রবার্ট লেভানডফস্কির হ্যাটট্রিক, লামিনে ইয়ামালের টানা তিন ম্যাচে গোল, মার্কাস রাশফোর্ডের জোড়া অ্যাসিস্ট—আক্রমণভাগের কাছ থেকে বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক এর চেয়ে বেশি হয়তো চাইতে পারতেন না। লা লিগায় কাল ফ্লিকের মন ভরিয়ে দেওয়ার মতো পারফর্মই করেছেন ফরোয়ার্ডরা।
নিজেদের মাঠ বালাইদোসে সেলতা ভিগো দুই দফা সমতা ফেরালেও শেষ পর্যন্ত বার্সার কাছে ম্যাচটা হেরেছে ৪–২ গোলে। কাল রাতেই আরেক ম্যাচে ভায়েকানোর মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়াল হোঁচট খাওয়ায় তাদের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে এনেছে বার্সা। শীর্ষে থাকা রিয়ালের পয়েন্ট ৩১, দুইয়ে উঠে আসা বার্সার ২৮। দুই দলই ১২টি করে ম্যাচ খেলেছে।
চোটের কারণে এক মাস মাঠের বাইরে ছিলেন লেভানডফস্কি। ২ নভেম্বর লা লিগায় এলচের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ফিরলেও বদলি নেমে খেলেছেন মাত্র ১৬ মিনিট। ৫ নভেম্বর চ্যাম্পিয়নস লিগে ক্লাব ব্রুগার বিপক্ষেও বদলি নেমেছিলেন। শতভাগ ফিট লেভা কাল সেলতার বিপক্ষে খেলেছেন শুরু থেকেই। প্রথমার্ধে জোড়া গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে করেন নিজের তৃতীয় ও দলের শেষ গোল।
লা লিগায় এটি লেভার তৃতীয় হ্যাটট্রিক, যে হ্যাটট্রিকে তিনি মনে করিয়েছেন দুই কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাস ও আলফ্রেডো ডি স্টেফানোকে। পুসকাস–ডি স্টেফানোর পর তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে ৩৫ পেরোনোর পর লা লিগায় তিনবার হ্যাটট্রিক করার কীর্তি গড়েছেন লেভা।
গত আগস্টে ৩৮–এ পা রাখা লেভার আগের দুই হ্যাটট্রিক ছিল ২০২৪–২৫ মৌসুমে আলাভেস এবং ২০২৩–২৪ মৌসুমে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে।
ছন্দে ফেরার আভাস দিচ্ছেন ইয়ামালও। এলচে, ক্লাব ব্রুগার পর সেলতা ভিগো—বার্সার সর্বশেষ তিন ম্যাচেই গোল পেয়েছেন এই তারকা।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ধারে বার্সায় যাওয়া মার্কাস রাশফোর্ডও পিছিয়ে নেই। লেভার দ্বিতীয় ও তৃতীয় গোলে রাশফোর্ডই বল বানিয়ে দিয়েছেন। এবারের লিগে বার্সার সর্বশেষ নয় ম্যাচের আটটিতেই গোলে অবদান রেখেছেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
কাল যোগ করা সময়ের শেষ ৪ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলতে হয়েছে বার্সাকে। সেলতার ইগাও আসপাসকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। তবে তা ম্যাচের ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি।
নভেম্বরের আন্তর্জাতিক বিরতির আগে এটিই ছিল বার্সার শেষ ম্যাচ। আর বার্সার কোচ হিসেবে লা লিগায় ফ্লিকের ৫০তম ম্যাচ। এই ৫০ ম্যাচের ৩৭টিতেই জিতেছে বার্সা, গোল করেছে ১৩৪টি।
বিরতিতে যাওয়ার আগে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধানে কমিয়ে আনতে পেরে খুশি বার্সা কোচ ফ্লিক, ‘বিরতির আগে দলের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট। মাঠে যা দেখলাম, তার জন্য সত্যিই আনন্দিত। প্রথমার্ধে আমরা কিছু বেশি ভুল করেছি, যা প্রতিপক্ষ কাজে লাগিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আরও বেশি দাপট দেখিয়েছি।’
জার্মান এই কোচ আরও বলেন, ‘অতীতে কী হয়েছে, ফুটবলে সেসব ঘটনার কোনো মূল্য নেই। আমি মনে করি, এই জয় আমাদের পরের ম্যাচগুলোর জন্য আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। সাধারণত আমরা নিজেদের নিয়ে ভাবি। কিন্তু যখন দেখলাম, এই জয় রিয়ালের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে বিরতিতে যাওয়ার আগে...এটা সত্যিই দারুণ ব্যাপার।’
বার্সেলোনার পরের ম্যাচ ২২ নভেম্বর অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে।