটু সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আকে সুযোগ বুঝে পাস দেন হলান্ডকে। গোল করতে কোনো ভুল হয়নি তাঁর। আর এই গোলের মাধ্যমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দ্রুততম ৫০ গোলের রেকর্ডও গড়লেন হলান্ড। ৪৮ ম্যাচে এই রেকর্ড গড়ার পথে হলান্ড পেছনে ফেলেছেন অ্যান্ড্রু কোলকে (৬৫ ম্যাচ)।

আরও পড়ুন

প্রথমার্ধে ৩৫৬ পাস খেলেছে সিটি। লিভারপুল খেলেছে ২১৪ পাস। গোলপোস্টে শট নেওয়ায় সিটিই এগিয়ে ছিল। এই অর্ধে ৪টি শট পোস্টে রাখতে পেরেছে গার্দিওলার দল। লিভারপুল রাখতে পেরেছে ১টি। সেটি ১৬ মিনিটে জোয়েল মাতিপের পাস থেকে বল পান সালাহ। পোস্টের সামনে বাঁ পায়ের ক্রস পাঠান নুনিয়েজকে। উরুগুয়ে তারকার হেড রুখে দেন সিটি গোলকিপার এদেরসন। ৩৫ মিনিটে সোবোসলাইয়ের পাস থেকে গোলের দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন নুনিয়েজ। বল পোস্টের বাইরে মারেন। ৪১ মিনিটে জোতা ৪৪ মিনিটে ফিল ফোডেন সিটির হয়ে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। প্রথমার্ধে ৬২.৪ শতাংশ সময় সিটি বল দখলে রাখলেও খেলায় লিভারপুলের ধারই বেশি ছিল।

ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের গোলের পর তাঁকে অভিনন্দন জানান ভার্জিল ফন ডাইক
ছবি: রয়টার্স

বিরতির পর গোটা ম্যাচ মিলিয়ে সিটির বল দখলে রাখার হার নেমে আসে ৬০.৩ শতাংশে। এই অর্ধে লিভারপুল যে ভালো খেলেছে সেটির প্রমাণ সিটির পোস্টে দুটি শট রাখতে পারা, যেখান থেকে একটি গোলও হয়েছে। ৭২ মিনিটে আরেকটি সুযোগ থেকে গোল করতে পারেননি নুনিয়েজ।

আরও পড়ুন