ব্রাজিল জিতলেও নেইমারের অভাব অনুভব করেছি

ব্রাজিল ১–০ গোলে সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে এক পা সামনে এগিয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার মানসিক চাপ কাটিয়ে আপাতত তারা নকআউট নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিতে পারে। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ঝলকে সুইস বাধা পেরিয়ে গেলেও ব্রাজিলের আক্রমণভাগে নেইমারের অভাব ভনুভূত হয়েছে আমার চোখে।

আরও পড়ুন

নেইমার অ্যাটাকিং থার্ডে ঢুকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু করতে চায়। যখন দেখা যায় কিছুই হচ্ছে না, তখন বাড়তি কিছু করে দলকে জীবন দেওয়ার চেষ্টা করে। এটা এই ম্যাচে মিস করেছি। অন্যরা নিজেদের মতো খেলেছে, চেষ্টা করেছে, তবে নেইমার থাকলে ব্রাজিলের খেলাটা যেমন হয়, তাতে কাল কোথাও যেন একটু ঘাটতি দেখা গেছে। আর এতে এটাই বোঝা গেছে, ব্রাজিলের আক্রমণে নেইমারের উপস্থিতি কতটা দরকার। নেইমার থাকা মানে প্রতিপক্ষ রক্ষণ–ভারসাম্য হারাতে পারে। যেটা এই ম্যাচে সুইসরা অনেকটা সময় পর্যন্ত হারায়নি।

আরও পড়ুন

ব্রাজিল যখন প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে ঢুকছিল, বল চালাচালি করছিল, তখনো দেখা গেছে, সুইসরা কড়া ট্যাকলিংয়ে আসছে না। ব্যাক অব দ্য ডিফেন্স যাতে জায়গায় না পেয়ে যায় ব্রাজিল। এর ফলে ব্রাজিল ওই জায়গাটায় খালি জমিন খুব কম পাচ্ছিল। তারা বল পজেশন রাখছিল ঠিকই, কিন্তু কাজের কাজটা করতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত গোল হয়েছে এবং ক্যাসিমিরো গোলটা করল দারুণ। অমন বলের ওপর এত সুন্দর পা লাগবে, ওভাবে কোনা দিয়ে বল জালে যাবে ভাবাই যায়নি।

সুইসরা ভেবছে, হাতে তিন পয়েন্ট যেহেতু আছে, ব্রাজিলকে কোনোমতে আটকে দিতে পারলে শেষ ষোলো আরেকটু নিশ্চিত হয়। তাই সুইসরা অতি সতর্ক ছিল রক্ষণে। অনেকটা সময় তারা ব্রাজিলকে আটকাতে পেরেছে। তবে গোল খাওয়ার পর ওপরে আসার মরিয়া চেষ্টা যখন করছিল, ততক্ষণে অনেকটা সময় শেষ। এতে অবশ্য সুবিধা হয়েছে ব্রাজিলের। সুইসরা ওপরে আসায় ব্রাজিল তখন ডিপ ডিফেন্সে জায়গা পাচ্ছিল। এর ফলে কয়েকটা গোলের সুযোগও তৈরি হয় প্রথম গোলের পর।

আরও পড়ুন

বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হতে যারা এসেছে, সেই দলগুলোর হিসাব–নিকাশ দুর্দান্ত। তাদের একটাই চেষ্টা থাকে মাঠে প্রতিপক্ষ যাতে বল না পায়। সেই কাজে ব্রাজিল অনেকটা সফল। আসলে ফুটবল ম্যাচ এখন দাবার বোর্ড হয়ে গেছে। প্রযুক্তি মিলিয়ে ফুটবল আর আসলে ফুটবল নেই, যান্ত্রিক হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন

ব্রাজিল গত ম্যাচের তুলনায় কেমন খেলল? আমি বলব, ব্রাজিল সতর্ক ছিল মাঠে। তাদের পায়ের কাজগুলো সুন্দর লাগছিল, তবে একসময় মনে হচ্ছিল, ওয়াকিং ফুটবল হচ্ছে বুঝি। কারণ, এটি ছিল ব্রাজিলের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করার ম্যাচ। মানসিক চাপটা তো থাকেই। সেই চাপে ছিল ব্রাজিল।

পতুর্গাল–উরুগুয়ে ম্যাচটা ভালো হয়েছে। উপভোগ করেছি পুরোটা সময়। ম্যাচে দুই দলের খেলায় গভীরতা ছিল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এই বয়সেও নিজের সেরাটা মাঠে দিতে যে প্রাণান্ত চেষ্টা করছে, সেটা প্রশংসনীয়। ম্যাচে প্রতি–আক্রমণগুলো খুব দ্রুত হয়েছে। সব মিলিয়ে পর্তুগাল–উরুগুয়ে ম্যাচ দেখে রাতজাগা স্বার্থক হয়েছে।